ওয়েব হোস্টিং কি? হোস্টিং কাকে বলে? হোস্টিং কত প্রকার ও প্রয়োজন

ওয়েব হোস্টিং কি? হোস্টিং কাকে বলে? হোস্টিং কত প্রকার ও প্রয়োজন

আপনি কি ওয়েব হোস্টিং কি? হোস্টিং কাকে বলে ওই hosting কত প্রকার ও হোস্টিং এর প্রয়োজন বা কি কাজে লাগে এই সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই নিবন্ধনটি সম্পূর্ণ পড়ুন। এই নিবন্ধনের মাধ্যমে আমি আপনার সাথে শেয়ার করেছি ওয়েব হোস্টিং কি এবং হোস্টিং এর ব্যবহারের সম্পর্কে সমস্ত ধারণা। যেগুলি পড়ার পরে আপনি খুব সহজেই হোস্টিং সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা নিতে পারবেন।

কারণ অনেকে হোস্ট বা হোস্টিং সম্পর্কে শুনেছে কিন্তু তারা সঠিক জানে না, যে ওই হোস্টিং কি এবং কি কাজে লাগে এবং ওই হোস্টিং কোথা থেকে পাওয়া যায় এইসব বিষয়ে। তাই আপনিও যদি তাদের মধ্য থেকে একজন হয়ে থাকেন তাহলে নিবন্ধনটি কোথাও বাদ না দিয়ে মনোযোগ সহকারে একবার পড়ে জেনে নিন ওই hosting কি এবং কাকে বলে এবং কত প্রকার তাই চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক এই সমস্ত বিষয়গুলি।

কারণ আপনি যদি আপনার নিজস্ব কোন ব্লগ ওয়েবসাইট বা ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট বানাতে চাইলে তার জন্য হোস্টিং এর প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই আগের থেকেই হোস্টিং সম্পর্কে জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি বলে আমি মনে করি।

ওয়েব হোস্টিং কি?

ওয়েব হোস্টিং হলো একটি অনলাইন সার্ভার। যেই সার্ভারে মাধ্যমে আপনি ওয়ার্ডপ্রেস, জুমলা, কিংবা এইচটিএমএল এর মত যে কোন ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন। এবং সেই ওয়েব সাইটটি তৈরি করার জন্য বা ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের অ্যাক্টিভিটি, বা কনটেন্ট আপলোড দেওয়ার জন্য যে বিশেষ জায়গার প্রয়োজন হয় থেকে সেটা হলো ওয়েব হোস্টিং

কারণ এই ওয়েব হোস্টিং এর মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইটকে অনলাইনে লাইভ করতে পারবেন এবং আপনার সমস্ত বিষয়বস্তুকে আপনি এই ওয়েব হোস্টিং এর মধ্যে জমা রাখতে পারবেন।

এটি অনেকটা ভাড়া দিয়ে দোকান নেওয়ার মতো। যেমন; আপনি কোথাও একটি দোকান ভাড়া নিয়ে সেই দোকানকে দেখিয়ে যেকোন ধরনের পণ্য গুলি বিক্রয় করে থাকেন এবং সেই দোকানকে একটি ঠিকানা হিসেবে বা পণ্যগুলো সুরক্ষিত রাখার জন্য দোকানটাকে ঝাঁপ দিয়ে বন্ধ করে রাখেন ঠিক এই ওয়েব হোস্টিংও একইভাবে কাজ করে থাকে।

হ্যাঁ, এই ওয়েব হোস্টিং যেকোন ওয়েবসাইটের দর্শক নিয়ন্ত্রণ, ছবি বা কনটেন্ট আপলোড দেওয়া ডাটা, ব্যবহারকারীর ডাটা এবং সিকিউরিটি ও ওয়েবসাইট সম্পর্কে সমস্ত কাজে সাহায্য করে এবং ওয়েবসাইটকে সুরক্ষিত রাখে।

