WhatsApp এর মাধ্যমে টাকা আয় করার সেরা ৩টি উপায় মাসে ৩০-৫০০০০
আমরা সকলেই জানি হোয়াটসঅ্যাপ একটি চ্যাট অ্যাপ্লিকেশন। যেটি ব্যবহার করে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কাজ করে থাকি বা সরাসরি বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে থাকি। এসএমএস, অডিও কল ও ভিডিও কলের মাধ্যমে। কিন্তু আপনি কি বিশ্বাস করবেন। আমি যদি আপনাকে বলি হোয়াটসঅ্যাপ এর মাধ্যমে আপনিও ইনকাম করতে পারবেন। আপনার কি মনে হয়। যদি বিশ্বাস করে থাকেন তাহলে খুব ভালো। আর যদি না বিশ্বাস করেন থাকেন তাহলে এই নিবন্ধনটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
কারণ এই নিবন্ধনে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব আপনি কিভাবে হোয়াটসঅ্যাপ এর মাধ্যমে টাকা আয় করতে পারবে তার উপায়। তাই আপনি যদি WhatsApp এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে চান। তাহলে এখনই জেনে নিন নিচে দেওয়া সেরা তিনটি উপায়। আর আজই শুরু করে দিন WhatsApp থেকে টাকা ইনকাম করা।
কিভাবে WhatsApp এর মাধ্যমে টাকা আয় করব
WhatsApp এর মাধ্যমে টাকা আয় করার জন্য সবার প্রথম আপনাকে WhatsApp বিজনেস এপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করতে হবে। এবং সেটিতে হোয়াটসঅ্যাপ login করতে হবে।
তারপর সেই WhatsApp টিতে আপনার চ্যানেল বা গুরুপ থাকা প্রয়োজন হবে। সেই কারণে যদি ইতিমধ্যে আপনার একটি গ্রুপ থেকে থাকে তাহলে খুবই ভালো। আর যদি না থেকে তাহলে একটি নতুন চ্যানেল বা গ্রুপ তৈরি করুন।
তারপর সেই চ্যানেল বা গ্রুপ টিকে ভালো একটি নাম দিন ও একটি ভালো ছবি আপলোড করুন। সাথে আপনার গ্রুপে আপনি কি কাজ করতে চান তার সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিছু বিবরণ লিখুন, এবং সেটিকে সেভ করে রেখে দিন। তবে আপনি আপনার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে কি বিবরণ লিখবেন সেটি নিচে দেওয়া বক্সে দেখুন।
আপনি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে কি করবেন সেটি লিখুন এবাউট সেকশনএ। যেমন; আমার খেত্তে আমি ব্লোগ্গিং, অনলাইন ইনকাম, বিভিন্ন ধরণের টিপস ও বিভিন্ন ধরণের ডিজিটাল পণ্যের অফার শেয়ার করে থাকি। আপনি যেগুলি জানতে চাইলে বা বিশাল ছাড় সহো পণ্যটি ক্রয় করার জন্য আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রুপে যোগদান করুন। আপনি ও ঠিক এরকম লিখবেন।
আপনি শুধু আপনার হোয়াটসঅ্যাপে থাকার সমস্ত সদস্যদের ইনভাইট করুন।ফলে আপনার গ্রুপে কিছু ফলোয়ার বা সদস্য যুক্ত হবে। তাদেরকে ‘হাই’ বলে একটি মেসেজ পাঠান। তারপরে লিখুন ‘আপনাদের সকলকে স্বাগতম আমার গ্রুপে যোগদান করার জন্য’।
এরপর আপনি জেনে নিন কি উপায়ে সেখান থেকে ইনকাম করতে পারবেন সেই বিষয়ে। তারপর সেই কাজটি শুরু করবেন।
১. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বা লিঙ্ক শেয়ার করে
আমরা হোয়াটসঅ্যাপ থেকে টাকা আয় করার জন্য সবার প্রথম যে উপায়টি ব্যবহার করব সেটা হলো অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। সেই কারণে আমরা সবার প্রথমে আমরা প্রবেশ করব করবো অনকরো ওয়েবসাইটটিতে।
