অনলাইন থেকে মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার উপায় (অল্প কাজ করে)
এখনকার সময় একটা ভালো চাকরি পাওয়াটা খুব কষ্টের একটি ব্যাপার। এই কারণে অনেক ছেলে মেয়ে তারা বাড়ির বেকার বসে থাকে। এবং চাকরির খোঁজে খুঁজি করতে গিয়ে কোন টাকা ইনকাম করতে পারে না। তো আপনিও যদি তাদের মধ্যে একজন হয়ে থাকেন এবং টাকা ইনকাম করার কথা ভেবে থাকেন তাহলে এই নিবন্ধনটি সম্পূর্ণ পড়ুন।
এই নিবন্ধনের মাধ্যমে আমি আপনাকে জানাবো কিভাবে আপনি অল্প কাজ করে মাসে পঞ্চাশ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন সেই বিষয়ে। তাই আপনি যদি বেকার বসে না থেকে অনলাইন প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ ঘন্টা কাজ করে মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করতে চান তাহলে মনোযোগ সহকারে এখানে দেওয়া টিপসগুলো ফলো করুন।
আরেকটা কথা আগেই বলে দেই সেটা হল এই কাজটি করার জন্য আপনাকে ইন্টারনেট সম্পর্কে কিছুটা জ্ঞান থাকা দরকার। অথবা প্রথম প্রথম আপনাকে কষ্ট করে এই বিষয়ে ভালো করে জ্ঞান অর্জন করে তারপরে কাজটা শুরু করা দরকার। তাহলে আপনি প্রথম দিন থেকে হয়তো টাকা ইনকাম শুরু করে দিতে পারবেন।
তাই চলুন দেরী না করে জেনে নেই প্রতি মাসে ৫০০০০ টাকা আয় করার টিপস টি;
মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
মাসে ৫০০০০ টাকা আয় করার জন্য আমরা ব্যবহার করব গুগল ম্যাপ ও ফাইবার ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মটি। যেখানে আমাদের কাজটি হবে সরাসরি কাস্টমারদের কাছে থেকে কাজের কন্টাক্ট নিয়ে সেটা ফ্রিল্যান্সার দিয়ে কাজটি করিয়ে নেওয়া। এবং এর মধ্যে আপনার কিছু কমিশন রাখা।
এর জন্য সবার প্রথমে আমরা প্রবেশ করব গুগল ম্যাপ ওয়েবসাইটে। তারপর সেখানে উপলব্ধ search বারের মধ্যে যেকোনো ধরনের স্টোর বা দোকানের নাম লিখে সার্চ করুন। যেমন; সেলুন, রেস্টুরেন্ট, হোটেল, গেস্ট হাউস, এছাড়া আরো অন্যান্য ধরনের নাম।
তারপর আপনার স্কিনে গুগল ম্যাপ এর মধ্যে অনেকগুলো দোকান বা স্টোরের তালিকা দেখাবে। আপনি এক এক করে প্রতিটি স্টোর বা দোকানের উপরে ক্লিক করুন তারপর সেখান থেকে সেই দোকানের নাম ফোন নম্বর ও ইমেইল আইডি-টি সংগ্রহ করে একটি নোটপ্যাডে লিখে রাখুন সাথে সেই দোকান বা স্টোর টির কোন ওয়েবসাইট আছে কিনা সেটিও লিখে রাখুন।
(তবে মনে রাখবেন আপনি যে বিজনেস প্রোফাইল গুলি বা দোকান গুলির লিস্ট করবেন। সেগুলো যেন একটু নতুন তৈরি প্রোফাইল হয়, বা সেই দোকান বা স্টোরে গুলোতে বেশি দর্শক রেটিং না থাকে। তাহলে সেই স্টোর বা দোকানের মালিক এই কাজটি করাতে বেশি আগ্রহী হবে।)
এরকমভাবে একশোর বেশি একটি লিস্ট বা তালিকা তৈরি করুন। তারপর প্রতিটি ইমেইলে বা ফোন নম্বরে একটি করে মেসেজ বা ফোন কল করুন। তারপর তাদের সেই মেসেজ বা ফোন কলের মধ্যে বলুন তাদের “গুগল my বিজনেস” প্রোফাইলে দর্শকদের রেটিং বাড়াতে বা সেই দোকান সম্পর্কে একটি ওয়েবসাইট বানাতে আপনার সাথে যোগাযোগ করার জন্য যেটি আপনি খুব অল্প টাকার মধ্যে করিয়ে দেবেন।
