ব্লগ পোস্ট কিভাবে করে? তার টিপস বা নির্দেশিকা নতুনদের জন্য

ব্লগ পোস্ট কিভাবে করে? তার টিপস বা নির্দেশিকা নতুনদের জন্য

হ্যালো প্রিয় দর্শক, আপনাকে আমাদের ব্লগ “তরিকুল বাঙালিতে” স্বাগতম। আজকে আমরা এই নিবন্ধনে কথা বলব ব্লগ পোষ্ট কিভাবে করে? তার কিছু টিপস ও নিয়ম সম্পর্কে।

সুতরাং, আপনি যদি একজন ব্লগার হয়ে থাকেন, এবং নতুন ব্লগ শুরু করেছেন। আপনি জানেন না ব্লগ পোষ্ট কিভাবে করে? তাহলে এই নিবন্ধনটি সম্পূর্ণ পড়ুন। কারণ আমরা যতই ব্লগ তৈরি করি না কেন, সেই ব্লগটিতে দর্শক আসবে শুধুমাত্র আপনার ব্লগ পোষ্টের উপর ভিত্তি করে।

সেই কারণে আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে আমরা যে ব্লগ পোষ্টটি পাবলিশ করব। সেটি যেন সঠিকভাবে ও সঠিক নিয়মে হয়ে থাকে। সাথে আমাদের ব্লগ পোষ্টটি যেন দর্শকে আকর্শিত করে, এবং Google এর কাছে বেশি করে প্রাধান্য পায়। তাহলে আমরা কিছু বেনিফিট পাব। তাই আমি মনে করি সমস্ত নতুন ব্লগারদের ব্লগ পোস্টের সঠিক নিয়মটি জানা উচিত। চলুন আমরা জেনে নিই সেই টিপস বা নিয়ম গুলি।

ব্লগ পোস্ট কিভাবে করে?

ব্লগ পোস্ট করবার জন্য, সবার আগে আপনার কাছে একটি ব্লগ ওয়েবসাইট থাকতে হবে। সাথে আপনি যে ব্লগ ওয়েবসাইটটি তৈরি করেছেন সেই ওয়েবসাইটটিতে, কোন ধরনের কনটেন্ট বা ব্লগ পোষ্ট পাবলিশ করতে চান, সেটি আগে থেকে ঠিক করে রাখা উচিত। যেমন; আমাদের এই ব্লগ ওয়েবসাইটটি Bologing, Online earning, Youtube, Affiliate marketing সম্পর্কে ব্লগ পোস্ট করে থাকি। যেটা আমরা এক কথায় টেকনোলজি বা ব্লগিং সম্পর্কে বলে থাকি। আপনিও ঠিক এরকম কোন একটি ক্যাটাগরি কে নির্বাচন করে নিন।

উদহারণ :

১. খেলাধুলোর বিষয়ে।
২. ব্যাবসীয় ব্লগ। (ব্যাবসার বিষয়ে)
৩. নিউজ বা খবর সম্পর্কে।
৪. ট্রাভেল বা ঘোরাঘুরি সম্পৰ্কে।
৫. ফ্যাশন বা জামাকাপড় সম্পর্কে।
৬. শরীর ও স্বাস্থ সম্পর্কে।
৭. বিভিন্ন খাবার বা খাদ্য সম্পর্কে।

এছাড়া আরো অন্য বিষয়ের সম্পর্কে হতে পারে।

আপনার ব্লগ তৈরি করে সেটিতে একটি সঠিক ক্যাটাগরি নির্বাচন করে নিলে, এরপরে আপনার কাজ হবে। সেই ব্লগ ওয়েবসাইটে পাবলিশ করার জন্য কিছু ব্লগ পোস্ট। আর সেই ব্লগ পোস্ট তৈরি করার জন্য আপনাকে বুদ্ধি লাগিয়ে গুগল থেকে সার্চ করে বার করতে হবে। কম ডিফিকাল্ট যুক্ত কিওয়ার্ড, আপনার ব্লগ ক্যাটাগরি সম্পর্কে।

তারপর সেই কিওয়ার্ড নিয়ে একটি সুন্দর ব্লগ পোস্ট টাইটেল তৈরি করতে হবে, ৬০ থেকে ৬৫ শব্দের মধ্যে।

ব্লগ পোস্ট টাইটেল

এরপর আপনাকে সেই ব্লগ পোষ্ট টাইটেল বা কিওয়ার্ডের উপর ভিত্তি করে, আরো কিছু সাব কিওয়ার্ড যুক্ত খুঁজতে হবে। যে কিওয়ার্ডগুলো ওই ব্লগ পোষ্টের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, বা সাধারণ দর্শক গুগলে সন্ধান করে থাকে। এমন কিছু কিওয়ার্ড কে সংগ্রহ করতে হবে।

