ট্রেনে থাপ্পর মারলেন হিন্দু যুবতী একটি মুসলিম বয়স্ক লোককে

বালুরঘাট এক্সপ্রেস ট্রেনে থাপ্পর মারলেন হিন্দু যুবতী একটি মুসলিম বয়স্ক লোককে

আশা করি আপনারা সকলেই বালুরঘাট এক্সপ্রেস এর ট্রেনের মধ্যে এক মুসলমান ভদ্রলোককে থাপ্পড় মারলেন এক মহিলা। এই ঘটনাটির ভিডিও আপনারা সকলেই দেখেছেন। মানে আপনি এই বিষয়ে জানেন তো? যদি না জানেন তাহলে এই নিবন্ধনটি সম্পূর্ণ পড়ুন এবং এখানে দেওয়া ভিডিওটি দেখুন।

এই বিষয়ে ভিডিওটি পোস্ট করেছেন আমাদের বিরোধী দলের নেতা “শুভেন্দু বাবু” তাই আপনারা অনেকেই কনফিউজ হয়ে আছেন যে কে ঠিক কে ভুল।

কিন্তু কে ঠিক, কে ভুল? এটি বলার জায়গায় আমি নেই। কারণ আমি পুলিশ, সিবিআই, বা প্রশাসন নই। তাই আমি কোনটি সঠিক কোনটি ভুল এটি বলতে পারবো না।

তবে আমি কিছু বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করব। যেগুলো জানার পরে আপনারা হয়তো নিজে থেকেই হয়তো বুঝতে পারবেন, যে কে ঠিক এবং কে ভুল। আমি নিশ্চিত যে আপনি এই নিবন্ধনটি পড়ার পরে আপনার মতামত নিজে থেকেই তৈরি করতে পারবেন।

কিন্তু তার আগে আপনাদের কিছু বিষয় জেনে নেওয়া উচিত। যেমন; হঠাৎ করে শুভেন্দু অধিকারী ভিডিওটি পোস্ট করলেন। যেখানে একটি হিন্দু মহিলা একটি বয়স্ক বৃদ্ধ মুসলমানকে থাপ্পর মারছেন।

আর সেই ভিডিওটি দেখবার পর মানুষ দুটি দলে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। যেখানে একদল লোক বলছে যে শুভেন্দু অধিকারী ঠিকই করেছে ভিডিওটি পোস্ট করে। একজন বৃদ্ধ লোক কেন এই কান্ড কারখানা করবে? তার উচিত শিক্ষা হওয়া উচিত। অন্যদিকে আর একদল লোক বলে উঠছে সত্যিই কি এই বৃদ্ধ লোকটি এই কাজটি করেছে? তার যথাযথ প্রমাণ দেওয়া হোক। এবং সত্যি সত্যিই সেই বৃদ্ধ মুসলিম লোকটির মোবাইলটি চেক করা হোক সেই কাজটি করেছে কিনা। নাকি এমনি এমনি লোকটাকে মারা হলো? তাই এই বিষয় নিয়ে দুদিন খুব বিতর্ক চলল সোশ্যাল মিডিয়ার উপরে।

কিন্তু আজকে সকাল বেলায় ঘটে গেল অন্য একটি ঘটনা। যেখানে একটি ভিডিও সামনে এসছে এবং সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে সত্যিই ওই বৃদ্ধ লোকটি ভিডিও করছিল। এবং সেই ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে যে লোকটি ভিডিও করছিল এবং লোকটার ফোনে সেই ভিডিওটি করতে করতে ওই মহিলাটি ছবি চলে এসেছে।

কিন্তু আমি এখনো বলতে পারবো না যে কে ঠিক এবং কে ভুল। কারণ ইতিমধ্যে এই গোটা ঘটনার মধ্যে আরও একটি মহিলা যুক্ত আছে। জানার নাম হলো “ছন্দা রানী দাস” যিনি একজন হিন্দু মহিলা।

এবার হয়তো আপনি বলবেন এ মহিলা এই ঘটনার মধ্যে কিভাবে এলো।

তাহলে শুনুন, এই ছন্দা রানী দাস মহিলাটি চিকিৎসা করতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু সেই ছন্দা রানী দাস মহিলাটিকে চিকিৎসা করতে নিয়ে যাচ্ছিলেন এই মুসলিম বৃদ্ধ লোকটি। অর্থাৎ এই মুসলমান বৃদ্ধটি, তার প্রতিবেশী হিন্দু মহিলাটি কে নিয়ে যাচ্ছিলেন চিকিৎসা করাতে, যে কিনা তার মেয়ে সমান।

অর্থাৎ শুরুতেই যারা হিন্দু-মুসলমান এর বিভেদ ঘটাতে চাইছিলেন, এটি জানবার পর তাদের এটি ভালো লাগবে না। তবে আপনি হয়তো বলবেন যে একজন হিন্দু মহিলাকে চিকিৎসা করতে নিয়ে যাচ্ছে মানে কি বৃদ্ধটা সঠিক? এখানেও আমি বলব আমার উত্তর না। তবে সম্পূর্ণ পড়ুন সব বুঝতে পারবেন।