এরকমভাবে আপনি যখন ১০০ জনকে মেসেজ বা ফোন কল করবেন তখন তার মধ্যে থেকে ১০ থেকে ১৫ জন সেই কাজ করানোর জন্য রাজি হয়ে যাবে। এবং আপনার সাথে সেই কাস্টমার গুলো তাদের কাজগুলো করানোর জন্য যোগাযোগ করবে। সেক্ষেত্রে আপনার কাছে তারা আপনার কাজের মূল্য কত সেটা জানতে চাইতে পারে।
সেই কারণে আপনি আগে থেকেই ফাইবার ডট কমে প্রবেশ করে সার্চ বক্সে গুগল ম্যাপ রিভিউ লিখে সার্চ করলে আপনার সামনে বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সার দেখতে পাবেন। যারা এই কাজগুলো করিয়ে দিচ্ছে খুব অল্প টাকাই। আপনি তাদের থেকে যে কোন একজনকে নির্বাচন করে রাখুন এবং সেখান থেকে কাজের মূল্যটি দেখে নিন বা জেনে তারপর আপনি কত টাকা লাভ রাখতে চান সেটি হিসাব করে আপনার কাস্টমারকে জানান।
যদি সেই দোকান বা স্টোরের মালিক তার ব্যবসাকে উন্নতি করার কথা ভেবে থাকে, তাহলে ১০০% গেরেন্টি সেই দোকান বা স্টোরের মালিক আপনার সাথে যোগাযোগ করবে তার কাজ করানোর জন্য।
এরপর আপনার মূল্য জেনে যদি সেই কাস্টমারটি রাজি হয়। তাহলে আপনি তাকে বলুন আগে টাকা দেওয়ার জন্য। তারপর আপনি টাকা পাওয়ার পর Fiver.com এ প্রবেশ করে আপনি যে ফ্রিল্যান্সারের কাছ থেকে কাজটি করিয়ে নেবে ভেবেছিল তার কাছে এই কাজের অর্ডারটি দিয়ে দিন। ফলে কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পরে ফাইবার তাকে পেমেন্ট করবে। আর আপনার যদি কাজ পছন্দ না হয় তাহলে আপনি সেটি বাতিল করে দিলে ফাইবার আপনার টাকা ফেরত দেবে। তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে ৪% পর্যন্ত টাকার আদান প্রদানের ফ্রি লাগতে পারে।
ফ্রিল্যান্সার দিয়ে কাজটি সম্পূর্ণ হয়ে যাবার পর। আপনার কাস্টমারকে বলুন তার কাজটি ভালো করে চেক করে নিতে এবং আপনার যদি কোন ওয়েবসাইট বা বিজনেস প্রোফাইল থেকে সেখানে একটি সুন্দর রিভিউ দিতে। ফলে আপনার বিজনেস প্রোফাইল ও ওয়েবসাইটটি বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেবে।
টিপস :
তবে আপনি যদি একজন নতুন হন। তাহলে এই ব্যবসা শুরু করতে এবং বেশি পরিমাণে কাস্টমার পেতে আপনি প্রথম প্রথম কিছু কাস্টমারের কাজগুলি নিজের টাকা দিয়ে করিয়ে নিয়ে তারপর সেই কাস্টমারের কাছ থেকে টাকা নিন। তাহলে ব্যবসার মধ্যে খুব সুন্দর একটা ব্যবস্থাপনা তৈরি হবে। যেটা আপনি দীর্ঘ সময় ধরে করতে পারবেন। তবে আপনার ওয়েবসাইট কিংবা বিজনেস প্রোফাইল কিছুটা পরিচিত জনপ্রিয় হয়ে গেলে তখন কাস্টমারদের থেকে আগে টাকা নিন তারপরে কাজ করুন। আর আপনি যদি ভালো পরিমানে ইংরেজি বলতে পারেন, তাহলে সেক্ষেত্রে ভারতবর্ষ ছাড়া অন্যান্য দেশ। যেমন; আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ও কুয়েত এর মত বিভিন্ন দেশের স্টোর বা দোকানের মালিকের সাথে যোগাযোগ করে সেখান থেকে কাজ নেওয়ার চেষ্টা করুন। তাহলে আপনি ভারতবর্ষে কাজ করবার থেকেও দ্বিগুণ পরিমাণে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। কারণ তারা তাদের দেশের টাকা বা ডলার হিসেবে আপনাকে পেমেন্ট করবে। ফলে সেই দেশের ডলার টাকাটি আমাদের দেশে ভাঙ্গালে এক ডলার সমান সমান ৮৬ টাকা পর্যন্ত পেতে পারি।
