অনলাইন প্রতারণা কী - প্রতারণা থেকে বাঁচার উপায় (মুক্তি)

অনলাইন প্রতারণা কী – প্রতারণা থেকে বাঁচার উপায় (মুক্তি)

অনলাইন প্রতারণা বা স্ক্যাম এই কথাটা আমরা প্রায় সকলের মুখ থেকেই শুনে থাকি এবং আমাদের আশেপাশে থাকা মানুষগুলোর মধ্য থেকে বা নিজের পরিচিত মানুষগুলোর সাথে বেশিরভাগ সময়ে আমরা অনলাইনের মাধ্যমে অনেক প্রতারণা হতে দেখেছি বা শুনে থাকি। কিন্তু আমরা আসলে জানিনা যে সেই প্রতারণা থেকে আমরা খুব সহজেই মুক্তি পেতে পারি। এবং সেই প্রতারণার হাত থেকে খুব সহজেই বাঁচতে পারি শুধুমাত্র দুই একটা জিনিস মাথায় রেখে কিন্তু এই বিষয়টা অনেকেই জানে না।

তাই আপনার সাথে যদি অনলাইন প্রতারণা হয়ে থাকেন, বা অনলাইন Scam থেকে বাঁচতে চান তাহলে এই নিবন্ধনটি সম্পূর্ণ পড়ুন। কারণ আমি এই নিবন্ধনের মাধ্যমে আপনার সাথে অনলাইনে প্রতারণার হওয়ার বিভিন্ন উপায় এবং প্রতারণার থেকে বাঁচার উপায় গুলো শেয়ার করেছি। যেগুলো আপনি একবার সম্পূর্ণ পড়লেই খুব সহজেই এই অনলাইন স্ক্যাম থেকে বাঁচতে পারবে।

তাই চলুন দেরি না করে জেনে নিই অনলাইন প্রতারণা থেকে বাঁচার উপায় গুলি কি কি? বা আমরা কিভাবে এই প্রতারণা থেকে বাঁচতে পারি? কট্রন এখনকার সময় অনলাইনের মাধ্যমে প্রতারণা অনেক বেড়ে গেছে তাই আমি সেগুলো থেকে আপনাকে দূরে রাখতে এই আর্টিকেলটি লেখা।

অনলাইন প্রতারণা কী?

অনলাইন প্রতারণা হলো আপনাকে কোনো একটা বিষয়ে লোভ দেখিয়ে আপনার কাছে থেকে টাকা, বাড়ি গাড়ি ও ধনো সম্পদ গুলো ফ্রীতে নিজে হস্তান্তর করে নেওয়া। এক কোথায় সাধারণ মানুষদের মাথায় টুপি পরিয়ে ইনকাম করার উপায়। যেটি অনলাইন কম্পিউটার এর ওপারে থাকা scammer গুলো করে থাকে। যেটাকে আমরা চুরি করে বা অসৎ পথে ইনকাম করা বলে থাকি।

তাই যদি কোনো স্ক্যামার এটি পড়েন তাহলে আমি আপনাকে বলবো এই Scam কাজ গুলো বাদ দিয়ে ভালো কোনো একটা কাজ খুঁজে সেখানে যোগদান করুন, আর শান্তিতে আপনার জীবন যাপন চালান। আর আপনারা Scammer দের হাত থেকে বাঁচার উপায় গুলি জেনে নিন।

অনলাইন প্রতারণা কী - প্রতারণা থেকে বাঁচার উপায় (মুক্তি)

অনলাইন প্রতারণা থেকে বাঁচার উপায়

অনলাইনে প্রতারণা সাধারণত বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে এবং বিভিন্নভাবে হয়ে থাকে তাই সবার প্রথমে আমরা জানবো আমার জানা কয়টি অনলাইন scams এর ধরন ও তার থেকে মুক্তি পাবার উপায়।