তবে এই অনলাইনের ক্ষেত্রে আপনার দোকানের নামটি হবে “ডোমিন নাম“. তবে এই ডোমিন নামটি খুব সস্তায় পাওয়া যায় আপনি চাইলে এখানে ক্লিক করে এই নিবন্ধনটি পড়ে জেনে নিতে পারেন ডোমিন কি এবং কোথা থেকে পাওয়া যায়। এই ডোমিন নামটি ব্যবহার শুধুমাত্র আপনার ওয়েবসাইটটিকে অ্যাক্সেস করার জন্য। তবে ওয়েবসাইটে সমস্ত ধরনের ডাটা স্টোর বা জমা হয় এই ওয়েব হোস্টিং বা সার্ভার এর মধ্যে, একে বলা হয় ওয়েব হোস্টিং।

হোস্টিং কত প্রকার

হোস্টিং সাধারণত ৬ প্রকার। যেমন; শেয়ার্ড ওয়েব হোস্টিং, ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং, ভিপিএস হোস্টিং, ক্লাউড হোস্টিং, রিসেলার হোস্টিং, এবং ডেডিকেটেড হোস্টিং, ও ইমেইল হোস্টিং।

০১. শেয়ার্ড ওয়েব হোস্টিং :

এটি হলো একটি ভাগ করা হোস্টিং যে হোস্টিংকে ভাগ করে ভিন্ন বা আলাদা আলাদা ইউজারের সাথে শেয়ার করে বিক্রয় করা হয়। যেখানে একটি হোস্টিং এর উপরে একাধিক ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করার অনুমতি দেওয়া হয়। এবং সেই সমস্ত ওয়েবসাইট বা এপ্লিকেশন গুলির সমস্ত ডাটা ও আপলোডকৃত কন্টেনগুলো ওই হোস্টিং এর মধ্য স্টোর করে রাখা হয় একে আমরা শেয়ার হোস্টিং বলি।

যেমন; উদাহরণস্বরূপ আপনি বা আপনার বন্ধুবান্ধব মিলে কোথাও একটা বাড়ি ভাড়া নিয়ে সেই বাড়ির প্রতি মাসের ভাড়াটি সবাই মিলে ভাগ করে দেওয়ার মত, এবং সেই বাড়িতে নতুন করে কেউ ভাড়াতে এলে সেই ভাড়াকে একই সমান ভাগে ভাগ করে নেওয়ার মতো। সাথে কোথাও একটি রুম ভাড়া নিলে সেই একটি রুমে চার থেকে পাঁচ জনের বেশি থাকার অনুমতি দেন না, ঠিক এরকমই একটি ব্যাপার।

০২. Managed ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং :

এই হোস্টিংটি সাধারণত যেকোনো কোম্পানি বা বড় প্রতিষ্ঠান এর জন্য যেকোনো ধরনের ওয়েবসাইট তৈরীতে ব্যবহার করা হয় এবং এটি নিজে থেকে ম্যানেজ করা সম্ভব তাই একে ম্যানেজ ওয়েব হোস্টিং বলা হয়। যেমন; ধরুন আমার বা আপনার মত ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহারকারী গুলি এই Managed ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিংটি ব্যবহার করে থাকেন।

এই ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিংটি শুধুমাত্র ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহারকারীদের জন্য তৈরি করেছেন। যার ফলে আপনি এটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি করে সেটিকে ভালোভাবে অপটিমাইজ বা সেটআপ করাতে পারে থাকি বা, তাদের নিজস্ব ম্যানেজমেন্ট টুল কে ব্যবহার করে এই হোস্টিংকে নিজে ম্যানেজ করা যাই তাই তাকে বলা হয় মেনেজ ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং।

উদাহরণ, যেমন; ধরুন আপনি একটি নিজস্ব দোকান করেছেন এবং সেই দোকানটি নিজেই ম্যানেজ করছেন বা চালাচ্ছেন এবং সেই দোকানে কি কি অসুবিধা আছে, কাস্টমারের কোন অসুবিধা হচ্ছে কিনা এবং সেই অসুবিধা গুলোকে নিজে ঠিক করা বা নিজেই পুরো দোকানটি নিজে থেকে সামলাচ্ছেন ঠিক এরকমই একটি জিনিস। এই ম্যানেজ ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং টি।