এইভাবে আপনি যত পরিমাণে কাস্টমারের সাথে কন্টাক্ট করে কাজ নিতে পারবেন এবং Freelancer দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে পারবেন আপনি তত বেশি পরিমাণে ইনকাম করতে পারবেন আপনার নতুন শুরু করা ব্যবসা থেকে।
আর আপনার যদি কোন বিজনেস প্রোফাইল বা ওয়েবসাইট না থেকে থাকে তাহলে আপনি আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা আপনাকে অল্প টাকায় খুব সুন্দর একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট সাথে একটি গুগল বিজনেস প্রোফাইল তৈরি করে দেবো। এছাড়া আপনার ক্লাইনদের জন্য যদি কোন ওয়েবসাইট বানানোর কাজ এসে থাকে তাহলেও আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন আমরা সেই কাজটি খুব অল্প টাকার মধ্যে করিয়ে দেবো।
এইভাবে ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করতে কত দিন লাগবে?
এটা বলা অসম্ভব ব্যাপার। আপনি হয়তো এক সপ্তাহের মধ্যেও কমিয়ে নিতে পারেন এক দিনের মধ্যেও ইনকাম করে নিতে পারেন অথবা এক মাসের মধ্যেও ইনকাম করতে পারেন। সেটি নির্ভর করবে আপনার উপর, কারণ আপনি কেমন ভাবে ক্লাইন্ট বা কাস্টমার এর সাথে কথা বলে কাজ নেবেন এবং কিভাবে ফ্রিল্যান্সারদের ম্যানেজ করবেন সেটা পুরো আপনার উপর নির্ভর করবে। তাই আপনাকে এই সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে জ্ঞান অর্জন করে কাজটি শুরু করুন। হয়তো আপনাকে জ্ঞান অর্জন করতে ২ থেকে ৩ মাস সময় লেগে যেতে পারে, কিন্তু সেই সময়ের পরে আপনার অনেক অভিজ্ঞতা হয়ে যাবে এবং আপনি সহজেই এই কাজ করে প্রতি মাসে 50 হাজার টাকা ইনকাম করে নিতে পারবেন ঘরে বসে।
এখান থেকে টাকা পেমেন্ট কিভাবে পাবেন?
এই কাজটি কে বা কারা করতে পারবে?
এই কাজটি যে কেউ করতে পারে। এখানে বয়সের কোন সীমা নেই। কারণ এখানে আপনাকে কাজ দেখা কাজ দেওয়া হয় কোন সার্টিফিকেট বা বয়স দেখে নয়। এখানে সব থেকে বেশি প্রয়োজনীয় যেটি সেটি হল আপনার অভিজ্ঞতা। তাই আপনার অভিজ্ঞতা যত বেশি হবে আপনি তত বেশি ক্লাইন্ট বা কাস্টমারের সাথে যোগাযোগ করে তত বেশি কাজ নিতে পারবেন। তাই সবসময়ই আপনার অভিজ্ঞতা বাড়ানোর উপরে কাজ করুন তাহলে আপনি খুব সহজেই আপনার গোলটি সম্পূর্ণ করতে পারবেন।
উপসংহার :
আশা করি আমি আপনাকে “মাসে 50 হাজার টাকা কিভাবে আয় করা যায়” এই সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে ধারণা দিতে পেরেছি। যদি পেরে থাকি বা অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করবার সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট বক্সে জানান। আর এরকম ধরনের আরো নতুন নতুন অনলাইন ইনকাম টিপস, এফিলিয়েট মার্কেটিং ও ব্লগিং সম্পর্কে জানতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলটিতে যোগদান করুন। সাথে এই ওয়েবসাইট-টিকে সাবস্ক্রাইব করে রেখে দিন। ধন্যবাদ।