১. চাকুরীর লোভ দেখিয়ে

এখনকার সময় আমরা বেশিরভাগ লোক চাকরির জন্য খুবই চিন্তিত। এবং চাকরির পাওয়ার চিন্তা করে থাকি। কিন্তু সেই চিন্তার দুর্বলতার সুযোগটা নিয়ে থাকে বিভিন্ন ধরনের scammers যারা আপনাকে আপনার হোয়াটসঅ্যাপ, ইমেইল, কিংবা ফেসবুক মেসেঞ্জার এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের চাকরির অফার করে থাকেন। যেমন; দেশে ও বিদেশে কোম্পানি গুলি থেকে মেসেজেস করে ঠিক ওরকম ভাবে।

তারা আপনার সাথে খুব ভালো ব্যবহার করবে এবং তারা আপনাকে চাকরিটা পাবিয়ে দেবে বলে গ্যারান্টি নিয়ে আপনাকে কনভেনিয়েন্স করে ফেলে। কিন্তু সেই চাকরিটা তে জয়েন করতে গেলে কিংবা চাকরি পাওয়ার প্রসেসটা শুরু করতে গেলে তারা আপনাকে বলে কিছু টাকা দেওয়ার জন্য বলবে এবং আপনাকে এতটাই কনভেনিয়েন্স করে ফেলবে যে আপনিও টাকা দেওয়ার জন্য রাজি হয়ে যাবেন।

কারণ আপনি যেহেতু চাকরি চাকরি পাননি ফলে আপনার মাথায় তখন একটা চাপ থাকে এবং তখন আপনার চাকরি নিয়ে বেশি চিন্তা হতে থাকে এবং সেই ক্ষেত্রে আপনি তাকে টাকাটি দিয়ে চাকরি নেওয়ার সুযোগ টি গ্রহণ করবেন। ফলে আপনি ও কিছু না দেখে বা না জেনে চাকরিটি পাওয়ার আশায় টাকাটি দিয়ে দিলে সে কিছুক্ষণ বাদেই আপনার সমস্ত যোগাযোগ থেকে বঞ্চিত করে দেবে। আর যদি না করে দেয় তাহলে আপনাকে ঘোরাতে থাকবে বা ডেট এর পর date দিতে থাকবে ফলে আপনার দেওয়া টাকাটি নষ্ট হয়ে যায় এবং আপনি অনলাইন প্রতারণা এর শিকার হয়ে থাকেন।

এই বিষয়টা যেহেতু আপনি গোপনে করেছিলেন সেতু লোকের সাথে বলতেও আপনার লজ্জা হয়। কারণ আপনি একজন এসমার্ট ছেলে কিন্তু আপনার কাছে থেকে এইভাবে টাকা নিয়ে নিয়েছে এটা লোকে শুনলে হাসির ছলে উড়িয়ে দেয়। এই কারণে আপনি বলতেও লজ্জা করেন তাই আপনাকে যদি এরকম কেউ কোন ধরনের চাকরির অপারের সুযোগ দিয়ে, তাকে কিছু টাকা দিয়ে চাকরি নেওয়ার কথা বলে তাহলে অবশ্যই আপনি সেটাকে বারণ করে দেবেন।

কারণ যখন কোথাও চাকরির ইন্টারভিউ হয় তখন সেখান থেকে কোন টাকা নেওয়া হয় না। সুতরাং যদি কেউ ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে কল করে আপনাকে এই বিষয় বলে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি বুঝবেন এটা আপনার সাথে প্রতারণা হতে চলেছে। তবে এর জন্য আপনাকে আগে থেকেই সতর্ক থাকতে হবে এবং টাকা দেওয়ার আগে তার সাথে ভিডিও কল কিংবা ডাইরেক্ট ফোন কলে কথা বলতে হবে। যদি সেই ব্যাক্তি সেটাতে রাজি হয় তাহলে আপনি রাজি হতে পারেন। আর যদি রাজি না হয় তাহলে ভাববেন এটা পুরোটাই প্রতারণা।