০৩. VPS ভিপিএস হোস্টিং :

ভিপিএস হোস্টিং হল একটি “ভার্চুয়াল প্রাইভেট সার্ভার” যেখানে একটি সার্ভার সংক্ষেপে অন্য সার্ভারের সাথে সংযোগ করা হয়। তবে এই ভিপিএস সার্ভারটি প্রতিটি ব্যবহারকারীর জন্য একটি অত্যন্ত মৌলিক সার্ভার হিসেবে ব্যবহার করার ব্যবস্থা দেয়। প্রতিটি ভিপিএস হোস্টিং ব্যবহারকারীদের একটি নির্দিষ্ট বা আলাদা সুরক্ষিত সার্ভার প্রদান করে।

ভিপিএস হোস্টিং ব্যবহারকারীর জন্য তারা আপনাকে নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম যেমন “রেম, ডিক্স স্পেস, প্রসেসের” এবং অন্যান্য সার্ভারের সম্পূর্ণ নির্ধারণ্যতা করে, এবং এটি একটি নির্দিষ্ট ব্যবহারকারীর জন্য ওয়েবসাইটের প্রয়োজনীয়তা হিসেবে হোস্টিং সেবা প্রদান করেন। এবং এই VPS সার্ভারকে আপনি আপনার ওয়েবসাইট বা অনলাইন প্রজেক্টের প্রয়োজন অনুসারে স্কেল বা ডাউনগ্রেট করতে পারবেন।

এই ভিপিএস হোস্টিং টি অনেক টি ফ্ল্যাটে অনেক গুলো ফ্লোর এর মধ্যে একটি ফ্লোর কে নিজের জন্য ক্রয় করে নিজের হিসাবে ব্যাবহার করার মতো।

০৪. ক্লাউড হোস্টিং :

যখন কোন হোস্টিংকে আলাদা আলাদা সার্ভার থেকে নির্দিষ্ট ডোমিনে এক্সেস করা হয় তাকে বলে ক্লাউড হোস্টিং। আর এই ক্লাউড হোস্টিং এর সার্ভারটি বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন স্থানে আলাদা আলাদা সার্ভার হিসেবে রাখা হয়। মানে যখন কোন দর্শক যেকোন দেশ থেকে ওই ক্লাউড হোস্টিংয়ে হোস্ট করা ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে চান তখন সেই ডমিনটি সেই দেশের সার্ভারের সাথে কানেক্ট হয়ে যায় ফলে সহজেই সেই দর্শকটি বা অন্য কোন দর্শক যেকোন দেশ থেকেই সেই ক্লাউড হোস্টিং এ হোস্ট করা ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশ করতে পারে।

যেমন; আমার এই ব্লগ ওয়েবসাইটটিতে বাংলাদেশ ও ইন্ডিয়া থেকে বেশি পরিমাণে দর্শক ভিজিট করে সে ক্ষেত্রে আমার এই ওয়েবসাইটটি ক্লাউড হোস্টিংয়ের ‘ইন্ডিয়া, মুম্বাই‘ এর সার্ভারে স্থানান্তর বা হোস্ট করা আছে। যার ফলে আমার এই ওয়েবসাইটটি যেকোনো দেশ থেকে যেকোনো ধরনের দর্শক প্রবেশ করতে চাইলে আমার ওয়েবসাইটটি সেই দেশে সার্ভার এর সাথে কানেক্ট হয়ে যাবে এবং সেই দর্শকের কাছে আমার ওয়েবসাইটটি প্রদর্শিত হবে। এছাড়া আমার ওয়েবসাইটটি ডিলেট হয়ে গেল আমি আমার এই বর্তমান লাইভ ওয়েবসাইটের সমস্ত ডাটাগুলি ফেরত পাওয়া যাবে।

০৫. ডেডিকেটেড হোস্টিং :

এটি একটি বিশাল বড় সার্ভার। যেটি বিশাল বড় বড় ওয়েবসাইট বা প্রজেক্ট বানানোর কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে, যেমন যদি একটি পুরো সিপিইউকে হোস্টিংরূপে ব্যবহার করা হয় তাকে ডেডিকেটেড হোস্টিং বলে। যেমন আমরা জানি নির্দিষ্ট সিপিইউ বা সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট এর সমস্ত গুলো একসাথে নিয়ে সেই গুলোকে ব্যবহার করে সেই ওয়েবসাইটের মালিক পুরো সি-পি-ইউ টিকে হোস্টিংরূপে ব্যবহার করে থাকে তাকে ডেডিকেটেড হোস্টিং বলা হয়।

