এআই এর কাছে যে প্রশ্ন করা যাবে না – জানুন ৫টি নিষিদ্ধ প্রশ্ন ও ব্যাখ্যা
এআই এর কাছে যে পাঁচটি প্রশ্ন করা যাবে না সেগুলি হলো, কারো ব্যক্তিগত তথ্য জানবার বিষয়ে, অবৈধ বা বেআইনি কার্যক্রম সম্পর্কিত, আত্মঘাতী চিন্তা বা মানসিক রোগের সম্পর্কে, ভবিষ্যদ্বাণী, এবং ঘৃণামূলক প্রশ্ন জানা যাবে না। কারণ এই প্রশ্ন গুলোর উযুর AI আপনাকে দেব না।
এআই বা (Artificial Intelligence) এখন আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। যেখানে আপনি প্রশ্নোত্তর, কনটেন্ট রাইটিং, কোডিং, বিশ্লেষণ – প্রায় সবক্ষেত্রেই আমরা AI এর সাহায্য নিচ্ছি। তবে এমন কিছু প্রশ্ন রয়েছে যেগুলো AI-এর কাছে করা উচিত নয় বা AI সে প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে অক্ষম। এই ব্লগে আমরা আলোচনা করবো সেই পাঁচটি প্রশ্ন গুলো কি? যেগুলো এআই এর কাছে করা উচিত নয় এবং কেন তা অনুচিত – তা নিয়ে বিশ্লেষণ করবো।
এআই এর কাছে যে পাঁচটি প্রশ্ন করা যাবে না
১. ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে প্রশ্ন করা
উদাহরণ প্রশ্ন:
- যেকোনো অমুক ব্যক্তির ফোন নম্বর/ঠিকানা দিন
- যেকোনো ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর কী?
কেন এ ধরনের প্রশ্ন এআই-এর কাছে করা যাবে না:
এআই-এর মূলনীতির মধ্যে রয়েছে গোপনীয়তা (privacy) যেটি সে বজায় রাখে। সেকারণে কাউকে ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ করতে অনুরোধ করা শুধু অনৈতিক নয়, এটি আইনগতভাবেও নিষিদ্ধ। সুতারং এই ধরনের তথ্য ফাঁস হলে কারও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে হতে পারে। তাই আপনি এই প্রশ্নটি করতে পারবে না।
২. অবৈধ বা বেআইনি কার্যক্রম সম্পর্কিত প্রশ্ন
উদাহরণ প্রশ্ন হলো:
- হ্যাকিং কীভাবে করা যায়?
- ভুয়া ডকুমেন্ট বানানোর উপায় কী?
কেন এ ধরনের প্রশ্ন নিষিদ্ধ করা হয়েছে:
কারণ AI কখনোই কোনো বেআইনি কার্যকলাপ শেখাতে বা উৎসাহ দিতে পারে না। কারণ এরকম প্রশ্ন সমাজের জন্য ক্ষতিকর এবং যেকোনো দায়বদ্ধ প্রতিষ্ঠান বা প্রযুক্তির পক্ষে তা গ্রহণযোগ্য নয়। তাই AI এর লক্ষ্য হলো নিরাপদ ও ইতিবাচক প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিশ্চিত করা। তাই আপনি এই ধরণের অবৈধ কার্যক্রম সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারবে না।
জানুন: এআই থেকে মাসে লাখ টাকা উপার্জন করার উপায়।
৩. আত্মঘাতী চিন্তা বা মানসিক রোগে উৎসাহিত করে এমন প্রশ্ন
উদাহরণ প্রশ্ন:
- আমি আত্মহত্যা করতে চাই, কীভাবে করবো?
- জীবনের মানে কী নেই?
কেন AI এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর দেয় না:
কারণ AI কখনো কাউকে আত্মঘাতী কাজ করতে উৎসাহিত করে না। কারণ এআই কারো মানসিক স্বাস্থ্য একটি স্পর্শকাতর বিষয় এর জন্য পেশাদার সহায়তা নেওয়া জরুরি। তাই AI কেবল সাধারণ তথ্য দিতে পারে, কিন্তু এই ধরণের আত্মঘাতী চিন্তা বা মানসিক রোগে চিকিৎসা সেবা দিতে নয়।
৪. ভবিষ্যৎ বাণী বা ভাগ্য জানার প্রশ্ন
উদাহরণ প্রশ্ন:
- আমি কবে বিয়ে করবো?
- আগামী বছর আমার ব্যবসার কী হবে?
- আমি কত দিন বাঁচবো?
কারণ এটি ব্যাখ্যা সম্ভব নয়:
এআই কোনো জ্যোতিষী বা ভবিষ্যৎদ্রষ্টা নয়। সুতারং এটি কেবল বিদ্যমান তথ্য বিশ্লেষণ করে অনুমান করতে পারে। তাই ভবিষ্যৎ এর অনিশ্চিত অনেকটাই মানুষের কর্মকাণ্ড, সিদ্ধান্ত ও বাস্তব পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। তাই AI এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না।
৫. ঘৃণামূলক বা বৈষম্যমূলক প্রশ্ন
উদাহরণ প্রশ্ন:
- কোন জাতি সবচেয়ে নিচু?
- নারীদের কি কাজের যোগ্যতা কম?
- কিভাবে মানুষকে ছোট করা যায়?
তার ব্যাখ্যা হলো:
AI এর নীতিগত দিক থেকে যেকোন বৈষম্যমূলক, বর্ণবাদী বা ঘৃণামূলক বক্তব্যের প্রচারণা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। কারণ AI তৈরি হয়েছে সবাইকে সমানভাবে সাহায্য করার জন্য, কাউকে ছোট বা অপমান করার জন্য নয়। সুতারং আপনি চেষ্টা করলেও ঘৃণামূলক বা বৈষম্যমূলক প্রশ্নের উত্তর পাবেন না।
জানুন: চ্যাটজিপিটি কি? ও কিভাবে কাজ করে।
উপসংহার:
AI যেমন শক্তিশালী একটি টুল, তেমনি এর ব্যবহারেও থাকতে হবে পরিপূর্ন দায়িত্বশীলতা। কারণ এআই প্রযুক্তির সদ্ব্যবহার আমাদের জীবনে একটি অংশ হয়ে উঠতে পারে, তাই এটির অপব্যবহার আমাদের জন্য বিপজ্জনকবা হতে পারে । সুতারং এই ধরণের প্রশ্ন এড়িয়ে চলাই শ্রেয় বলে আমার মনে হয়।
মনে রাখবেন – AI মানুষের সহায়ক, কিন্তু বিকল্প নয়। ব্যক্তিগত, নৈতিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতা আমাদেরই হাতে। তাই সবসময় এআই এর সাথে সতর্কমূলক ভাবে চলুন।
আপনি কি এমন কোনো প্রশ্ন করেছেন যেটির উত্তর AI দেয়নি বা দিতে পারিনি? তাহলে সেটি নিচে মন্তব্যে আপনার অভিজ্ঞতাটি জানান!