তাহলে শুনুন; আমরা সকলেই জানি আমাদের বয়স্ক মা, বাবারা তারা যে ফোন ব্যবহার করে। সেই ফোনগুলো লাল বাটন টিপে ফোন কাটতে হয় এবং সবুজ বাটন টিপে ফোন ধরতে এছাড়া বেশি কিছু জানে না। সেটি আপনিও জানেন এবং আমিও ভালোভাবে জানি। কিন্তু আমি কারো পক্ষ নিয়ে কথা বলছি না। কথাটি ভালো করে ভাববেন।

যদি আমি সেই বয়স্ক মা-বাবার ভিডিও করতে বলি, তাহলে তারা কি পারবে আমাদের মত সেরকম গুছিয়ে ভিডিও করতে, বা আপনি কখনো করতে দেখেছেন। তারা দেখবেন ভিডিও করতে গিয়ে ভুল দিকে ক্যামেরা ধরে এবং অন্যদিকে ঘুরিয়ে ফেলেন। সে বিষয়ে আশা করি আমরা অনেকেই অবগত আছি। এই বয়স্ক ভদ্রলোকটা ঠিক তেমনি।

জানুন : – বেঙ্গালুরু, পুনে এবং হায়দ্রাবাদ: প্রযুক্তিবিদদের জন্য সেরা শহর কোনটি?

ঘটনার সূত্রপাত টি হলো, এই বয়স্ক ভদ্রলোকটি সেদিন সম্ভবত জঙ্গিপুর স্টেশনে তানার বাইক রেখে বাইকটির ভিডিও করছিল। যাতে করে তিনি যেন ফিরে এসে দেখেন তানার বাইকটি সেই অবস্থায় আছে এবং চুরি হয়ে গেলে যেন খুঁজে পাওয়া যায়। এটা আমরা অনেকেই করে থাকি কোন স্টেশনে, কিংবা গ্যারেজে সাইকেল বা বাইক রেখে গেলে। তিনিও ঠিক এই কাজটিই করছিলেন। কিন্তু ভুলবশত বা কোন কারণবশত ব্যাস্ততার মধ্যে সেই ভিডিও রেকর্ডিংটা আর বন্ধ করা হয়নি। সুতরাং তিনি ওই অবস্থায় তেই তানার ফোনটি পকেটে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন।

এরপর তিনি যখন ট্রেনে উঠে যাত্রা শুরু করলেন। তার কিছুক্ষণ পর মনে হল তখন তিনি পকেট থেকে ফোনটি বার করলেন, এবং দেখছেন তার ভিডিও রেকর্ডিংটি তখনও সেই অবস্থায় চালু আছে। এবার তিনি ভিডিওটি ব্যাক করতে গিয়ে, চেপে দিলেন সামনের ক্যামেরা ভিডিও রেকর্ডিং অপশনটি।

এবার হয়তো আপনি বলবেন আপনি কি ওই জাগাতে উপস্থিত ছিলেন? আপনি কি জানেন? তাহলে আপনি আপনাকে বলব না। আমি ছিলাম না, এবং আমি এই বিষয়ে জানিনা। কিন্তু গতকাল যে ভিডিও ফুটেজটি এসেছে এবং তানার সাথে যে চিকিৎসা করতে যাচ্ছিলেন তার কথাকপন গুলো ভিডিওর মধ্যে এসে। যেখানে তিনি বলছেন তিনি ঘটনাক্রমে ওই জায়গায় ছিলেন না। কারণ তিনি ট্রেনের অন্য বগিতে ছিলেন।

এছাড়া সেখানে যে য়ে বলা হচ্ছে ৩০ মিনিটের ভিডিও করা হয়েছে। কিন্তু একচুয়ালি ভিডিওটি ৩০ মিনিট নয়। ভিডিওটি ছিল ত্রিশ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের। এখানেই হলো মজার গল্প; কারণ যখন ওই হিন্দু মহিলাটি ভিডিওটি টাচ করে ভিডিওটি দেখাচ্ছেন তখন পুরো ভিডিওটির ৩০ মিনিট ১০ সেকেন্ড ভিডিওটি তে ওই হিন্দু মহিলাটির কোন ফুটেজ নেই। অর্থাৎ ভিডিওটি আর বাকি আছে ৩২ সেকেন্ড। যেটির স্ক্রিনশট আপনি নিচে দেখতে পাচ্ছেন।

ট্রেনে থাপ্পর মারলেন হিন্দু যুবতী ভিডিও

এবার আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করছি একজন মানুষ ৩০ মিনিট ১০ সেকেন্ড ধরে ভিডিও করে সেই মহিলাটার ভিডিও রেকর্ডিং করতে পারিনি? যে কিনা তার পাশেই বসে ছিল। তিনি ৩০ মিনিট ধরে ভিডিও চালু করে রেখেছে শুধু একটি মহিলার হাত তুলবে বলে। এবং তারপর ১০ সেকেন্ডে এসে সেই ভিডিওটি করেছে? এটি কখনো বিশ্বাস করবেন? আপনার কি মনে হয়।

