ব্লগিং কি এবং কিভাবে ব্লগিং করতে হয়? বাংলাতে ব্লগিং কি?

ব্লগিং কি এবং কিভাবে ব্লগিং করতে হয়? বাংলাতে ব্লগিং কি?

বন্ধুরা, আজকের এই আমরা পোস্টে ব্লগিং নিয়ে কথা বলব, ব্লগিং কি, ব্লগিং কি কিভাবে করা যায়, ও ব্লগিং কিভাবে করবেন? আমরা এই পোস্টে এই সমস্ত বিষয় জানবো। ব্লগিং সম্পর্কিত আপনার মনে যত প্রশ্নই থাকুক না কেন, আজ আমি এই নিবন্ধনের মাধ্যমে সেই সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। তাই আপনি যদি ব্লগিং করতে বা শিখতে চান? এবং আপনি কীভাবে একটি ব্লগ থেকে অর্থ উপার্জন করবেন তা জানতে চান। তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন।

প্রথমত, ব্লগিং করার আগে আপনাকে তিনটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে, প্রথমটি আপনাকে ধৈর্য ধরতে হবে। এবং দ্বিতীয়টি আপনাকে খুব পরিশ্রম করতে হবে। তৃতীয় আপনাকে প্রথম ১ বছরের জন্য ৪-৫ হাজার টাকা ফ্রি হিসাবে ব্যায় করতে হবে। আপনি যদি সত্যিই ব্লগিং থেকে অর্থ উপার্জন করতে চান তাহলে এগুলি আপনাকে করতে হবে। আর আপনার যদি ধৈর্য না থাকে তবে আপনি এই পোস্টটি এখানে ছেড়ে অন্য পোস্ট পড়তে পারেন বা আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়তে পারেন এবং আপনার সমস্ত সন্দেহ দূর করতে পারেন।

ব্লগিং শুরু করার আগে, আপনাকে প্রথমে আপনার দক্ষতা নির্বাচন করতে হবে। যেমন; আপনি যে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ সেই বিষয়ে একটি ব্লগ শুরু করুন। এটি আপনাকে এমন সুবিধা দেবে। কারণ আপনি আপনার দর্শকদের কাছে আপনার যে বিষয়ে দক্ষতা আছে সেটি ভালভাবে ব্যাখ্যা করতে পারবেন। ফলে আপনি আপনার ব্লগকে কোনো একটা বিষয়ে দর্শকদের কাছে অভিজ্ঞ বা জনপ্রিয় করে তুলতে পারবেন। এবং সেখান থেকে বেশি পরিমানে ইনকামও করতে পারবেন।

ব্লগিং কি?

একটি ব্লগে একজন ব্লগার হিসাবে নতুন পোস্ট প্রকাশ করার প্রক্রিয়াকে ব্লগিং বলা হয়। ব্লগিং করা খুবই সহজ। এর জন্য আপনেকে একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরী করতে হবে। তবে আপনি হয়তো ভাবছেন যে আপনি ওয়েবসাইট বা ব্লগ তৈরি করতে হয় জানেন না, এবং ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরী করতে যে কোডিং বা প্রোগ্রামিং করতে হয় সেটিও জানেন না তাহলে আপনি কি ব্লগার হতে পারবেন? আপনার চিন্তা যদি এরকম হয় তাহলে আপনি একেবারেই ভুল। কারণ ইন্টারনেট জগতে এমনও অনেক প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেখানে আপনার কোডিং এবং প্রোগ্রামিং ছাড়াই সেখানে একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ বানিয়ে ব্লোগ্গিং শুরু করতে পারেন।