ব্লগ পোষ্ট সম্পর্কে কীওয়ার্ড

তারপর আপনি আপনার ব্লগ পোষ্টের টাইটেল ও সংগ্রহ করা কীওয়ার্ড গুলোর উপর ভিত্তি করে “গুগল ডক্স“, বা “এমএস ওয়ার্ডের” মাধ্যমে সেই টপিকের উপর ব্লগ পোষ্ট লেখা শুরু করে দিন।

তবে ব্লগ পোস্ট লেখা শুরু করার আগে আপনাকে সেই ব্লগ পোষ্টের শুরুতে পোস্ট সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিন, সাথে আপনি কে, এবং আপনার অভিজ্ঞতা কি? সেই সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে, একটি ছোট ইন্ট্রো তৈরি করতে হবে। যেমনটি আমি এই নিবন্ধনের একদম উপরের তিনটি প্যারাগ্রাফে দিয়েছি, ঠিক তেমনি।

এরপর আপনি সেই ব্লগ পোষ্টের টাইটেল থেকে মেন কীওয়ার্ডটিকে তুলে নিয়ে সেটিকে H2 হেডিং করে, সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করুন। আপনি যত বেশি এবং যত গভীরভাবে আপনি সেই বিষয়ে আলোচনা করতে পারবেন। সেই ব্লগ পোষ্ট থেকে তত বেশি পরিমাণে বেনিফিট পাবেন।

ব্লগ পোস্ট h2 হেডিং

ব্লগ টপিক সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা দেওয়ার পর। আপনি আপনার এই ব্লগ পোষ্টের জন্য যে অতিরিক্ত কিওয়ার্ডগুলো গুগল থেকে সংগ্রহ করেছিলেন। সেই কিওয়ার্ডের উপরে সংক্ষিপ্ত উত্তর তৈরি করে “এফ এ কিউ” প্রশ্ন-উত্তরের মাধ্যমে ব্লগ পোষ্টের যুক্ত করে দিন।

সেই “এফ-এ-কিউ” প্রশ্নের উত্তরগুলো যুক্ত করা হয়ে গেলে, আপনি নিচে একটি সারসংক্ষেপ উপসংহার বা শেষ কথা বলে একটি প্যারাগ্রাফ তৈরি করুন। যেটিতে দর্শককে আপনার ওয়েবসাইটে পুনরায় প্রবেশ করতে বলবেন, দর্শকদের মন্তব্যকে শেয়ার করার জন্য বলবেন। যেমনটা আমরা বলে থাকি বা একদম নিচে দেওয়া আছে।

সাথে আপনি যে ব্লগ পোষ্টটি লিখছেন। সেই ব্লগ পোষ্টের মধ্যে যদি কোন প্রোডাক্ট বা পণ্যের রিভিউ, কিংবা প্রচার করে থাকেন। তাহলে সেই সারসংক্ষেপ বা উপসংহার প্যারাগ্রাফ এর উপরে। সেই প্রোডাক্ট বা পণ্যের ডিসকাউন্ট কুপন বা অফার লিংকটি শেয়ার করুন। উদহারণ ;

ব্লগ তৈরির জন্য হোস্টিংযার থেকে ৮২% ছাড়ে হোস্টিং এর সাথে ফ্রি ডোমেইন পান। আর আমার দেওয়া কুপন কোড : “HI10” বা “CYBERSALE” ব্যাবহার করে ১০% পর্যন্ত অতিরিক্ত ছাড় নিন। 👉 অফারটি ধরুন..

ফলে যখনই কোন দর্শক ওই নিবন্ধনটি পড়বে এবং ওই প্রোডাক্টটির উপরে ডিসকাউন্ট দেখবে। তখন আপনার লিংকে ক্লিক করে সেই পণ্যটি ক্রয় করবে। ফলে আপনি তখনই কিছু কমিশন পেয়ে যাবেন। যেটাকে বলা হয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

এছাড়া ব্লগ পোস্টটি লেখা হয়ে গেলে। আপনাকে সেই পোষ্টের মধ্যে আপনার ব্লগে থাকা পোস্ট গুলির লিংক গুলি কপি করে কিছু কিছু শব্দের সাথে ইন্টারনাল লিংক, ও অন্য ওয়েবসাইটের লিংক যুক্ত করে দিন। যেমনটা এই ব্লগ পোষ্টের মধ্যে বিভিন্ন টেক্সটের মধ্য লিংক যুক্ত করা হয়েছে তেমনি যুক্ত করে দিন।