এবার বলুন তো একজন মানুষ ত্রিশ মিনিটের ভিডিও কখন করে? যখন মানুষ ভুলবশত কোন ভিডিও হয়ে যায়। যেটি এই বৃদ্ধ লোকটির সাথে হয়েছে।

এবং এই ভিডিওটির মধ্যেই যাবতীয় প্রমাণ লুকিয়ে, কিন্তু দুঃখের বিষয় হল ভিডিওটি জমা আছে জিআরপির কাছে। এবং যখন এই হিন্দু মহিলাটি এই ভদ্রলোকের নামে মামলা দেয় বা অভিযোগ করে, তখন জিআরপি ভদ্রলোককে থানায় নিয়ে যায়। এবং থানায় নিয়ে যাওয়ার পরে যখন লোকটির ফোনে ভিডিওটি চালিয়ে দেখে জিআরপি বুঝতে পারে যে কেসটি ভুল। ভদ্রলোকের আসলে কোন দোষ নেই। সেই কারণেই জিআরপি তানার ফোনটি জমা রেখে ভদ্রলোককে বাড়ি ছেড়ে দেন।

কারণ সেই ভিডিওটি প্রথম ১-২ মিনিটে শুধু তার বাইকের ভিডিও। তারপর প্রায় ৩০ মিনিট পর্যন্ত যে ভিডিওটি আছে সেটি ছিল পুরোটা অন্ধকার ভিডিও। মানে ভিডিও চালু করে পকেটের ভিতরে রাখলে যেমন হয়, ঠিক তেমনি অন্ধকার ভিডিও।

এবার আমি বলি যদি ওই বৃদ্ধ লোকটি মহিলাটি ভিডিও করার হয় বা করবার কোন ইনটেনশন থাকতো। তাহলে আশা করি ৩০ মিনিট বাদে গিয়ে সেই ভিডিওটি করবে না। এছাড়া ৩০ মিনিটের মধ্যে সেই বৃদ্ধ লোকটি চাইলে আরো কোনো ভিডিও করতে পারত। সাথে ওই মহিলাটি যখন তার ভিডিওটি দেখতে দেখতে ৩০ মিনিট ১০ সেকেন্ড পর্যন্ত টেনে নিয়ে গেছে। সেই সময়ের মধ্যে যদি আরো কোন খারাপ কিছু কনটেন্ট পেতে। তাহলে আশা করি তিনি ৩০ মিনিট ১০ সেকেন্ড পর্যন্ত ভিডিওটি টেনে নিয়ে যেতেন না। তারপরের ১০ সেকেন্ড দেখানোর জন্য।

তবু এখনো আমি বলার জায়গায় নেই যে কে ঠিক বা কে ভুল। তবে এটা বলতে পারি যদি সেই ভদ্রলোকের সত্যিই কোন খারাপ ইনটেনশন থাকত তাহলে প্রথম ৩০ মিনিটের মধ্যেও অনেক কনটেন্ট থাকতো বা ভিডিও করতে পারতেন।

তবে এখানে আমি একটি কথা বলতে পারি। লোকটি সত্যিই ফোন অপারেট করতে জানেন না হয়তো। আবার হয়তো ইচ্ছাকৃতভাবেও করতে পারেন এইটুকু বুঝতে হলে লোকটির ফোনের গ্যালারিতে যাওয়া উচিত। এবং গ্যালারিতে গিয়ে তার ফোনে পুরনো যদি কোন ভিডিও করা থাকে সেগুলো চেক করা উচিত। এবং দেখা উচিত লোকটি তার অন্যান্য ভিডিওর ক্ষেত্রেও এরকম অসৎ লগ্নতা আছে কিনা।

যদি দেখা যায় অন্যান্য ভিডিওতে তিনি ঠিক এরকম কোন ভুল করে রেখেছেন কিনা? যদি সেটি দেখা যায় তাহলে লোকটি সত্যিই নির্দোষ। আর যদি দেখা যায় সুন্দরভাবে ভিডিও করতে পারছে বা পারেন তাহলে লোকটি নির্দোষ নয়।

তবে আমার মনে হয় এই হিন্দু মহিলাটির বক্তব্য, লোকটির বক্তব্য, যাকে চিকিৎসা করতে নিয়ে যাচ্ছিলেন সেই মহিলাটির বক্তব্য, এবং ভিডিও টাইমিং বা সময়কাল সবকিছুর উপর নির্ধারণ করে নিজেদের মতামত তৈরি করা উচিত। আপনার কি মতামত সেটি কমেন্ট বক্সে জানান।

আরো পোস্ট পড়ুন :-

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।