তাই আপনি তৎক্ষণিক তাকে আপনার ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপ থেকে ব্লক করে দিন। আর যদি প্রতারণা হয়েও যায় তাহলে আপনি অনলাইন এস্কামcybervolunteer.mha.gov.in” ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার সাথে যে প্রতারণাটি হয়েছে সেই বিষয়ে একটি রিপোর্ট লেখিয়ে সেটাকে জমা দিতে পারেন ফলে পুলিশ আপনার দেওয়া তথ্য ও ইনফরমেশন গুলি ভালো করে পড়ে সেই Scam হওয়া টাকাটি উদ্ধার করে দিতে পারে।

এছাড়া আপনি যদি বিদেশে কোথাও চাকরির জন্য চেষ্টা করে থাকেন তাহলে আপনি সেই বেক্তির অরজিনাল আধারকার্ড, পানকার্ড ও অন্য অন্য তথ্য গুলি নিন তারপর তার Bank একাউন্ট নাম্বার নিয়ে সেটিতে টাকা পাঠান। কখনো গুগল-পে, বা ফোনেপে এর মাধ্যমে টাকা পাঠাবেন না। তাহলে আপনি যেকোনো ধরণের চাকরির প্রতারণা থেকে বাঁচতে পারবে। আর আপনি যদি ঘরে বসে ডাইরেক্ট কোম্পানির সাথে ভিডিও কল এর মাদ্ধমে ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরিতে জয়েন হতে চান এটি টাকাও না দিয়ে তাহলে এই নিবন্ধনটি পড়ুন।

২. ফ্রিতে গিফট এর লোভ দেখিয়ে :

আমরা অনেকে ইউটুবে, ফেসবুকে দেখে থাকি “দুবাই জমজম” ছোটা ভাই বড়ো ভাই এর মতো অনেক এমন মোবাইল দোকান, ল্যাপটপ দোকান ও আরো অন্যান দোকান মালিক গুলি তাদের সাবস্ক্রিবার দের জন্য বিভিন্ন ধরনের কোম্পানির ফোন, স্মার্টওয়াচ, ল্যাপটপ কিংবা অন্য কোনো পণ্য কে গিফট হিসাবে দিয়ে থাকেন।

আর এটির সুযোগ নিয়ে স্ক্যামের গুলি হোয়াটসঅ্যাপ এসএমএস এর মাধ্যমে, বিভিন্ন ধরনের অফার দিয়ে থাকে কিংবা ফোন কলের মাধ্যমে ফোন করে আমাদের বিশেষ অফার দেখিয়ে থাকে। যেমন; আপনি কোথাও ১ কোটি টাকা জিতেছেন কিংবা আপনি কোথাও কোনো খেলা চলছিল সেখানে আপনি জিতেছেন তার বদলে আপনি টাকা জিতেছেন এরকম ধরণের লোভ দেখিয়ে থাকে এবং সেই লোভে পড়ে আমরা Scammer দের হাতে পড়ে যায়।

কারণ যখনই সে আপনাকে ভালো ধরনের গিফটের অফার দেয় সেই গিফট প্রোডাক্টটি নিতে গেলে আপনাকে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পেমেন্ট করতে হবে ডেলিভারির জন্য এবং সেই টাকাটি আপনাকে ডেলিভারি নেয়ার আগেই পেমেন্ট করতে বলবে। ফলে আপনিও ভালো মানের গিফট ফ্রীতে পাওয়ার জন্য টাকাটি পেমেন্ট করেবন এবং আপনিও Scam এর শিকার হয়ে যাবনে ফলে।

তাই যখনই এরকম ধরনের কিছু আপনার সাথে ঘটবে তখনই ভেবে নেবেন এটা একজন স্ক্যামার। কারণ কখনোই যদি “দুবাই জমজম” মোবাইল শপের মতো দোকান থেকে ফ্রি গিফট পাঠায় তাহলে তার বদলে তারা কোন টাকার কথা বলবে না। তারা আপনার বাড়ি পর্যন্ত কুরিয়ার সার্ভিস দিয়েই তারা গিফটটাকে পাঠায় সুতরাং আপনি এই ধরনের প্রতারণায় পড়লে আপনি কখনোই টাকা বা আপনার ব্যাংকের কোনো তথ্য সেই ব্যাক্তির সাথে শেয়ার করবেন না।