এরপর আপনি সেই ব্লগ পোষ্টের জন্য সুন্দর একটি থামেল বা ব্যানার তৈরি করুন। এটি করার জন্য আপনি কেনভা ডটকমের মত বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম পেয়ে যাবেন। সেখান থেকে আপনি সেটি তৈরি করেন নিন।

সাথে আপনার ব্লগ পোষ্টের মেন যে কিওয়ার্ডটি। তার রিলেটেড যত কিওয়ার্ড উপলব্ধ আছে, সেগুলো কপি করে একত্রিত করুন। এবং সেগুলোকে আপনার ব্লগ পোষ্টের ট্যাগের মধ্য অন্তর্ভুক্ত করে দিন। একইসঙ্গে ব্লগ পোষ্টটি কোন ক্যাটাগরির মধ্যে পড়ে, সেটি নির্বাচন করে দিন। তারপর ব্লগ পোস্টের ইউআরএলটি কাস্টমাইজ করে মেন কিওয়ার্ডটি যুক্ত করে দিন।

এই সমস্ত কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার পর। আপনি “পাবলিশ” বাটনে ক্লিক করে ব্লগ পোস্টটি আপনার ব্লগে পাবলিশ করে দিন। এইভাবে আপনি আপনার ব্লগে পোস্ট করতে পারবেন।

তো চলুন এবার জেনে নেই উধারণ সোহো :

ব্লগ পোস্ট করার জন্য আপনার ব্লগটি ওপেন করুন। সেটা হতে পারে ব্লগার, ওয়ার্ডপ্রেস, উইক্স বা অন্য কোনো ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম। সেই ব্লগ প্ল্যাটফর্মটির মধ্যে প্রবেশ করে পোস্ট অপশানে ক্লিক করুন। যেমন; আমাদের ক্ষেত্রে আমরা ব্যবহার করি ওয়ার্ডপ্রেস প্ল্যাটফর্ম। তাই আমরা আমাদের ওয়ার্ডপ্রেস ড্যাসবোর্ড এ প্রবেশ করে “পোস্ট” অপশনটিতে ক্লিক করব।

পোস্ট অপশনটিতে ক্লিক করলে তার মধ্য থেকে কিছু অপশন খুলবে নিচে দেওয়া ছবির মত। সেখানে আপনি “অ্যাড নিউ পোস্ট” অপশনটিতে ক্লিক করুন।

ব্লগ অ্যাড নিউ পোস্ট

এড নিউ পোস্টে ক্লিক করলে, আপনাকে নতুন পোস্ট পাবলিশ করবার পেজে নিয়ে যাবে। সেখানে টাইটেল বক্সে আপনি আপনার পোষ্টের টাইটেলটি লিখুন। এবং তার নিচে আপনি যে ব্লগ পোষ্টটি এমএস ওয়ার্ড কিংবা গুগল ডকুমেন্টস এর মধ্যে লিখে রেখেছেন সেটি কপি করে পেস্ট করে দিন। এবং তার ডান সাইডে থাকা অপশন গুলির মধ্য থেকে “ফিচার্ড ইমেজ” অপশনটিতে ক্লিক করে আপনি আপনার ব্লগ পোষ্টের জন্য যে ছবিটি তৈরি করেছিলেন সেটি আপলোড করে দিন।

তারপর, আপনার ব্লগ পোষ্টের লিংকে কাস্টমাইজ বা পাল্টানোর জন্য। লিংক অপশনের পাশে আপনার অটোমেটিক তৈরি হওয়ার লিংকে ক্লিক করে, আপনি যে লিংকটি দিতে চান সেটি লিখুন লিখে দিন।

নতুন পোস্ট পাবলিশ করবার পেজে

তারপর তার নিচে থাকা “ক্যাটাগরি” অপশন টিতে ক্লিক করে আপনার ব্লগ পোষ্টটি কোন ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত, সেই ক্যাটাগরীকে নির্বাচন করে দিন। আর যদি কোন ক্যাটাগরী না থেকে থাকে। তাহলে আপনি “অ্যাড নিউ ক্যাটাগরি” অপশনে ক্লিক করে, আপনার ব্লগ টপিক সম্পর্কে কিছু ক্যাটাগরি তৈরি করে নিন। তারপর সেখান থেকে একটি কে নির্বাচন করে দিন। এটি করলে আপনার ব্লগে প্রবেশ করা দর্শকরা বুঝতে সহজ হয়। যে কোন ক্যাটাগরির মধ্যে আপনি কিরকম ধরনের নিবন্ধন পাবলিশ করেন।