উদাহরণ; যেমন ধরুন আপনি একটি বাড়ি বা ফ্লাট কিনেছেন সেহেতু বাড়িটা পুরোটাই আপনার একার এবং আপনি একাই বাড়িটা ব্যবহার করতে পারবেন এবং সেখানে আপনার বন্ধু পরিবার ও আত্মীয় কেউ থাকতে পারবে না। এই বাড়িটা শুধুমাত্র আপনার জন্য এবং সেই বাড়িতে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় সমস্ত মালপত্র জমা রাখতে পারবেন। এই ডেডিকেটেড হোস্টিং টা ঠিক এরকমই।

০৬. রিসেলার হোস্টিং :

এটি যখন কোন একটি কোম্পানি থেকে পুরো সিপিইউ হোস্টিং প্যাকেজটিকে কিনে আলাদা আলাদা ইউজার বা ব্যাবহারকারির সাথে ভাগ করে বিক্রয় করে নেওয়া বা মাসিক হিসেবে ভাড়া দেওয়াকে বলা হয় রিসেলার হোস্টিং। এটি সাধারণত কোনো একটি হোস্টিংকে কিনে সেই হোস্টিংকে পুনরায় বিক্রয় করার কে বলে রিসেলার hosting.

যেমন; ধরুন আপনি কোথা থেকেও একটি পুরো সিপিইউ সহ একটি ডেডিকেটেড হোস্টিং কিনলেন এবং সেই হোস্টিংকে ভাগ করে “শেয়ার, VPS, Cloud” বা আলাদা আলাদা নাম দিয়ে সেগুলোর আলাদা আলাদা দাম নির্ধারণ করে বিভিন্ন ইউজার বা ব্যবহারকারীদের সাথে সেটিকে ভাড়া হিসেবে দিয়ে সেই ব্যবহারকারীকে ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া কে বলা হয় রিসেলার হোস্টিং। এই হোস্টিংকে ক্রয় করে আপনি খুব সহজেই আপনার নিজের একটি কোম্পানি খুলতে পারেন অনলাইন জগতে বা ব্যবসার প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে পারেন।

০৭. ইমেইল হোস্টিং :

এই হোস্টিং টি ব্যবহার করা হয় সাধারণত আপনার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি ব্যবসায়িক ইমেইল তৈরি করতে এবং সেই ইমেইলের সমস্ত ডাটা গুলো সংরক্ষিত বা স্টোর করতে এই ইমেইল হোস্টিংটি ব্যবহার হয়ে থাকে।

এটি সাধারণত বিভিন্ন ধরনের Shared, ওয়ার্ডপ্রেস, এবং ক্লাউড হোস্টিং এর সাথে বিভিন্ন কোম্পানি ফ্রি তে অফার করে থাকে। কিন্তু কিছু কিছু ক্লাউড ভিপিএস এবং ডেডিকেটেড সার্ভারে এই ইমেইল হোস্টিংটি ফ্রিতে প্রদান করেন না। ফলে এটাকে আমাদেরকে আলাদাভাবে ক্রয় করতে হয়। যেমন আপনি যদি Cloudways থেকে যেকোনো ধরনের ক্লাউড হোস্টিং ক্রয় করে থাকেন তাহলে আপনি এই ইমেইল পাবেন না ফলে আপনাকে আপনার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা ব্যবসায়িক ইমেইল তৈরি করতে এই email হোস্টিংয়ের প্রয়োজন হয়ে থাকে।

উদাহরণস্বরূপ; আমরা যেমন- আমাদের মোবাইলে গুগল জিমেইল ব্যবহার করে থাকি এবং সেই জিমেইলে উপলব্ধ সমস্ত ইমেইল এবং ডাটা গুলি গুগল এর hosting বা স্টোরেজে জমা হয়ে থাকে। কিন্তু এক্ষেত্রে আপনি যদি নিজের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য এই ইমেইল হোস্টিংটি ক্রয় করে থাকেন এবং সেখানে ইমেইল তৈরি করেন তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনার সমস্ত ডাটা আপনার কাছেই সুরক্ষিত থাকবে আপনার ইমেইল হোস্টিং এর মধ্যে।

