অনলাইন থেকে ইনকাম করার সেরা ১০ টি উপায় সকলের জন্য

২০২৪ এ অনলাইন থেকে ইনকাম করার সেরা ১০ টি উপায় সকলের জন্য

আমরা সকলেই জানি ২০২৪ পড়ে গেছে, কিন্তু আমরা এখনো পরিবর্তন হয়নি। এবং এখনো অনেকে বেকার আছি কোন টাকা পয়সা ইনকাম করতে পারি না। তো আপনি যদি এরকম একজন বেকার হয়ে থাকেন বা একজন ছাত্র হয়ে থাকেন। আপনার হাত খরচের জন্য কিছু টাকা ইনকাম করতে চান বা বাড়ি বসে অনলাইনের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে চান। তাহলে এই নিবন্ধনটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আর জেনে নিন অনলাইন থেকে ইনকামের দশটি সেরা উপায়।

কারণ এই নিবন্ধনের মাধ্যমে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি, অনলাইন ইনকাম করার দশটি সেরা উপায়। যে উপায়গুলো আমি নিজে ব্যবহার করে ইনকাম করে থাকি। তো আপনিও যদি ইনকাম করতে চান তাহলে অবশ্যই এই নিবন্ধনটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। আশা করি এখানে দেওয়া দশটি উপায় আপনার খুব উপকারী বা উপযোগী হবে।

তাই চলুন দেরি না করে জেনে নেই অনলাইন ইনকাম করার সেরা ১০ টি টিপস গুলি।

অনলাইন থেকে ইনকাম করার সেরা ১০টি টিপস

১. অনলাইন স্টোর তৈরি করে

আপনার কাছে যদি ১০ থেকে ২০ হাজার টাকার উপরে বাজেট থেকে থাকে সাথে দুই থেকে তিন জনের একটি টিম হয়ে থাকে। তাহলে আপনারা একটি অনলাইন ই-কমার্স ওয়েবসাইট বা অনলাইন স্টোর তৈরি করতে পারেন। এবং সেখানে লোকের কাছ থেকে পণ্য নিয়ে সেটি অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রয় করতে পারেন। পণ্য নেওয়ার জন্য আপনি আপনার নিকটবর্তী স্টোর গুলির সাথে যোগাযোগ করে নিতে পারেন।

২. ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করে

আপনার যদি কোন একটি বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান থেকে থাকে তাহলে আপনি একটি ব্লগ ওয়েবসাইট শুরু করতে পারেন। এবং সেখানে আপনার জ্ঞানগুলো কে আমার মত করে নিবন্ধন বা আর্টিকেল লিখে দর্শকদের সামনে আপনার ব্লগ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তুলে ধরতে পারেন। এবং আপনার সেই ব্লগ ওয়েবসাইটটিতে বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন চালিয়ে ইনকাম করতে পারেন।

৩. অ্যাপ্লিকেশন বানিয়ে ইনকাম

আপনি যদি নতুন নতুন জিনিস তৈরি করতে ভালোবেসে থাকেন বা ইচ্ছুক হয়ে থাকেন, এবং আপনি কোডিং জেনে থাকেন। তাহলে আপনি অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে পারেন। কারণ লোকের সাহায্যের জন্য আপনি কোডিং এর মাধ্যমে ও কোডিং ছাড়া থ্যাংকবলে ও ম্যাকেরইড ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে পারেন। যে অ্যাপ্লিকেশন গুলোটির সাধারণ মানুষের কাজে দেয় এমন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করে আপনি প্লে স্টোরে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে সেখানে পাবলিশ করতে পারেন। এবং সেই অ্যাপ্লিকেশন গুলির মধ্যে আপনি বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন লাগাতে পারেন ফলে যারা আপনার অ্যাপ্লিকেশনগুলি ব্যবহার করবে তারা আপনার দেওয়া বিজ্ঞাপনগুলি দেখতে পাবে। ফলে আপনি সেই বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ইনকাম করতে পারেন গুগল এডসেন্স, ফেসবুক application ads, ও অন্যান্য কোম্পানির বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে।

৪. ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করে

আপনার যদি কোন একটি বিষয়ে বিশেষ দক্ষতা থেকে থাকে। যেমন; ওয়েবসাইট ডিজাইন, লোগো ডিজাইন, কনটেন রাইটিং, এসইও, ভিডিও এডিটিং, ডাটা এন্ট্রি, ও আরো অন্যান্য কোন কাজের বিষয়ে বিশেষভাবে জেনে থাকেন। তাহলে আপনি ফাইবার বা আপওয়ার্ক এর মত বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সার প্ল্যাটফর্মের জয়েন হয়ে সেখানে আপনার একটি প্রোফাইল তৈরি করে আপনি আপনার কাজটি বিক্রয় করতে পারবেন। এবং সেখান থেকে ইনকাম করতে পারবেন। কারণ আপনি যেই কাজটি করেন সেই কাজটি করানোর জন্য প্রতিমাসে মিলিয়নের উপরে দর্শক বা কাস্টমার আছে যার ওই কাজটি করানোর প্রয়োজন হয়। তারা সরাসরি ফাইবার বা Upwork থাকা ফ্রিল্যান্সারদের সাথে যোগাযোগ করে কাজটি করিয়ে নেয় এবং তাদের সেই কাজের মূল্য দিয়ে থাকেন।