এরপর “ট্যাগ” অপশনটিতে ক্লিক করে আপনি আপনার ব্লগ টপিক সম্পর্কে যতগুলো কিওয়ার্ড সংগ্রহ করে রেখেছিলেন। সেই কিওয়ার্ডগুলো একটি একটি করে যুক্ত করে দিন। সাথে আপনি কিছু শব্দের মধ্যে অন্যান্য পোস্টের লিংক বা অ্যাফিলিয়েট লিংক গুলো যুক্ত করে দিন নিচে দেওয়া ছবির মত করে। সাথে দর্শকদের সেই টপিকটি সহজে বুঝানোর জন্য কিছু ছবি বা সেই টপিক সম্পর্কে কিছু স্ক্রিনশট যুক্ত করুন।

তবে একটি কথা মনে রাখবেন। যখন আপনার এই একই ওয়েবসাইটের কোন পোষ্টের লিংক নতুন পোস্টে যুক্ত করবেন। তখন কোন “নো-ফলো” কিংবা “স্পন্সর” অপশনটি নির্বাচন করবেন না। আপনি নো-ফলো ও কিংবা স্পন্সর অপশন টি শুধুমাত্র অ্যাফিলিয়েট লিংক বা অন্য কোনো ওয়েবসাইটের লিংক যখন যুক্ত করবেন সেই ক্ষেত্রে নির্বাচন করবেন।

ব্লগ টপিক ও ট্যাগ

এরপর সেই নতুন ব্লগ পোষ্টের মধ্যে যে টপিকে ব্লগ পোস্টে লিখেছেন সেই টপিকের কিছু কিওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত করবেন। যদি করে থাকেন, তাহলে তার রিলেটেড শব্দগুলোকে একটু মোটা সাইজের করে দেবেন। সমস্ত কিছু সম্পূর্ণ করবার পর উপরে দেওয়া “পাবলিশ” বাটনে ক্লিক করে আপনার ব্লগ পোষ্টটি পাবলিশ করে নিতে পারবেন, বা ব্লগে পোস্ট করতে পারবেন।

ব্লগ পোস্ট পাবলিশ করার জন্য কি প্রয়োজন?

ব্লগ পোস্ট পাবলিশ করার জন্য আপনার কাছে একটি ব্লগ ওয়েবসাইট, সাথে সেই ব্লগে কিভাবে নতুন নতুন ব্লগ পোস্ট লেখাযায় তার অভিজ্ঞতা থাকা দরকার।

কত শব্দের ব্লগ পোস্ট লিখলে গুগলে র‍্যাঙ্ক করা যাবে?

আপনি কত শব্দের ব্লগ পোস্ট লিখলে গুগলে র‍্যাংক করা যাবে, এটা বলা অসম্ভব ব্যাপার। কারণ এমনও অনেক ওয়েবসাইট আছে, যাদের ওয়েবসাইটে ৫০ থেকে ১০০ শব্দের ব্লগ পোষ্ট কিন্তু সেটি গুগলের রেংক করে। সাথে এমন ওয়েবসাইট আছে যেখানে ১০০ শব্দের বেশি ব্লগ পোস্ট লিখে সেটি গুগলের রেংক করে না। কারণ গুগল সব সময় দেখে তাদের দর্শককে সঠিক তথ্য প্রদান করছে কিনা। যদি আপনি সঠিক তথ্য প্রদান করতে ব্লগ পোষ্টটি ১০০ শব্দের হয় কিংবা ১০ হাজার শব্দের হয় তাহলে আপনাকে ততটাই লিখতে হবে যতটা ওই টপিক সম্পর্কে বোঝাতে প্রয়োজনীয়।

শেষ কথা :

আশা করি আপনি ব্লগ পোস্ট কিভাবে করে, তার টিপস সম্পর্কে এই নিবন্ধনটি পড়ে সম্পূর্ণ জানতে পেরেছেন। যদি পেরে থাকেন, এবং নিবন্ধনটি আপনাকে ন্যূনতম সাহায্য করে থাকে। তাহলে এটি বেশি বেশি করে শেয়ার করে দিন। আর এরকম ধরনের আরো নতুন নতুন ব্লগিং টিপস, অনলাইন ইনকাম, ও ইউটিউব সম্পর্কে জানতে, আমাদের ব্লগ সাইটটিতে প্রতিদিন ভিজিট করতে থাকুন। সাথে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগদান করে আমাদের তরিকুল বাঙালি পরিবারের সদস্য হয়ে যান। আর ব্লগ পোস্ট সম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট বক্সে জানান। ধন্যবাদ।

আরো পোস্ট পড়ুন :-