হোস্টিং কেন প্রয়োজন

যেকোনো ধরনের ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে হোস্টিং এর প্রয়োজন হয়। কারণ এটি একটি ইন্টারনেট সার্ভার যেই সার্ভার এর মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের স্থায়ী অবস্থান এবং ওয়েবসাইটের দর্শকদের সমর্থন এবং আপনার ওয়েবসাইটে আপলোডকৃত সমস্ত ডাটা, দর্শক নিয়ন্ত্রণ ও আরো বিভিন্ন কাজে ওয়েব হোস্টিংয়ের প্রয়োজন থাকে। এক কথায় আপনি এই ওয়েব হোস্টিং ছাড়া অনলাইন জগতে কোন ধরনের ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশন চালু বা তৈরি করতে পারবেন না তাই যে কোন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে ওয়েব হোস্টিংয়ের প্রয়োজন।

হোস্টিং সার্ভার বলতে কি বুঝি

হোস্টিং সার্ভার হলো একটি শক্তিশালী কোম্পিউটার সিস্টেম যা বিশ্ব জুড়ে ইন্টারনেটে আপনার ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশনকে সঠিক ভাবে ডাটা সংরক্ষণ করে ও দর্শকের কাছে প্রদর্শন করতে ব্যবহার হয়। এই হোস্টিং সার্ভারকে স্থায়ী ভাবে রাখা হয় এবং নেটওয়ার্ক সংযোগ এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশনের ফাইল ও তথ্য প্রদান এর কাজে ব্যাবহার হয়।

হোস্টিং কিভাবে কাজ করে

হোস্টিং একটি জায়গা বা মাঠের মতো কাজ করে। যেমন আপনি বাস্তব যুগে একটি মাঠে মধ্যে একটি বাড়ি কিংবা দোকান তৈরি করে তার মধ্যে থাকতে পারেন এবং আপনার প্রয়জনীয় জিনিস গুলি স্টোর করেন ঠিক একই ভাবে হোস্টিং এর মাধ্যমে। যেখানে, আপনি অনলাইনের মাধ্যমে আপনার একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বা দোকান তৈরি করতে পারবেন বা একটি ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন আপনার কনটেন্ট কে স্টোরে করে সেগুলি দর্শকদের দেখবে সেখান থেকে ইনকাম করতে পারবেন।

এই হোস্টিং এর মাধ্যমে আপনি একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে যখন সেটিকে ডোমিন নামের সাথে যুক্ত করে দেন তখন সেটি অনলাইনে প্রদর্শিত হওয়া শুরু হয়ে যায় এবং সেখান থেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন দর্শক আপনার ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশনটিতে প্রবেশ করে আপনার পণ্য পরিষেবা গুলি ক্রয় করে থাকেন যেমন Amazon, Flipkart বা TataCilq ঠিক আপনিও একইভাবে হোস্টিংকে কাজে লাগিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করে আপনি অনলাইন বিক্রয় করতে পারবেন।

কিন্তু এই ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশন তৈরীর জন্য শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যত কাজ হয়ে থাকে বা যত কন্টেন আপলোড হয়ে থাকে বা ওয়েবসাইটকে সুরক্ষিত রাখার কথা ভেবে থাকে তাহলে সেই সব কাজগুলোই এই ওয়েব হোস্টিং করে থাকে। ওই hosting সাধারণত একটি ইন্টারনেট সংযোগ যেখানে আপনাকে শুধুমাত্র একটি আইপি অ্যাড্রেস দেওয়া হয় এবং সেই আইপি এড্রেসটি সরাসরি ইন্টারনেটের মাধ্যমে খুব সহজেই বিশ্বজুড়ে আপনার প্রতিষ্ঠান বা আপনার পণ্যকে পরিচিত করে তোলার কাজে সাহায্য করে।

