একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করবার জন্য সেরা ৫টি উপায় সকলের জন্য
আসসালামু আলাইকুম। বন্ধুরা আমরা সকলেই জানি একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে সেখান থেকে ইউটিউবাররা বিভিন্ন উপায়ে ইনকাম করে থাকে। কিন্তু আমরা এটা জানি না যে তারা কি কি উপায়ে একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করে থাকেন। এবং আপনি কি কি উপায়ে ইনকাম করতে পারবেন? ও সেখান থেকে আয় করার জন্য আপনাকে কি কি করতে হবে সেই বিষয়ে।
তাই আপনি যদি একজন নতুন ইউটিউবার হয়ে থাকে কিংবা আপনার একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে থাকে। সেখানে শুধুমাত্র আপনি গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন দ্বারা ইনকাম করে থাকেন। তাহলে এই নিবন্ধনটি সম্পূর্ণ পড়ুন। আর জেনে নিন আপনি কিভাবে একটি চ্যানেল থেকে পাঁচটি উপায়ে ইনকাম বার করতে পারবেন তার সম্পর্কে। কারণ আমি মনে করি এই বিষয়টি সকলের জন্য জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনি এটি মনোযোগ সহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
তবে একটা কথা মনে রাখবেন। এই ইনকামের পদ্ধতিটি কিন্তু সমস্ত ক্যাটাগরির চ্যানেলে ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়তো একটু অসুবিধা হতে পারে। সেই অসুবিধা টিকে দূর করাতে আপনাকে আপনাকে একটু বেশি কষ্ট করতে হতে পারে।
ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করার ৫টি উপায়
ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করার বার জন্য আমরা যে পাঁচটি উপায় ব্যবহার করব সেটি হল প্রথমত, গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন। দ্বিতীয়, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং। তৃতীয় ,স্পন্সারশিপ। চতুর্থ, অনলাইন কোর্স ও পণ্য বিক্রয়। ও পঞ্চম, চ্যানেল প্রোমোশন করে।
১. ইউটিউব থেকে এডসেন্সের মাধ্যমে ইনকাম
ইউটিউব থেকে এডসেন্সের মাধ্যমে ইনকাম করার জন্য সবার প্রথমে আপনাকে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে হবে। এবং সেই ইউটিউব চ্যানেলটিতে প্রতিনিয়ত ভিডিও আপলোড করে। আপনাকে সেই ইউটিউব চ্যানেলটিতে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার ও ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম পূর্ণ করতে হবে।
তারপর সেই চ্যানেলটিকে আপনি গুগল বিজ্ঞাপন দ্বারা মনিটাইজেশন চালু করাতে পারবেন। তারপরে Google বিজ্ঞাপন এর মাধ্যমে আপনার চ্যানেল থেকে আয় করতে পারবেন। আপনার দর্শকদের বিজ্ঞাপন দেখিয়ে। যেটি সকল ইউটিউবারই করে থাকে। ঠিক আপনিও ওরকমই করে গুগল এডসেন্স থেকে ইউটিউব এর মাধ্যমে ইনকাম করতে পারবেন।
২. Youtube এ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়
ইউটিউবের মাধ্যমে অ্যাফিকেট মার্কেটিং করে ইনকাম করা করাটি হলো। একটি অন্যতম অনলাইন ইনকামের উপায়। হ্যাঁ, বন্ধু আপনি এই উপায়ে একটি নতুন Youtube চ্যানেল থেকেও খুব সহজেই টাকা ইনকাম করতে পারবেন। যদি সেই চ্যানেলটি মনিটাইজেশন চালু না হয়ে থাকে তাও আপনি টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
তবে এর জন্য আপনাকে কিছু বুদ্ধি প্রয়োগ করতে হবে। যেমন; প্রথমত আপনাকে একটি কিউলিংক বা শেয়ারে-এ-সেল এর মতো ভালো একটি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্ল্যাটফর্মে যোগদান করতে হবে। তারপর সেখান থেকে একটি ভালো অ্যাফিলিয়েট পণ্যকে বেছে নিয়ে তার সম্বন্ধে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও তৈরি করুন।
উদহারণ ; সেটি কিভাবে কাজ করে, সেটি মানুষের কিভাবে সাহায্য করতে পারে, এবং সেটি ব্যবহার করার উপকার কি? এই সব বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও তৈরি করুন। এবং প্রতিটি ভিডিওর নিচে ডিসক্রিপশন বক্সে “বাই নাও” লিখে তার পাশে আপনার এফিলিয়েট লিংকটি যুক্ত করে দিন। ফলে যখনই কোন দর্শক আপনার ভিডিওটি দেখবে এবং তার ওই পণ্যটি পছন্দ হবে। সে আপনার ওই ডিসক্রিপশন বক্সে দেওয়া লিংকে ক্লিক করে পণ্যটি ক্রয় করলে আপনি একটি অতিরিক্ত টাকা ইনকাম করতে পারবেন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে।
৩. Youtube স্পন্সরশীপ সিপ থেকে ইনকাম
সকলেই কম-বেশি জানেন। যে একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে স্পন্সর শিপ এর মাধ্যমে ইনকাম করার জন্য আপনার ওই ইউটিউব চ্যানেলটি কোন একটি ক্যাটাগরিতে হতে হবে। সেটা হতে পারে টেকনোলজি খবর, ফ্যাশন, ভ্লগ ভিডিও বা ওরও অন্য কোন বিষয়ে। ওই চ্যানেলটিতে ১০ হাজারের বেশি সাবস্ক্রাইবার থাকা প্রয়োজন হবে। তাহলে আপনি বিভিন্ন কোম্পানির স্পন্সার সিপ থেকে ইনকাম করতে পারেন।
যেমন; ধরুন আমার একটি ইউটিউব চ্যানেল আছে সেটি টেকনোলজি ও ব্লগিং সম্পর্কে। সুতরাং যখনই আমার ইউটিউব চ্যানেলটিতে ১০ হাজারের বেশি সাবস্ক্রাইবার হয়ে যাবে এবং আমার ইউটিউব চ্যানেলটিতে বেশি বেশি দর্শক আসা শুরু করবে। তখন বিভিন্ন ধরনের ওয়েব হোস্টিং, থিম, প্লাগিন, ওএসিও টুল এর কোম্পানিগুলো আমাকে সরাসরি ইমেইল ইমেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে থাকেন। এবং তারা বলেন যে তাদের পণ্যর বিষয়ে একটি ভিডিও তৈরি করে সেটিকে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করলে আমরা কিছু টাকা দেব.
