স্মার্ট ওয়াচ আমরা কেন ব্যবহার করি এর উপকারিতা কি (Smartwatch)

স্মার্ট ওয়াচ আমরা কেন ব্যবহার করি এর উপকারিতা কি (Smartwatch)

অনেক সময় আমরা দেখে থাকি এখনকার টেকনোলজি প্রযুক্তির ছেলে ও মেয়েরা, স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করে থাকেন বা তাদের হাতে পরে থাকেন। এবং সেটা দেখে আমরা অনেকে চমকে যাই। কারণ তারা বিভিন্ন ধরনের স্মার্টওয়াচ (smartwatch) ব্যবহার করে এবং সেগুলোতে টাচ করে বিভিন্ন ধরনের একটিভিটি করে যেটাকে অনেকেই আমরা ঘড়ি ফোন বলে মনে করি।

কিন্তু আমাদের অজানা থাকে যে এই স্মার্টওয়াচ ব্যবহার করার আসলে মূল উদ্দেশ্য কি। তাই আপনি যদি একজন স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহারকারী হন বা স্মার্টওয়াচ ব্যবহার করার জন্য ভাবেন। তাহলে এই নিবন্ধনটি সম্পূর্ণ পড়ুন। কারণ আমি আমার স্মার্ট ওয়াচ এক বছর ব্যবহার করার পরে তার উপকারিতা এবং অপকারিতা বা আমার অভিজ্ঞতাটি আপনার সাথে শেয়ার করেছি। যেটা সম্পূর্ণ পড়ার পরে আপনি বুঝতে পারবেন যে আসলে স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করার উপকারিতা কি।

তাই চলুন দেরি না করে জেনে নেই সেই সমস্ত বিষয়;

স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করার উপকারিতা

স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করার বিভিন্ন উপকারিতা আছে। যেমন; আপনার হাতে একটি ঘড়ি থাকবে যেটাতে আপনি সময় দেখতে পারবেন, আপনার মোবাইলের mp3 মিউজিক কে কন্ট্রোল করতে পারবেন, আপনি কত পা হাঁটছেন, আপনার হার্ট রেট কত, এবং আপনার শরীরের স্ট্রেস কত, এবং আপনার যদি ডায়াবেটিস বা অন্য কোন অসুবিধা থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি পানি বা জল খাবার সময়টাকে নির্ধারণ করে রাখতে পারেন। আপনাকে সে টাইম মত এলার্ম দিয়ে আপনাকে সাড়া দিয়ে দেবে।

এছাড়া আপনি বিভিন্ন ধরনের খেলা যেমন; লাফাণী, ফুটবল, ক্রিকেট, বাস্কেটবল, এবং সাইকেল চালানো, মাছ ধরা, এরকম বিভিন্ন ধরনের ১১০ টির বেশি স্পট মোড থাকে। যেগুলো ব্যবহার করে আপনার দৈনন্দিন জীবনের কাজকে সহজ করতে পারবেন।

এছাড়া স্মার্টওয়াচের সাহায্যে আপনি আপনার প্রতিদিনের রুটিন নির্ধারণ করতে পারবেন। যেমন; আপনি আপনার শরীর থেকে কত ক্যালরি খরচা করতে চান, কত পা হাঁটবেন, কতটা সাইকেল চালাবেন, কতক্ষণ সুইমিং করবেন, এছাড়া আরও বিভিন্ন কাজ। যেগুলো আপনি দৈনন্দিন জীবনে সহজ করতে পারবেন, এবং তার সমস্ত রিপোর্টগুলো আপনি আপনার মোবাইলের মধ্যে ইন্সটল করা ওই স্মার্ট ওয়াচ কোম্পানির অ্যাপের মধ্যে পেয়ে যাবেন।

এবং এখনকার স্মার্ট ওয়াচ গুলি হল একটি ওয়াটার প্রুফ ঘড়ি, যেটাকে আপনি পানির মধ্যে ও ঘুমের সময় বিছানাতে শোয়ার সময় এবং আপনার সময় মত সব সময় আপনি ব্যবহার করতে পারবেন।