যেমন আমি একজন ব্লগার এবং আমাকে যদি কেউ জিজ্ঞাস করে থাকে আপনি কি করেন তাহলে আমি বলবো ব্লগিং (Blogging) করি। এবং যদি জিজ্ঞাস করে আপনার কাজ কি তাহলে বলবো আমার কাজ হলো আমার জানা কোনো একটা বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে তথ্য দিয়ে একটি নিবন্ধন লিখে অনলাইন জগতে শেয়ার করা সাধারণ মানুষের জন্য। যদি বলাহয় আপনার উপরকার কি? তাহলে বলবো আমি যে নিবন্ধনটি লিখে আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগে পাবলিশ করেছিলাম সেটির মাধ্যমে গুগল বিজ্ঞাপন বা এফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম করে থাকি। এই পুরো প্রসেসটিকে বলা হয় ব্লোগ্গিং

ব্লগিং এর ধরন

ব্লগিং তিন প্রকার-

  1. ইভেন্ট ব্লগিং
  2. স্থায়ী ব্লগিং
  3. ইন্টারন্যাশনাল ব্লোগ্গিং।

ইভেন্ট ব্লগিং :

ইভেন্ট ব্লগিং শুধুমাত্র কয়েক দিনের জন্য করা হয়। ইভেন্ট ব্লগিং এর মাধ্যমে আপনি কম সময়ে বেশি আয় করতে পারেন। এই ব্লগিং শুধুমাত্র উত্‍সব বা কোনো বিশেষ দিনের জন্য করা হয়। উদাহরণস্বরূপ; ঈদে, দীপাবলিতে, নতুন বছরের উপলক্ষে তৈরি একটি শুভেচ্ছা ওয়েবসাইট। যেটি হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক বা যেকোনও সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল করা হয় এবং যারা এই ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করেন, তাদের গুগলের বিজ্ঞাপন দেকিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে ভাল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করা হয় । একে বলে ইভেন্ট ব্লগিং।

স্থায়ী ব্লগিং :

স্থায়ী ব্লগিং করতে অনেক সময় লাগে এবং এতে অনেক পোস্ট দিতে হয়। স্থায়ী ব্লগিং করার জন্য ধৈর্য ধরতে হয়। বেশির ভাগই মানুষ স্থায়ী ব্লগিং করে যাতে তারা সারাজীবন এর থেকে উপকৃত হতে পারে। আপনি যদি এই ধরণের ব্লগিং এ কঠোর পরিশ্রম এবং ধৈর্য রাখেন তবে আপনি খুব ভাল ফলাফল পাবেন। উদাহরণস্বরূপ, আপনি আমার ব্লগটি দেখেছেন, এটি একটি স্থায়ী ব্লগ এবং আমি সর্বদা এটিতে আপনার জন্য নতুন নতুন নিবন্ধ প্রকাশ করতে থাকি এবং সেগুলি আপনার মতো অনেক গুগল থেকে অনুসন্ধান করে এবং আমাদের পোস্টগুলি পড়ে। এবং এই ব্লগে গুগল বিজ্ঞাপন সেটআপ করা আছে ফলে আমি গুগল এডসেন্স থেকে ইনকাম করে থাকি। জানুন আমি ব্লোগ্গিং থেকে কত আয় করি

ইন্টারন্যাশনাল ব্লগিং

এটি ইভেন্ট ব্লগিং ও স্থায়ী ব্লগিং দুটোকে একসাথে নিয়ে যে ব্লোগ্গিং করা হয় তাকে বলে ইন্টারন্যাশনাল ব্লগিং। উদহারণ হিসাবে যে ব্লগটি শুধুমাত্র কোনো একটা দেশকে টার্গেট করে তৈরী করা হয় তাকে বলে ইন্টারন্যাশনাল ব্লগিং। সেটি হতে পারে আমেরিকা, আস্ট্রালিয়া, কানাডা, দুবাই, সিঙ্গাপুর বা অন্য কোনো দেশের জন্য সেই দেশের মাতৃ ভাষায় ব্লগ বানিয়ে সেটিতে নতুন নিবন্ধন পাবলিশ করে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ইনকাম করাকে বলা হয় ইন্টারন্যাশনাল ব্লগিং।

ব্লগ কি?