তারপর সেখানে সাইন আপ বাটন এ ক্লিক করে আপনার ইমেল আইডি, ও ফোন নম্বরটি দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিন।
আপনার একাউন্টে তৈরি হয়ে গেলে আপনাকে আনকারো ওয়েবসাইটে মেন ড্যাশবোর্ডে নিয়ে যাবে। সেখানে আপনি বিভিন্ন ধরনের কোম্পানি ও কোম্পানির পণ্যের ডিসকাউন্ট অফার গুলি দেখা যাচ্ছে। এবং তার তার নিচে “কপি লিংক” ও “শেয়ার নাও” এই দুটি বাটন আছে। সেখানে আপনি WhatsApp শেয়ার নাও বাটনটিতে ক্লিক করে সেটিকে আপনার ওই WhatsApp গ্রুপটিতে শেয়ার করে দিন।
এরকমভাবে প্রতি দিন আপনি ১০ থেকে ১০০ টি অফার লিঙ্ক আপনার গ্রুপটিতে শেয়ার করুন। আর পারলে আপনি এটিকে আরো একটু উন্নত ভাবে বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করতে পারেন। যেমন; প্রথমে একটি ছবি দিয়ে। তারপরে সেই অপার সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত কিছু বিবরণ দিন। তারপরে “কপি লিংক” বাটনে ক্লিক করে আনকারো ওয়েবসাইট থেকে লিংকটি কপি করে নিয়ে সেখানে গেট-ডেল লিখে একটি এরও চিহ্ন দিন। তারপরে লিংকটা দিয়ে সেটিকে গ্রুপে শেয়ার করুন।
সাথে আপনার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের লিংকটি সবাইকে শেয়ার করতে বলুন, ও আপনি নিজেও আপনার সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করে বেশি বেশি করে দর্শকদের যোগদান করাতে থাকেন।
ফলে আপনার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপটিতে যত পরিমাণ দর্শক বাড়বে। এবং সেই দর্শকগুলো আপনার শেয়ার করার লিংকটিতে ক্লিক করে ওই কোম্পানির অফারটি ধরবে বা পণ্যটি ক্রয় করবে। তখন আপনি তার বদলে অনকরো প্ল্যাটফর্মটিতে কিছু কমিশন উপার্জন করবেন। সেটি আপনি সরাসরি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তুলে নিতে পারবেন। সেটি কিভাবে করে জানতে চাইলে এখানে ক্লিক করে জেনে নিন।
আর আপনি যদি আপনার WhatsApp গ্রুপে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর সাথে সিপিএ মার্কেটিং করতে চান। তাহলে সেক্ষেত্রে আপনি সিপিএ-গ্রিপ ওয়েবসাইটটিতে যোগদান করে সেখান থেকেও লিংক কপি করে ঠিক এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মত করে WhatsApp গ্রুপে শেয়ার করতে থাকুন। সেটি কিভাবে করে বা সিপিএ মার্কেটিং কিভাবে করে সেটি জানতে এখানে ক্লিক করুন।
২. অনলাইনে পণ্য বিক্রয় করে
আপনি যদি একজন ব্যবসায়িক হন বা একজন নতুন ব্যবসায়িক হতে চান। তাহলে আপনি WhatsApp এর মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় করে অনলাইন থেকে টাকা আয় করতে পারবেন। সেটি করার জন্য আপনার কাছে কিছু পণ্যের প্রয়োজন হবে।
সুতরাং আপনি যদি একজন ব্যবসায়ী করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আগে থেকে আপনার কাছে অন্য উপলব্ধ আছে। কিন্তু আপনার কাছে যদি পণ্য উপলব্ধ না থাকে তাহলে আপনি আপনার পরিচিত কোন দোকানদার বা ব্যবসায়িকের সাথে যোগাযোগ করে তার কাছ থেকে কিছু পণ্য ধার নিন বা ক্রয় করে নিন।
তারপরে সেই পণ্যগুলোকে নিয়ে প্রতিদিন একটি একটি করে ভালো রিভিউ ও তার ব্যবহারের ভিডিও তৈরি করুন। তারপরে সেই ভিডিওটি একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে সেখানে আপলোড করুন। এবং সাথে আপনার Facebook প্রোফাইলে ও Instagram প্রোফাইলে আপলোড করতে থাকুন।