৩. পুরনো জিনিস কেনাবেচার মাধ্যমে :

আমরা অনেকেই অনেক সময় পয়সার অভাবে কিংবা কোন প্রয়োজনের ক্ষেত্রে পুরনো জিনিস কেনাবেচা করে থাকি। কিন্তু আপনি কি জানেন এখনকার সময় এই পুরনো জিনিস কেনা বেচার মধ্যে কত পরিমানে স্ক্যাম বা প্রতারণা হচ্ছে আপনি হয়তো সেটি জানেন না।

এই পুরনো জিনিস কেনাবেচার মাধ্যমে অনলাইনে প্রতারণা চলছে। এটা scammer রা তারা বিভিন্ন ধরনের পণ্য বা জিনিসপত্র দ্বারা ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার, ইন্সট্রাগ্রাম আরো বিভিন্ন ধরনের প্লাটফর্মে শেয়ার করে থাকেন। এবং সেগুলোকে কম দামে বিক্রি করার অফার দিয়ে থাকেন। এবং সেই অফার দেখে আমার আপনার মত লোক আকর্ষিত হয়ে যায় এবং সেটা কেনার জন্য আমরা তাদের সাথে যোগাযোগ করতে থাকি।

ফলে আমরা একটা বড়ো ভুল করে ফেলি। যেমন আপনি যখন কোন একটা পণ্যের কথা বলবেন যে আপনার সেই পণ্যটি পছন্দ হয়েছে। ঠিক তখনই তারা বলবে যে এই পণ্যটি আগে একজনা অর্ডার করে নিয়েছে। তাই আপনাকে যদি নিতে হয় তাহলে এই মুহূর্তে আপনাকে কিছু টাকা গুগল-পে এবং ফোনপে এর মাধ্যমে তাকে পাঠাতে হবে। যদি পাঠিয়ে দেন তাহলে আপনি এই পণ্যটা পেয়ে যাবেন।

আর এটাই হলো সবথেকে বড় স্ক্যাম। কারণ আপনি যখন এই পণ্যটি নেওয়ার জন্য টাকাটি পেমেন্ট করবেন তখনই আপনাকে তারা ব্লক করে দেবে। ফলে আপনি তাদের আর কিছু করতে পারবেননা, এবং পুলিশের কাছে যেতে পারবেন না। কারণ আপনি যেহেতু টাকা নিজে থেকে তাকে Google-pey বা ফোনপে এর মাধ্যমে ট্রান্সফার করেছেন সেই কারণে।

তাই আপনার যদি কোন পুরনো পণ্য কিনতে হয় অনলাইন থেকে তাহলে অবশ্যই আপনি Cashify এর মতো সঠিক স্টোর থেকে ও তাদের সাথে যোগাযোগ করে আপনার পণ্যটি বাড়ি এলে আপনি “ক্যাশ অন ডেলিভারিতে” পণ্যটি নিয়ে নিন। কিংবা আপনি সেই দোকানটিতে সরাসরি ভিজিট করে সেই ব্যক্তির সাথে সরাসরি দেখা করে পণ্যটি ক্রয় করুন। তাহলে আপনি এই প্রতারণা থেকে বাঁচতে পারবেন।

৪. অ্যাপ্লিকেশন বা সাইট থেকে বেশি ইনকামের লোভ দেখিয়ে :

এখনকার সময় ছোট বাচ্চারাও জানে যে অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে মোবাইল থেকে ইনকাম করা সম্ভব। আর এই সুযোগটা নিয়েছে কিছু Scammer যারা কিছু অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করে আপনাকে বেশি টাকা ইনকাম করার লোভ দেখায় এবং সেখানে আপনাকে প্রথমবারের জন্য বিশাল ইনকামের সুযোগ দেবে। এবং সেই ইনকাম টাও আপনি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তুলে নেওয়ার সুযোগ দেবে।

ফলে আপনি যখন তাদের এই টাস্কগুলো পূরণ করে আপনার ব্যাংক একাউন্ট এর তথ্য দিয়ে তাদের অ্যাপ্লিকেশন থেকে পেমেন্টটা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করবেন তখনই তারা আপনার অ্যাকাউন্টটি ব্লক করে দেবে, বা আপনাকে ওই অ্যাপ থেকে বার করে দেবে।