৫. অনলাইন কোর্স তৈরি করে

আপনি যদি কোন একটি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে থাকেন। যেমন; কম্পিউটারের সম্পর্কে, কোডিং এর সম্পর্কে, মোটরসাইকেল রিপেয়ারিং, বা কুকুরকে পোষ মানানোর সম্পর্কে, বা আরো অন্যান্য কোন একটি বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান থেকে থাকে তাহলে আপনি সেই বিষয়ের উপরে একটি কোর্স তৈরি করতে পারেন। এবং সেটিকে আপনি “ইউডেমিকোর্সার” মত প্ল্যাটফর্মে আপলোড করে বিক্রয় করতে পারবেন। তবে এখানে একটি বিশেষ সুবিধা আছে। সেটি হলো আপনি একবার কোর্স তৈরি করে সেটি আপলোড করে দিলে সারা জীবন আপনার কোর্স টি বিক্রয় হতে থাকবে। এবং সেখান থেকে আপনি একটি ইনকাম পেতে থাকবেন।

৬. ড্রপ শিপিং ব্যবসা করে

যদি আপনি একাই ছোটখাটো একটি ব্যবসা করতে চান অনলাইনের মাধ্যমে তাহলে আপনি শপিফাই প্লাটফর্ম কে ব্যবহার করে ড্রপ শিপিং ব্যবসাটি করতে পারেন। কারণ এখানে আপনি শুধুমাত্র মাসে ১০০ থেকে ২০০ টাকা ইনভেস্ট করে আপনার একটি স্টোর তৈরি করে, সেই স্টোরে অন্যের পণ্যগুলোকে যুক্ত করে আপনি একটি নির্ধারিত লাভ রেখে একটি দাম ঠিক করুন, এবং সেটি আপনার স্টোরের মাধ্যমে বিক্রয় করে ইনকাম করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে সবথেকে বড় সুবিধা হল আপনাকে কোথা থেকে বা কারো কাছ থেকে পণ্য হাতে করে আনতে হবে না। আপনাকে শুধু লিস্টিং করে দিতে হবে এটা অনেকটাই এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মত, কিন্তু একটু আলাদা। তবে আপনি যদি জানতে চান ড্রপ শিপিং কি ও কিভাবে কাজ করে তাহলে এখানে ক্লিক করে এখনই জেনে নিন।

৭. অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে

আপনার কাছে যদি ১০ থেকে ১২০০০ টাকা থেকে থাকে বা আপনার অনলাইন মার্কেটিং সম্পর্কে জ্ঞান থেকে থাকে তাহলে আপনি শেয়ার এ সেল, ডিজিস্টোর, বা ক্লিক ব্যাংক এর মত অ্যাফিলিয়েট প্ল্যাটফর্ম গুলিতে যোগদান করে সেখান থেকে আপনার পছন্দের একটি অ্যাফিলিয়েট পণ্যকে নির্বাচন করুন।

তারপর সেই পণ্য বা প্রোডাক্টটির বিষয়ে একটি ল্যান্ডিং পেজ তৈরি করুন বা ব্লগ পোস্ট লিখুন এবং সেই ল্যান্ডিং পেজ বা ব্লগ পোষ্টের মধ্যে আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংকটি যুক্ত করুন। তারপর সেই ব্লগ পোস্ট বা ল্যান্ডিং পেজ কে google বা ফেসবুক বিজ্ঞাপন দ্বারা বিজ্ঞাপন চালাতে থাকুন। ফলে আপনার ওই ল্যান্ডিং পেজ বা বা ব্লগ পোস্টে প্রবেশ করা দর্শকগুলি যদি আগ্রহী হয়ে থাকে তাহলে আপনার লিংকে ক্লিক করে অবশ্যই তারা সেই পণ্যটি কিনবে। ফলে আপনি সেখান থেকে একটি কমিশন পাবেন।

যে কমিশন সাধারণত ৫ ডলার থেকে শুরু হয় আর কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি ৫০০ ডলারও দিয়ে থাকে। তাহলে ভাবুন আপনি যদি মাসে এরকম তিনটে থেকে চারটি ওই অ্যাফিলিয়েট পণ্যকে বিক্র করতে পারেন তাহলে আপনি ২০০০ থেকে ২৫০০ হাজার ডলার ইনকাম করতে পারবেন খুব সহজভাবেই।