সেই ভিডিওগুলোতে আপনি রিভিউ দেওয়ার সাথে সাথে বলুন এটি ক্রয় করার জন্য এখানে দেওয়া হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে বা লিংকে ক্লিক করে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করার জন্য। ফলে যে ব্যক্তির ওই পণ্যটি ক্রয় করার প্রয়োজন হবে সে আপনাকে সরাসরি হোয়াটসঅ্যাপ এর মাধ্যমে যোগাযোগ করে নেবে।
সুতরাং তখনই আপনি তার কাছ থেকে তার নাম ও তার ঠিকানা নিয়ে নিন সাথে কিছু টাকা এডভান্স হিসেবে নিয়ে নিন। তারপর আপনি ডেলিভারি ডট কম ওয়েবসাইটে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে বা আপনার পার্শ্ববর্তীতে থাকা ডেলিভারি বা কুরিয়ার সার্ভিস পরিষেবার সাথে যোগাযোগ করে নিন।
ফলে তারাই সেই ঠিকানাই আপনার পণ্যটি পাঠিয়ে দেবে এবং আপনার টাকাটিও নিয়ে আসবে। ফলে এটি অনেক সুরক্ষিত হবে ক্যাশ অন ডেলিভারি করতে পারবেন। এবং কাস্টমাররা আপনার প্রতি বেশি বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠবে এবং বেশি বেশি করে ক্রয় করবে।
সুতরাং যখনই আপনি কোন পণ্যটি বিক্রয় করবেন তার ডেলিভারি চার্জ ও আপনি কত টাকা লাভ রাখতে চান। সেটি নির্ধারণ করে তারপরে সে পণ্যটির মূল্য বলবেন।
আপনার পণ্যের ক্যাশ অন ডেলিভারি করা টাকাটি সেই ডেলিভারি ডটকম থেকেই বা কুরিয়ার সার্ভিস থেকেই তার প্রতিদিন আপনার একাউন্টে পাঠিয়ে। দেবে ফলে আপনি ঘরে বসেই এই কাজটি করতে পারবেন।
৩. নিজেস্ব সার্ভিস বা পরিষেবা বিক্রয় করে
আপনি যদি আমার মতন একজন ওয়েবসাইট ডেভলপার, কন্টাক্ট রাইটার ও এপ্লিকেশন ডেভলপার, গ্রাফিক্স ডিজাইনার, লোগো ডিজাইনার, বা আরো অন্য কোন বিষয়ে বিশেষ দক্ষ থেকে থাকে। তাহলে আপনি আপনার পরিষেবাটিকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বিক্রয় করতে পারেন।
এটি করার জন্য আপনাকে একটি WhatsApp বিজনেস অ্যাপ্লিকেশনে একাউন্ট দরকার। তারপর সেখানে বিজনেস একাউন্টে কে খুব সুন্দর ভাবে সাজান বা তৈরি করুন। নিচে দেওয়া ছবির মত করে। এবং সেখানে প্রোডাক্ট অপশনে মধ্যে “ম্যানেজ প্রোডাক্ট” বাটানে ক্লিক করে আপনি যেই কাজটি জানেন। সেই কাজের বিষয়ে একটি প্রোডাক্ট তৈরি করুন। এবং সেই কাজটি করার জন্য কত টাকা আপনি চার্জ করেন সেটিও লিখুন। তারপরে সেটিকে সেভ করে রেখে দিন।
আপনার হোয়াটসঅ্যাপ বিজনেস প্রোফাইল তৈরি হয়ে গেলে। আপনার তৈরি করা প্রোডাক্টটির লিঙ্ক কপি করে নিন। তারপর সেটিকে আপনার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এবং Facebook, twitter, Instagram ও বিভিন্ন ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে শেয়ার করে দিন। ফলে যখনই কোন ব্যক্তির ওই কাজটি করানোর প্রয়োজন হবে। সে তখনই ওই লিংকে ক্লিক করে সরাসরি আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে এবং আপনি কাজটি করে দিয়ে সেই টাকাটি ইনকাম করে নিতে পারবেন।
তবে এই পদ্ধতিটি বেশিরভাগ ব্যবহার হয় অনলাইন কাজের ক্ষেত্রে। তবে আপনি চাইলে অফলাইন কাজের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করতে পারেন।
এইভাবে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে কত টাকা আয় করা যাবে?