হোস্টিং কোনো প্রয়জন বুঝিয়ে লেখ

হোস্টিং একটি ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশন তৈরিতে প্রয়োজন। কারণ এটি আপনার ওয়েব প্রজেক্টকে তৈরি এবং ব্যবহারকারীদের সেবা প্রদান করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপনার ওয়েবসাইটের সংরক্ষণ, এক্সেস দিতে, ওয়েবসাইট ডেটা স্টোরেজ, ওয়েবসাইট সুরক্ষা এবং দর্শককে বৃদ্ধি করতে সুবিধা সরবরাহ করে। এই সমস্ত কাজগুলি সম্পাদন করতে, একটি হোস্টিং সার্ভারের প্রয়োজন হয়। হোস্টিং সার্ভার একটি সম্পূর্ণ কনফিগার করা কম্পিউটার সিস্টেম দ্বারা যা আপনার ওয়েবসাইট এর ফাইল এবং ডেটাকে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করে এবং সেই ডেটা ইন্টারনেটে উপলব্ধ করে। যার মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে আপাদনা এবং ব্যবহারকারীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি করার জন্য সাহায্য করে। এছাড়া, বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী আপনার ওয়েব প্রজেক্ট সুরক্ষা, এবং সামর্থ্যকরণে সাহায্য করে।

হোস্টিং ওয়েবসাইট কি

হোস্টিং ওয়েবসাইট হলো একটি হোস্টিং কোম্পানি। যেখানে থেকে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় যেকোনো ধরনের হোস্টিং বিক্রয় করা হয় তাকে বলা হয় হোস্টিং ওয়েবসাইট। এবং আপনি সেখান থেকে আপনার প্রয়োজনীয় হোস্টিংটি ক্রয় করে ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে পারেন যেমন; ব্লুহোস্ট বা হোস্টিংগার হোস্টিং ওয়েবসাইট থেকে।

ওয়েবসাইট হোস্টিং কাকে বলে

যে হোস্টিংকে ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে তাকে বলা হয় ওয়েবসাইট হোস্টিং। যেমন; শেড হোস্টিং, ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং, ভিপিএস হোস্টিং, ক্লাউড হোস্টিং, এবং ডেডিকেটেড হোস্টিং এগুলোকে বলা হয় ওয়েবসাইট হোস্টিং। এছাড়া আরও বিভিন্ন ধরনের হোস্টিং উপলব্ধ আছে সেগুলোকে অন্য হোস্টিং নামে বলা হয়। যেমন; ইমেল হোস্টিং, মিনিক্রাফট গেমিং হোস্টিং এছাড়া আরও অন্যান্য।

হোস্টিং কিনতে চাই

হোস্টিং কিনতে আপনাকে সবার প্রথমে হোস্টিং বিক্রয় করা কোম্পানির গুলোর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। যেমন আমার পছন্দের হোস্টিং কোম্পানির মধ্যে হল হোস্টিংগার, ব্লুহোস্ট, এবং সস্তার মধ্যে “ডিয়ারওয়েব হোস্ট“। আপনি এখান থেকে খুব সহজে হোস্টিং ক্রয় করতে পারেন কিন্তু হোস্টিং ক্রয় করার আগে আপনাকে নির্বাচন করতে হবে আপনি কোন ধরনের হোস্টিংকে কিনতে চান সেটি তারপর হোস্টিং ক্রয় করুন।

কিভাবে হোস্টিং কিনতে হয়

হোস্টিং কেনার জন্য সবার প্রথমে আপনাকে একটি সেরা ও নির্ভরযোগ্য হোস্টিং প্রদানকারীর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। যেমন হোস্টিংযার বা ব্লুহোস্ট এর মধ্যে যেকোনো একটি হোস্টিং কোম্পানির ওয়েব সাইটে ভিজিট করুন। তারপর সেখান থেকে আপনার পছন্দের পোস্টিং প্লানটি নির্বাচন করুন। তারপরে আপনি সেই হোস্টিং প্লানটি কত মাসের জন্য ক্রয় করতে চান সেটি নির্বাচন করুন। তারপরে আপনাকে হোস্টিং এর সাথে যে ফ্রি ডোমিন অফারটি দিচ্ছে সেখান থেকে একটি ফ্রী ডোমিন রেজিস্ট্রেশন করুন তারপরে আপনি আর সেই হোস্টিং প্ল্যাটফর্মটিতে আপনার জিমেইল দিয়ে বা আপনার নাম ও সমস্ত তথ্য দিয়ে একটি নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন। এবং সেই হোস্টিংটি ক্রয় করার জন্য আপনার পছন্দের পেমেন্ট অপশনটি নির্বাচন করুন। তারপর পেমেন্টটি সম্পূর্ণ করে আপনার অর্ডারটি সম্পূর্ণ করে নিন। আপনার পেমেন্ট সম্পন্ন হয়ে গেলে আপনি আপনার হোস্টিং টি ব্যবহার করে অ্যাপ্লিকেশন বা ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন। হোস্টিং কেনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এই নিবন্ধন টি পড়ুন।