ফলে যখনই আমি তাদের পণ্য বা পরিষেবার উপরে একটি ইউটিউব ভিডিও তৈরি করে আমার ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করব। তখন আমি সেই ভিডিওটি আপলোড করার জন্য যে কোম্পানির পণ্য পরিষেবাটির ভিডিও তৈরি করেছি সেই কোম্পানি আমাকে তাদের স্পন্সার সিপের টাকা দিয়ে দেন। ফলে আপনি ওই একটি ভিডিও তৈরি করে গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে, এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ও স্পন্সার শিপ এর মাধ্যমে ইনকাম করতে পারব।
৪. ইউটিউবে কোর্স ও পণ্য বিক্রয় করে ইনকাম
আপনি যদি একজন ভালো ইউটিউবার হয়ে থাকেন। এবং আপনার সাবস্ক্রাইবার সকলেই আপনাকে পছন্দ করে থাকেন। তাহলে আপনি কিছু টাকা ব্যয় করে আপনার যে বিষয়ে সব থেকে বেশি অভিজ্ঞতা আছে। সেই বিষয়ের উপরে নিজের একটি কোর্স তৈরি করতে পারেন বা একটি পণ্য তৈরি করতে পারেন।
সেটা হতে পারে টি-শার্ট, মগ, প্যান্ট, জুতো, বা অন্য কোন জিনিস। তারপর সেই পণ্যটিকে বা কোর্স টিকে অ্যামাজন কিংবা সপিফাই এর মত ওয়েবসাইটে আপলোড করে। সেটিকে আপনার ইউটিউব চ্যানেলের দর্শকদের মাধ্যমে প্রচার করে বিক্রয় করতে পারেন। ফলে সেখান থেকে আপনি একটি ভালো পরিমাণে আয় বার করতে পারবেন।
৫. ইউটিউব চ্যানেল প্রমোশন করে ইনকাম
আমরা সকল নতুন ইউটিউবাররা মনে করে থাকি। যদি কোন একটি বড় ইউটিউবার আমাদের চ্যানেলটাকে একটু প্রমোশন করে দিতে। তাহলে হয়তো আমার খুব তাড়াতাড়ি ইউটিউব চ্যানেলটি গ্রোথ বা বৃদ্ধি হয়ে যেত. এবং আমি তাড়াতাড়ি ইনকাম করতে পারতাম।
ফলে আমরা বিভিন্ন ধরনের বড় বড় ইউটিউবারের কাছে সরাসরি মেসেজ করে থাকি। আমাদের চ্যানেলটিকে তার ভিডিওতে একবার দেখাবার জন্য। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে সেটি কেউ করে থাকেন এবং অনেকে করেন না।
তাই আমি আপনাকে বলব আপনার যদি একটি ছোটখাট মোটামুটি ১০ থেকে ৩০ হাজার সাবস্ক্রাইবার এর মধ্যে একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে। তাহলে আপনি সেই চ্যানেলে একটি ভিডিও বানিয়ে আপনার সকল দর্শকদের বলে দিতে পারেন। আমি আপনার চ্যানেলটিকে ভিডিওর মাধ্যমে প্রমোশন করে দেবো। কিন্তু তার জন্য আমাকে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে।
ফলে দেখবেন আপনার যদি ৩০ হাজার দর্শক থেকে থাকে। তার মধ্যে ১০০০ জন দর্শক কিন্তু রাজি হয়ে যাবে, তাদের চ্যানেলকে প্রমোশন করানোর জন্য। ফলে আপনি যদি প্রতিদিন একটি করে চ্যানেল প্রমোশন করাবার ভিডিও তৈরি করে ছাড়েন। তাহলে আপনি প্রতিদিন ৫ হাজার টাকা এক্সটা বা অতিরিক্ত ইনকাম করতে পারবেন। তবে এর জন্য আপনাকে ইউটিউব সম্পর্কে কিছু জ্ঞান থাকাটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
উপসংহার :
আমি আশা করি আপনি একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করবার জন্য সেরা পাঁচটি উপায়ের বিষয়ে জানতে পেরে উপকৃত হয়েছেন। যদি হয়ে থাকেন, এবং এই নিবন্ধনটি আপনার ভালো লেগে থাকে। তাহলে এটি বেশি বেশি করে শেয়ার করে দিন। আর এরকম ধরনের আরো নতুন নতুন ইউটিউব টিপস ও অনলাইন ইনকামের বিষয়ে জানতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলটিতে যোগদান করুন। সাথে এই তরিকুল বাঙালি ওয়েবসাইট টিকে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। আর আপনি যদি একটি জিমেইলে ২টি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে চান তাহলে এখানে ক্লিক করে তার পদ্ধতি বা নিয়মটি এখনই জেনে নিন।