আপনি যদি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ঠিক ভাবে কাজ করে থাকেন। এবং উপরে দেওয়া নিয়মগুলো ভালোমতো অনুসরণ করে কাজ করেন। তাহলে আমি আশা করছি আপনি মাসে খুব সহজেই ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন। তবে প্রথমের দিকে হয়তো একটু অসুবিধা হতে পারে কিন্তু আপনি একটু ধৈয্য ধরে চেষ্টা করলে হয়ে যাবে।
হোয়াটসঅ্যাপ থেকে ইনকাম করার টাকাটি কিভাবে পাব?
WhatsApp থেকে ইনকাম করার টাকাটি আপনি আপনার ব্যাংক একাউন্টে পাবেন। তবে এর জন্য আপনাকে একটি Google pay ও ফোনপে অ্যাকাউন্ট ও থাকা দরকার। কারণ আপনি যদি হোয়াটসঅ্যাপে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম করেন তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনি অনকরে ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি আপনার ব্যাংকের একাউন্টে পেয়ে যাবেন। আর আপনি যদি পণ্য বিক্রি করেন বা নিজের পরিষেবা বিক্রয় করেন তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনার গুগলপে ও ফোনপের প্রয়োজন হবে।
Whatsapp এর মাধ্যমে কে বা কারা টাকা আয় করতে পারবে?
অনলাইনে উপলব্ধ সমস্ত WhatsApp ব্যবহারকারী তার হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবে। তার জন্য শুধু তাকে একটু বুদ্ধি ও সময় ব্যয় করতে হবে। এছাড়া এখন কোনো শিক্ষার প্রয়জন নেয় শুধু মাত্র অভিজ্ঞতার প্রয়জন।
উপসংহার;
আশা করি আপনি কিভাবে WhatsApp এর মাধ্যমে টাকা আয় করবেন। এই বিষয়ে সম্পূর্ণ বুঝতে পেরেছি। যদি বুঝতে পেরে থাকি এবং এই নিবন্ধনটি আপনার ভালো লেগে থাকে। তাহলে অবশ্যই এটি বেশি বেশি করে শেয়ার করে দিন। আর আপনার যদি WhatsApp থেকে টাকা ইনকাম করার বিষয় কোন ধরনের কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে সেটি কমেন্ট বক্সে জানান। এরকম ধরনের আরো নতুন নতুন অনলাইনে ইনকামের টিপস ও ডিসকাউন্ট অফার সম্পর্কে জানতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলটিতে যোগদান করুন। সাথে ওয়েবসাইটটিকে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। ধন্যবাদ।
আমার মন্তব্য হলো আমি অনলাইন থেকে টাকা আয় করবো
অবশ্যই, এর জন্য আপনি আমাদের এই ওয়েবসাইটটিকে নিয়মিত অনুসরণ করুন বা ওয়েবসাইটে উপলব্ধ নিবন্ধনগুলো পড়তে থাকুন।