হোস্টিং ক্রয় করতে কত টাকা লাগে

হোস্টিং ক্রয় করতে সাধারণত ৩৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা মত লাগে এক বছরের জন্য। আর আপনি যদি মাসিক হিসেবে নেন তাহলে আপনাকে হয়তো ৪০০ টাকা প্রতি মাস হিসেবে পেয়ে যাবেন। হোস্টিংজার থেকে এবং সাথে একটি ফ্রি ডোমিন নামও পেয়ে যাবেন এক বছরের পরিকল্পনা টিতে।

হোস্টিং বলতে কি বুঝায়

হোস্টিং বলতে বুঝাই অনলাইন সার্ভারকে যে সার্ভার এর মাধ্যমে আপনি বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট সংযোগ এর মাধ্যমে আপনার কনটেন্ট বা পণ্যকে ওয়েবসাইট বা এপ্লিকেশন তৈরী করে সেটিকে দর্শকদের কাছে তুলে ধরতে সাহায্যের কাজে যেটি ব্যাবহার হয়।

সিপ্যানেল হোস্টিং

এখনকার সময় মার্কেটে উপলব্ধ সমস্ত হোস্টিং কোম্পানিগুলো তারা সি-প্যানেল হোস্টিং প্রদান করে থাকেন। কারন এই সি-প্যানেল হোস্টিং ব্যবহার করা নতুন দর্শক বা ব্যবহারকারীদের জন্য খুবই সহজ। এবং এই cPanel হোস্টিং কে ব্যবহার করে আপনি খুবই সহজে ওয়েবসাইটকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিন্তু এটি একটি আলাদা অ্যাপ্লিকেশন বা সফটওয়্যার বলতে পারেন যেটা হোস্টিং সার্ভার এর সাথে কানেক্ট করে ব্যবহারকারীদের ওয়ার্ডপ্রেস বা shared হোস্টিং এর মত হোস্টিং প্লান গুলিকে ব্যবহার করা সহজ করে তোলে। এক কথায় যে হোস্টিং এ সি-প্যানেল ইনস্টল থাকে তাকে সি-প্যানেল হোস্টিং বলা হয়।

জানুন : ব্লগার সেটিং কিভাবে করবো

Website তৈরিতে hosting কেন ব্যবহার করা হয়

Website তৈরিতে hosting কেন ব্যবহার করা হয়। ওয়েবসাইট তৈরিতে হোস্টিং ব্যবহার করা হয় সেই ওয়েবসাইটে আপলোডকৃত বিষয়বস্তু গুলোকে সুরক্ষিত রাখার জন্য, ওয়েবসাইট কন্ট্রোল করতে, এবং সেই ওয়েবসাইট টিকে দর্শকদের কাছে পদর্শিত করার জন্য এবং ওয়েবসাইটটিকে SSL বা সাইবার সিকিউরিটি লক সহ বিষয়বস্তু গুলোকে সুরক্ষিত রাখার জন্য।

হোস্ট কি বা কাকে বলে

এটি ওয়েবসাইট যখন কোন হোস্টিং সার্ভারে ইন্সটল করা হয় তখন তাকে হোস্ট বলে, এবং সেই ওয়েবসাইটটি যখন ইন্টারনেটের পয়েন্টিং এর মাধ্যমে ডমিনের সংযোগে অনলাইন লাইভ হয়ে যায় এবং নেটওয়ার্ক দ্বারা কানেক্ট হয়ে যায় এবং সেটি বিভিন্ন দর্শক বা ভিজিটর গুলি তাদের কাছে উপলব্ধ মোবাইল ট্যাবলেট বা অন্য কোন ডিভাইস দিয়ে ব্যবহার করতে পারে তখন তাকে বলা হয় হোস্টেড।