আমি নিজে সাধারণত স্মার্টওয়াচ ব্যবহার করি এবং আমার ব্যবহার করার মূল উদ্দেশ্য হল আমি অন্যদের থেকে একটু আপডেট রাখা, প্রতিদিন কতটা সাইকেল চালাই, আমার শরীরে কত ক্যালোরি খচ্চা হয়, আমি কতটা রাস্তা অতিক্রম করি, এই সমস্ত বিষয়। এবং রাস্তায় চলার সময় mp3 মিউজিক কে কন্ট্রোল করার জন্য ও ফোন ধরার জন্য ব্যবহার করে থাকি। তবে অনেক সময় সামান্য মেসেজ করতেও আমি আমার স্মার্ট ওয়াচটি ব্যবহার করে থাকি।

এবার অনেকেই মনে করবেন তাহলে কি নিজের জন্য স্মার্ট ওয়াচ নেওয়া প্রয়োজনীয় না গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনি এটা ধারণা করে থাকেন তাহলে আমি বলব অবশ্যই আপনি স্মার্ট ওয়াচ নিতে পারেন। সেটা আপনি একজন শিক্ষক, ছাত্র, কিংবা একজন ব্যবসায়িক হন না কেন এক্ষেত্রে কোন ব্যাপার না। কারণ এখনকার সময় সবাই কম বেশি স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করছে। তো আপনিও এই টেকনোলজির যুগে স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করে আপনি নিজেকে একটু আপডেট করতে পারো। তবে আপনার যদি শুধুমাত্র ঘড়ির ব্যবহারের অভ্যাস থেকে এবং আপনি ঘড়ি ব্যবহার করতে চান তাহলেও আপনি smart watch ব্যবহার করে ঘড়ির ডায়াল বা ডিজাইন লাগিয়ে ব্যাবহার করতে পারেন।

তবে আপনি একটা স্মার্ট ওয়াচ কিনে রেখে দিলেও মন্দ হয় না। কারণ এটা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কাজে লাগতে পারে। আর স্মার্ট ওয়াচের দাম বেশি না। Smartwatch সাধারণত হাজার ১২০০ টাকার থেকে শুরু হয়। এবং এর থেকে উপরে আপনি যত বাজেটের কিনতে পারেন।

সাধারণত একটি ভালো স্মার্ট নিতে গেলে এবং লম্বা সময় ব্যবহার করার জন্য নিতে গেলে আপনাকে মিনিমাম ২ হাজার থেকে চার হাজার টাকার মধ্যে কিংবা ৫ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে। যে স্মার্টওয়াচ গুলো উপলব্ধ আছে সেগুলো নিতে পারেন। এবং সেই স্মার্ট ওয়াচের এর সাহায্যে আপনার দৈনন্দিন জীবনের একটি রুটিন তৈরি করতে পারেন।

তাই আপনি যদি আপনার জন্য সেরা একটি স্মার্ট ওয়াচ কিনতে চান তাহলে নিচে দেওয়া এই তিনটি স্মার্টওয়াচের মধ্যে থেকে আপনি যেকোনো একটি কিনতে পারেন। এর মধ্যে প্রথমে দেওয়া স্মার্টওয়াচটি আমি নিজে ব্যবহার করি। এছাড়া অন্য দুটো আমার বন্ধু-বান্ধব ব্যবহার করে। এবং আমি নিজেও তাদের কাছ থেকে নিয়ে ব্যবহার করে দেখেছি।

কারণ এখনকার সময় অনলাইনে যুগে অনেকেই ১০০০ বা ১২০০ টাকার মধ্যে স্মার্ট ওয়াচ কিনছে। কিন্তু সেই স্মার্টওয়াচটা কেনার পরে দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে খারাপ হয়ে যায়। হয়তো ব্যাটারি ডাউন (low) হয়ে যায়, চার্জার খারাপ হয়ে যায়, চার্জিং নেয় না, এছাড়া বিভিন্ন ধরনের অসুবিধা দেখা দেয়।

সেই কারণে আমি আপনার জন্য এই সেরা তিনটি স্মার্টওয়াচের তালিকা শেয়ার করেছি যেগুলো কিনলে আমি গ্যারান্টি দিতে পারি আপনার স্মার্ট ওয়াচ টি মিনিমাম ১.৫ থেকে ২ বছর কোন অসুবিধা দেখতে পাবেন না কারণ আমি নিজেই স্মার্ট watch ব্যবহার করছি ২.৫ বছরের উপরে। তাই আমার উপর বিশ্বাস করে এবং দর্শকদের রেটিং দেখে আপনি কিনতে পারেন।

তা চলুন দেখে নেই আমাদের স্মার্টওয়াচের তালিকা মধ্য থেকে আপনার জন্য কোনটি সেরা:

ফাস্টট্রাক রিভোল্ট FS1 প্রো

original
  • এই স্মার্ট ওয়াজটি হলো ফাস্ট ট্র্যাকের নতুন আপডেটেড এবং বাজারের সব থেকে বেশি বিক্রয় হওয়া স্মার্ট ওয়াচ। যেটিতে ১.৯৬ ইঞ্চি সুপার অ্যামোলিটি ডিসপ্লে। আছে সাথে ব্লুটুথ কলিং সাপোর্ট আছে। এছাড়া এটির মধ্যে 110 টি স্মার্ট sport মোড বা খেলার ধরন, আছে এবং দুশোর বেশি ঘড়ির ডিজাইন আছে, এবং AI ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট উপলব্ধ আছে। এছাড়া এটি টাচ স্কিন এবং এটির একবার ১০০% চার্জ দিলে ৭ দিন ব্যাটারি লাইফ চলে, সাথে এটির এক বছর ওয়ারেন্টিও আছে।
  • দাম মাত্র : ২৯৯৯ টাকা।

নয়েস আইকন ৩ স্মার্ট ওয়াচ

original imagz67w8uz9ybmk
  • এটি নয়েস কোম্পানি নতুন লঞ্চ হওয়া একটি স্মার্টওয়াচ। যেটি আমি নিজে ব্যবহার করছি। এই স্মার্টওয়াচটিতে ১.৯১ ইঞ্চি টিএফটি ডিসপ্লে আছে, সাথে ব্লুটুথ কলিং, এবং ডিসপ্লেটি মেটাল বডি, এবং এআই (AI) ভয়েস এসিস্ট্যান্ট উপলব্ধ আছে। এছাড়া এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ features দেওয়া আছে। যেটি হল আপনি এই স্মার্ট ওয়াচ টিতে আপনার ইউপিআই একাউন্টটি যুক্ত করে এখান থেকে সহজে পেমেন্ট করতে পারবে। যার ফলে আপনার ডাটা সুরক্ষিত বা প্রাইভেট থাকবে। এবং এটিতে একশোর বেশি sport mode বা খেলাধুলার টাক্স, ১৫০ এর বেশি ঘড়ির ডিজাইন এবং সাত দিন পর্যন্ত ব্যাটারি লাইফ, ও এক বছর ওয়ারেন্টি আছে।
  • দাম মাত্র : ১৯৯৯ টাকা।

বোট ওহেভ ইনফিনিটি 1.85 ইঞ্চি স্মার্ট ওয়াচ

original imaghkptrewwhzy4
  • এটি বোটর একটি খুব জনপ্রিয়তা এবং বেশি বিক্রেতা একটি স্মার্টওয়াচ। যেটির মধ্যে আপনি ফোন নম্বর ডায়াল করে কল করার সুবিধা, এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট এর মাধ্যমে কথা বলার সুবিধা, এবং দশটি কন্টাক্ট বা যোগাযোগ নাম্বারও সেভ করে রাখার সুবিধা আছে। এবং এই স্মার্ট ওয়াচ টি 1.85 ইঞ্চি এইচডি ডিসপ্লে এবং এটির মধ্যে আছে ১০০ এর বেশি sport মোড বা খেলাধুলর টাক আছে। সাথে ২০০-র বেশি ঘড়ির ডিজাইন, ৭ দিন পর্যন্ত ব্যাটারি সার্ভিস, এবং এক বছরের ওয়ারেন্টি উপলব্ধ আছে।
  • দাম মাত্র : ১৯৯৯ টাকা।

এখানে শেয়ার করা এই তিনটি স্মার্ট ওয়াচ গুলো আপনি কিনতে পারেন আপনার দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য বা নিজেকে আপডেট করার জন্য। কারণ এই স্মার্টওয়াচগুলোতে অনেক ধরনের ফিচারস বা বৈশিষ্ট্য উপলব্ধ আছে। যেগুলো ব্যবহার করে আপনি আপনার নিজের কাজকে সহজ করতে পারেন বা দৈনন্দিন দিনের একটা রুটিন করতে পারেন। এছাড়া আপনি এটা পানি বা জলের মধ্যেও কিংবা রোদ্দুরের মধ্যে যেখানে খুশি সেখানে ব্যবহার করতে পারেন। এটাতে কোন অসুবিধা নেই তাই আপনি কিনতে চাইলে উপরে দেওয়া লিংকে ক্লিক করে কিনে নিতে পারেন।

স্মার্ট ওয়াচ সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন বলি ?