৮. নিজস্ব পণ্য বা প্রোডাক্ট তৈরি করে

আপনি যদি কোন ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন বা আপনি একটি নিজের ব্যবসা শুরু করতে চান বা নিজেই কোন পণ্য বা প্রোডাক্ট তৈরি করতে পেরে থাকেন। তাহলে নিজস্ব কোন একটি পণ্য বা প্রোডাক্ট তৈরি করুন। এবং সেটিকে অ্যামাজন, ফ্লিপকার্টস্ন্যাপডিল এর মতো বিভিন্ন ধরনের শপিং প্ল্যাটফর্মে একটি সেলার একাউন্ট তৈরি করে সেখানে আপনার পণ্যটি আপলোড করে অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রয় করতে পারেন। এবং সেখান থেকে আপনি ইনকাম করতে পারেন। তবে এর জন্য আপনাকে একটি জিএসটি অ্যাকাউন্ট, প্যান কার্ডের ও ব্যাংক একাউন্ট প্রয়োজন হতে পারে।

৯. অনলাইন টিউশন পড়িয়ে ইনকাম

যদি আপনি একজন শিক্ষক হয়ে থাকেন এবং আপনার সেই শিক্ষাকে প্রচার করার ব্যাপারে বিশেষ অগ্ৰহী হয়ে থাকেন। তাহলে আপনি ই-টিউশন, বা বাই-জুস এর মত প্ল্যাটফর্ম গুলিতে একজন শিক্ষক হিসেবে যোগদান করতে পারেন। তবে সেখানে যোগদান করার আগে আপনাকে একটি ইন্টারভিউ দিতে হতে পারে। আপনি ইন্টারভিউ দিয়ে পাস করে গেলেন আপনি সেখানে অনলাইনের মাধ্যমে আপনার শিক্ষাকে প্রচার করে বা টিউশনি করে ইনকাম করতে পারবেন। তবে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানান।

১০. বিভিন্ন সার্ভে সম্পূর্ণ করে

এই সার্ভে সম্পূর্ণ করার পদ্ধতিতে যে কেউ ঘরে বসে অনলাইনে অল্প কাজ করে ইনকাম করতে পারবে। তবে এখানে অন্য সব ইনকামের থেকে একটু কম ইনকাম হয়ে থাকে। কিন্তু এটি ১০০% গ্যারান্টি সহ ইনকাম হয়ে থাকে। কারণ এই সার্ভে সম্পন্ন করে ইনকাম করার জন্য আপনি গুগল রেওয়ার্ড পয়েন্ট, বা ও y-সেন্স এর মতো সার্ভে প্ল্যাটফর্ম গুলিতে যোগদান করতে পারেন।

এবং সেখানে দেওয়া সার্ভেগুলো সম্পূর্ণ করলে সেই সার্ভেটি সম্পূর্ণ করার জন্য যত রেওয়ার্ড পয়েন্ট দেওয়া থাকে সেটি আপনি পেয়ে যাবেন তবে সাধারণত গুগল রিওয়ার্ড ও ওয়াই-সেন্স ওয়েবসাইটটিতে যে সার্ভেগুলো উপলব্ধ থাকে তার সর্বনিম্ন হল ০. ৮ ডলার যেটি আমাদের ভারতের টাকায় পাঁচ থেকে ছয় টাকা হয়ে থাকে। এই সার্ভেগুলো সম্পন্ন করার জন্য বেশি সময়ও লাগে না সুতরাং আপনি যত পরিমানের সার্ভিস সম্পন্ন করবেন তত পরিমাণে ইনকাম করতে পারবেন। তবে আপনি যদি না জানেন সার্ভে করে কিভাবে ইনকাম করে তাহলে এখানে ক্লিক এখনই জেনে নিও।

উপসংহার:

আমার জানা অনলাইনে ইনকাম করার সেরা ১০ টি উপায় আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। আশা করি এটা আপনার খুব উপকার করেছে। যদি করে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানান ও এটি বেশি বেশি করে শেয়ার করে দিন। আর আপনি পরবর্তী নিবন্ধন কোন বিষয়ের উপরে পেতে চান সেটি কমেন্ট বক্সে জানান। আর আপনি যদি এরকম ধরনের আরো নতুন নতুন অনলাইন ইনকামের উপায় ও বিভিন্ন ধরনের টিপস এবং ট্রিক এর সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আমাদের এই তরিকুল বাঙালি ওয়েবসাইটটিকে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন, সাথে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলটিতে যোগদান করুন।

আরো পোস্ট পড়ুন :-