এটি সাধারণত ডোমেন এবং হোস্টিংয়ের মধ্য বেশিরভাগ সময় হয়ে থাকে। যেমন; যেকোন ডোমিনকে হোস্টিংয়ের সাথে কানেক্ট করতে। যে নেম সার্ভার দ্বারা পয়েন্টিং করা হয় একেই বলা হয় হোস্ট। তবে অনেক ক্ষেত্রে আমরা এই নেম সার্ভারকে বিভিন্ন ধরনের প্লাটফর্ম যেমন; ক্লাউডফেয়ার, ezoic, ও আরো অন্যান্য তৃতীয় পক্ষের প্ল্যাটফর্ম গুলি ব্যবহার করে ডমিন – হোস্টিংকে কানেক্ট করে থাকি কিংবা ওয়েবসাইটে SSL install করে থাকি তখন তাকে বলা হয় হোস্ট করা।

সেরা হোস্টিং সার্ভিস

আপনি যদি সেরা হোস্টিং সার্ভিস এর সন্ধান করে থাকেন তাহলে আমি আপনাকে সুপারিশ করব হোস্টিংজার, ব্লুহোস্ট কিংবা ডিয়ার ওয়েব হোস্ট এই তিনটি হোস্টিং প্ল্যাটফর্ম থেকে হোস্টিং ক্রয় করার জন্য। কারণ এই তিনটি হোস্টিং খুব জনপ্রিয় এবং নির্ভরযোগ্য যার মধ্যে “ডিয়ার ওয়েব হোস্ট” হল সবথেকে সস্তা ওয়েব হোস্টিং প্রোভাইডার। আর ব্লুহোস্ট এবং হোস্টিংযার হল সব থেকে জনপ্রিয় এবং নির্ভরযোগ্য হোস্টিং প্রোভাইডার। তাই আপনি চাইলে একটি ফ্রি ডোমিন এর সাথে আপনার ওয়েবসাইট শুরু করতে Bluehost বা Hostinger থেকে যেকোনো একটি হোস্টিং পরিকল্পনা ক্রয় করতে পারেন আপনার ওয়েবসাইট বা প্রোজেক্ট এর প্রয়জন অনুযয়ী।

আর আপনি যদি নতুন হয়ে থাকেন তাহলে আপনি সস্তা মূল্যে হোস্টিং কিনে ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টল করে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরি চেষ্টা করতে পারেন। এবং সেটি success হয়ে গেলে আপনি আপনার হোস্টিং প্ল্যানটি আপগ্রেড করতে পারেন বা অন্য কোনো হোস্টিং কোম্পানিতে হোস্টিং ক্রয় করে মাইগ্রেট বা স্নান্তর করতে পারে। এছাড়া আপনি যদি সেরা ওয়েবসাইটের তালিকাটি দেখতে চান তাহলে এই নিবন্ধন টি পড়ুন।

হোস্টিং এর দাম বা মূল্য

হোস্টিংমাসিক মূল্য
শেয়ার্ড হোস্টিং –২০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত।
ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং –১৩৫ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত।
ভিপিএস হোস্টিং –৬০০ টাকা থেকে শুরু।
ক্লাউড হোস্টিং –৭০০ টাকা থেকে শুরু।
রিসেলার হোস্টিং –৬০০ টাকা থেকে শুরু।
ডেডিকেটেড হোস্টিং –৪৫০০ টাকা থেকে শুরু।

উপসংহার :

আমি আশা করি আপনাকে ওয়েব হোস্টিং কি ও কাকে বলে, ওয়েব hosting কত প্রকার ও প্রয়োজন কি এই সমস্ত বিষয়ে আপনাকে সম্পূর্ণ ধারণা দিতে পেরেছি যদি পেরে থাকি তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানান আর এই নিবন্ধনটি ভালো লাগলে আপনার বন্ধু ও পরিবারের সাথে বেশি করে শেয়ার করে দিন। আর এরকম ধরনের আরো নতুন নতুন টিপস ও ওয়ার্ডপ্রেস সম্বন্ধ তথ্য পেতে আমাদের ব্লগটি সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। সাথে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলটির সাথে যুক্ত হন। আর আপনার যদি এই হোস্টিং সম্বন্ধে কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানান। ধন্যবাদ।

আরো পোস্ট পড়ুন :-