  1. এই স্মার্ট ওয়াচ গুলো কি ছেলে-মেয়ে দুজনেই ব্যবহার করতে পারে?

    অবশ্যই, আপনি এই স্মার্ট ওয়াচ গুলো যে কোন ছেলে বা মেয়ে, যেকেউ ব্যবহার করতে পারে। তবে তার জন্য আপনাকে শুধু একটা কাজ করতে হবে। আপনার পছন্দের রংটি নির্বাচন করতে হবে। যেমন ছেলেদের ক্ষেত্রে কালো, নীল ও হলুদ রঙের। এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে লাল, গোলাপি, ও আকাশী রঙের স্মার্ট ওয়াচ গুলো নিতে পারেন। এটা আমার পার্সোনাল একটি টিপস।

  2. স্মার্ট ওয়াচ এ কি দেখে কেনা ভালো?

    স্মার্ট ওয়াচ কেনার জন্য অবশ্যই আপনাকে স্মার্ট ওয়াচের দামটি দেখতে হবে, রং, কোন কোম্পানির সেটা দেখতে হবে, এবং সেটি কতটা বিক্রয় হয়েছে, এবং দর্শকদের রেটিং কি আছে। এছাড়া ওই স্মার্ট ওয়াচটিতে কোন ওয়ারেন্টি আছে কিনা। এবং ওই স্মার্ট ওয়াচটিতে কতগুলো স্পর্ট মোড বা খেলার ধরন উপলব্ধ আছে। এগুলো সঠিকভাবে দেখে নিতে পারলে আপনি একটি ভাল স্মার্ট ওয়াচ পেয়ে যাবেন।

  3. এই স্মার্ট ওয়াচ গুলোতে কত ঘন্টা চার্জ থাকতে পারে?

    সাধারণত এখানে শেয়ার করা স্মার্ট ওয়াচ কোম্পানিগুলো তারা নিজে থেকে claim করে তাদের স্মার্টওয়াচের ব্যাটারি চার্জ সার্ভিস সর্বনিম্ন ১০ দিন তবে আমি আমিন নিজে এই স্মার্ট ওয়াচ গুলো ব্যবহার করি এবং ব্যবহার করার ফলে দেখি এগুলোর চার্জ সর্বনিম্ন ৭-৮ দিন থাকে কখনো কখনো বেশি ব্যবহার করলে ৬ দিন চলে। তবে ১০ দিনের বেশি চলে না এটা আমার পার্সোনাল অভিজ্ঞতা থেকে বললাম।

  4. স্মার্ট ওয়াচ কিভাবে ব্যবহার করতে হয়?

    স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করার জন্য সবার প্রথমে আপনাকে একটি স্মার্ট ওয়াচ কিনতে হবে। তারপর সেই স্মার্টওয়াচের দেওয়া কিউআর কোড কিংবা সেই কোম্পানির স্মার্ট ওয়াচ অ্যাপ্লিকেশনটি আপনার মোবাইলে ইন্সটল করতে হবে। তারপর সেই smart watch এর সাথে আপনার মোবাইলটি সংযোগ করতে হবে। তারপর আপনি স্মার্ট ওয়াচ এ দেওয়া বিভিন্ন টাস্ক গুলি টাচ করে চালু করতে পারবেন। এবং তার রিপোর্ট গুলি দেখতে আপনি আপনার মোবাইল সেই স্মার্ট ওয়াচ অ্যাপ্লিকেশনটি খুলে দেখতে পারবেন। এইভাবে স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করতে হয়।

শেষ কথা :

আমি আশা করি আপনি স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহার করার উপকারিতা, এবং কোন smartwatch-টি আপনার জন্য ভালো। এই সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিতে পেয়েছেন। যদি পেয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই এই নিবন্ধনটি আপনি আপনার বন্ধু ও পরিবারের সাথে শেয়ার করে দিন। আর এরকম ধরনের নতুন নতুনটেকনোলজি, টিপস এবং ট্রিক, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ,ও ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে তথ্য পেতে আমাদের এই তরিকুল বাঙালি ওয়েবসাইটটি বুক মার্ক করে রাখুন। সাথে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলটি তে যুক্ত হয়ে থাকুন। আর অনলাইন থেকে ইনকাম করার বিষয়ে বিষয়ে জানতে এখানে ক্লিক করুন।

আরো পোস্ট পড়ুন :-