ব্লগ হল এমন একটি ওয়েবসাইট যা প্রতিনিয়ত আপডেট করা হয় এবং এটিতে নতুন নতুন পোস্ট প্রকাশিত হয়। এই পোস্টটি প্রকাশকারী ব্যক্তিকে ব্লগার বলা হয় এবং আমরা এই ওয়েবসাইটটিকে ব্লগ বলি। এই ধরনের পোস্ট ব্লগে প্রকাশিত হওয়া পোস্ট বা নিবন্ধন গুলি লোকেরা গুগলে অনুসন্ধান করে। এবং এরকম ব্লগে এসে সেই পোস্টগুলি পড়ে এবং তারা সেই পোস্ট থেকে তাদের প্রয়োজনীয় কিছু জ্ঞান পায়। উদাহরণস্বরূপ, আমাদের এই ব্লগটি যেএখানে আপনি ব্লগ বিষয় সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য পাবেন। আরো জানুন ব্লগ বা ওয়েবসাইট কি?

কিভাবে ব্লগিং করবেন ? বন্ধুরা, ব্লগিং করার কিছু সহজ উপায় বলি। ব্লগিং শুরু করার জন্য, প্রথমে আপনাকে একটি বিষয় নির্বাচন করতে হবে যার উপর আপনি বিশেষজ্ঞ। আপনি যদি অন্য কোনো বিষয়ে যান তাহলে আপনার কোনো লাভ হবে না কারণ আপনি অন্য টপিকটি ভালোভাবে মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারবেন না, সেজন্য আপনার মধ্যে থাকা দক্ষতাকে চিহ্নিত করে সেই সম্পর্কিত একটি ব্লগ তৈরি করা উচিত, যেহেতু আমি কম্পিউটার, মোবাইল টেকনোলজিতে আছি। এবং আমার ভালো লাগছে, এই কারণেই আমি এই বিষয়ে এই ব্লগটি তৈরি করেছি এবং সেই কারণেই আমি এটি আপনাকে আরও ভালভাবে ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হয়েছি

এখন আপনি আপনার পছন্দের একটি বিষয় নির্বাচন করুন, তারপর আপনার ব্লগে সেই বিষয় সম্পর্কিত সমস্ত পোস্ট প্রকাশ করতে হবে। সেই কারণে আপনি কি কি পোস্ট প্রকাশ করবেন তার একটি তালিকা তৈরী করুন। তবে মনে রাখবেন বন্ধুরা, আপনি যে বিষয়টি নির্বাচন করেছেন শুধু মাত্র আপনি সেই বিষয়ে পোস্ট লিখবে অন্য কোন বিষয়ে পোস্ট লিখবেন না, এতে আপনার ব্লগের গুগল রেঙ্কিং বাড়বে সাথে বেশি পরিমাণ দর্শক প্রবেশ করবে বা আয় হবে।

তারপর ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরির জন্য দুটি জিনিস প্রয়োজন হবে এবং আপনাকে টাকা ব্যায় করতে হবে যেটা আমি আপনাকে আগেই বলেছি। সেই টাকা ব্যায় করে এক বছরের জন্য একটি ডোমেইন ও হোস্টিং ক্রয় করুন ব্লুহোস্ট প্লাটফ্রম থেকে। আপনি যদি না জানেন ডোমেইন কি বা হোস্টিং কি তাহলে এখানে ক্লিক করুন। তারপর ওয়ার্ডপ্রেস কে ব্যাবহার করে একটি ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরী করুন এবং সেখনে নিয়মিত নতুন নতুন নিবন্ধন প্রচার করে ইনকাম করেত থাকুন।

কিভাবে বিনামূল্যে ব্লগিং করবেন?

আপনি যদি একজন নতুন হন তবে আপনার বিনামূল্যে ব্লগিং শুরু করা উচিত। আমি এই পোস্টে বলেছি ব্লগিং কি? এখন আপনাদের বলব কিভাবে বিনামূল্যে ব্লগিং করবার জন্য উপলব্ধ অনেক প্ল্যাটফর্ম আছে। যেমন Blogger.comWordPress.com এ একটি বিনামূল্যে ওয়েবসাইট তৈরির করতে পাবেন। আমার অভিজ্ঞতা অনুসারে, আপনার যদি বাজেট না থাকে তবে প্রথমে ব্লগার দিয়ে একটি ব্লগ শুরু করুন, তারপর যখন আপনি কিছু অভিজ্ঞতা এবং অর্থ পাবেন, তখন হোস্টিং এবং ডোমেইন কিনে আপনার ওয়ার্ডপ্রেসে ওয়েবসাইট কে মাইগ্রেট করে নিন। ।

কিভাবে বিনামূল্যে ব্লগিং থেকে অর্থ উপার্জন করবেন?

  • সবার আগে, Blogger.com এ ব্লগ তৈরী করুন।
  • এর পর আপনাকে একটি ভালো টেমপ্লেট বেছে নিন।
  • আপনার ব্লগকে ভাল ভাবে সেটিংস ও কাস্টমাইজ করুন।
  • আপনার দক্ষতা অনুযায়ী, প্রতিদিন ভাল পোস্ট আপডেট করুন।
  • Google Webmaster Tool-এ আপনার ওয়েবসাইটকে জমা দিন।
  • আপনার ব্লগে এসইও SEO করে গুগলে রেঙ্ক করুন।
  • তারপর Google AdSense এর মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট অনুমোদিত করে বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু করুন।
  • যখন আপনার Google Adsense একাউন্ট $100 এ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে, তখন Adsense টীম আপনার দেওয়া ব্যাংক একাউন্টে টাকাটি পাঠিয়ে দেবে, পরের মাসে ২১-২৬ তারিখের মধ্যে।

তবে বন্ধুরা, একটা কথা মনে রাখবেন, আপনার ব্লগে যত বেশি ভিজিটর বা লোক আসবে, আপনার আয় তত বাড়বে, তাই আপনার ব্লগে ভালো পোস্ট করা উচিত যাতে লোকেরা সেটি পছন্দ করে এবং তারা প্রতিদিন আপনার ব্লগে আসে এবং আপনার লেখা নতুন পোস্ট পড়ে। তাহলে আপনি ব্লগ থেকে অধিক পরিমান ইনকাম করতে পারবেন।

ব্লগার কে?

যে ব্যক্তি একটি ব্লগ সাইট তৈরী করে ব্লগে নতুন পোস্ট প্রকাশ করে নতুন তথ্য সরবরাহ করতে থাকেন বা যিনি সেই ব্লগের মালিক তাকে বলা হয় ব্লগার।

উপসংহার :

বন্ধুরা, এই পোস্টে আমরা বলেছি ব্লগিং কি? ব্লগ কি? ব্লগিং এর ধরন, আর ব্লগিং কিভাবে করবেন? এই সমস্ত বিষয়গুলির উপরে। আশা করি এটি আপনার ভালো লেগেছে। যদি ভালো লাগে তাহলে এটি বেশি করে শেয়ার করে দিন। আর আপনি যদি কোন সমস্যার সম্মুখীন হন বা কোনো প্রশ্ন থাকে তবে আপনি সেটি কমেন্ট বক্সে জানিয়ে আমাদের জিজ্ঞাসা করতে পারেন, আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনাকে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব। আর আপনার যদি নতুন নতুন ব্লগিং টিপসঅনলাইন ইনকাম এর বিষয়ে জানতে আগ্রহী হন তাহলে আমাদের ব্লগটি সাবিস্ক্রিব করে রাখুন সাথে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলটি যোগদান করুন।

আরো পোস্ট পড়ুন :-