ফলে তাদের কাছে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সমস্ত তথ্য জমা হয়ে যাবে এবং তারা সেই তথ্য ব্যবহার করে আপনার Bank একাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিতে পারে। তবে এগুলো সব ইনকাম করবার অ্যাপ্লিকেশন গুলো করে না। কিছু কিছু স্ক্যামার অ্যাপ্লিকেশন আছে যেগুলো এই ধরণের কাজ করে। যেটি সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে না।

তাই অবশ্যই যেকোনো এপ্লিকেশনে কাজ করে ইনকাম করার আগে সেই এপ্লিকেশন এর সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন এবং সেই অ্যাপ্লিকেশন এর ব্যবহারকারীদের রিভিউগুলো একবার পড়ে নিন তাহলে আপনি এই ধরনের অনলাইন scam বা প্রতারণা থেকে বাঁচতে পারবেন।

৫. বাড়িতে টাওয়ার বসানোর লোভ দেখিয়ে :

কিছুদিন আগে আমার পাশের বাড়ির এক কাকাকে কিছু স্ক্যামার ফোন করে বলেন যে আপনার বাড়ির ছাদে কোন জায়গা আছে কিনা। কিংবা আপনার কোথাও ২ শতক জায়গা আছে কিনা। যদি থেকে থাকে তাহলে আপনি প্রতি মাসে বাড়িতে বসে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারবেন সাথে ওই জায়গার ভাড়াটিও পাবেন।

এই কথাটি শুনে তো সেই কাকাটি খুব খুশি হয়ে যায় এবং সে জিজ্ঞেস করে তার জন্য আমাদের কি করতে হবে। তখন ওই scammer গুলো বলে সবার প্রথমে আপনাকে আপনার জমির দলিল ও পর্চা গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করতে হবে। সাথে এই পুরো প্রচেষ্টাকে কমপ্লিট করতে কিংবা আমরা যে ওখানে যাব। গিয়ে জায়গাটি চেকআপ করব এবং আপনার জাগায় টাওয়ার লাগানোর জন্য কাগজগুলো রেডি বা তৈরী করার জন্য আপনাকে প্রথম দশ হাজার টাকা পেমেন্ট দিতে হবে।

তারপর আমরা যখন ওখানে যাব তখন আপনার জায়গাটি চেক করার পর আপনার দেওয়া টাকাটি ফেরত দিয়ে দেব। আমার কাকাটি এই কথা শুনে আমাকে না জানিয়ে সে লুকিয়ে টাকার ইনকামের লোভে তাদের দেওয়া google pay UPI নাম্বারের ১০০০০ টাকা পেমেন্ট করে দিয়ে থাকেন। ফলে যখনই পেমেন্টটি তারা পেয়ে গেছে তখনি তারা আমার কাকাকে পুরো ব্লক করে দেয়। এবং তাদের কোন নম্বরে যোগাযোগ করা যায় না।

ফলে পরবর্তীতে হতাশ হয়ে আমাকে এসে এই কথাটি জানাই। তখন আমি “সাইবার ক্রাইমে সাইটে” একটি রিপোর্ট রিপোর্ট লিখে দিই। এবং সেই রিপোর্টটি জমা পড়ার পরে পুলিশ কর্মীরা প্রচুর খোঁজা খুঁজির পরে অবশেষে তাদের ধরে ফেলেন এবং আমাদের টাকাটি উদ্ধার করে দেন। তাই আপনাকে এরকম ধরনের কেউ ফোন করলে আপনি অবশ্যই তাদেরকে একবারেই বারণ করে দেবেন বা তাদের নাম্বারটি ব্লক করে দেবেন। তাহলে আপনি এই ধরনের বাড়িতে টাওয়ার বসানো প্রতারণা থেকে বাঁচতে পারবেন।

৬. নকল ব্যাংক ম্যানেজার হিসেবে প্রতারণা:

কিছুদিন আগে আমাকে একজন ফোন করে বলেন আমি ইউনাইটেড ব্যাংকের ম্যানেজার বলছি। আপনার নাম কি তরিকুল? আমি বললাম হ্যাঁ। সে বলল আপনার যে ইউনাইটেড ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট আছে এই একাউন্টে কিছু অসুবিধা আছে যেগুলোকে ঠিক করতে হলে আপনাকে এখনই আপনার ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার ও ব্যাংক এর এটিএম কার্ড নাম্বার বা তথ্য সহ আমাদের দেওয়া হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে পাঠিয়ে দিন। তাহলে আমরা খুব শিগগিরই আপনার ব্যাংকের কাজটি সম্পূর্ণ করে দেবো। আর আপনার ব্যাংকে কোন অসুবিধা থাকবে না।

তখন আমি বললাম আপনি কোত্থেকে তিনি বলছেন আমি ব্যাংকের থেকে। এবং Scammer আমার লোকেশনটি ট্র্যাক করে রেখেছেন ফলে তিনি আমি যে জায়গায় বসবাস করি কিংবা আমার ব্যাংকে যে জায়গাটিতে অবিস্থিত সেটির তথ্য দিয়ে এমজে জানান। আমি তখন ফোনটা কেটে দিয়ে আমাদের ব্যাংক ম্যানেজারের কাছে কল করলাম এবং কল করে জিজ্ঞেস করলাম এরকম কোন অসুবিধা আছে কিনা। আমার কথার উত্তরে তিনি বললেন না। আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোন অসুবিধা নেই সবকিছুই ঠিক আছে তো। তখন আমি বললাম ঠিক আছে বলে ফোনটি রেখে দিলাম।

তারপরে আমি সেই Scammer দেরকে ফোন করে বললাম ঠিক আছে আমি আপনাকে আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য দেব। তবে তার আগে আপনাকে আমার সাথে একটু ভিডিও কলে কথা বলতে হবে। কারণ আপনি যে একজন ব্যাংক ম্যানেজার সেটা আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। এই কথা বলা মাত্রই সে ফোনটা কেটে দেয়, এবং আমি আবার দ্বিতীয়বার ফোন করে থাকি এবং সে আমার ফোন তুলে বলে ওগুলো পাঠিয়ে দাও, এখনও কেন লেট করছ আমি বললাম ভিডিও কলটা ধরো না হলে আমি এগুলো দিতে পারবো না। তখনই সে আমার ফোন Call-টি কেটে দেয় এবং আমাকে ব্লক করে দেয়।

ফলে এখান থেকে সরাসরি বোঝা যায় যে ওই কলটি Scammer দের ছিল তাই আপনাকে যদি ফোন করে কেউ আপনার ব্যাংকে এর সম্বন্ধে কোন ধরনের তথ্য পাঠাতে বলে থাকে তাহলে আপনি তাকে কোন তথ্য পাঠাবেন না, তাহলে আপনি এই প্রতারণাটি থেকে বাঁচতে পারবেন। আপনার যদি ব্যাংক একাউন্ট না থেকে থাকে তাহলে আপনি এখানে ক্লিক করে ICICI ব্যাংকে একটি সুরক্ষিত ব্যাংক একাউন্ট খুলে নিতে পারেন।

৭. ওয়েবসাইট বা Youtube চ্যানেলে বিক্রি এর প্রতারণা :

এই জিনিসটা একটু অনেকের কাছে ভিন্ন মনে হতে পারে। কিন্তু যারা অনলাইন জগতে কাজ করে থাকেন তাদের কাছে এটি একটি জনপ্রিয় জিনিস। যেখানে ওয়েবসাইট, ইউটিউব চ্যানেল, ও অ্যাপ্লিকেশন বিক্রয় এর মাধ্যম এই মাধ্যমে অনেক দর্শক বা কোম্পানি গুলি ইনকাম করে থাকেন।

কিন্তু কিছু কিছু Scammers আছে যারা আপনার সেই কষ্ট করার ইউটিউব চ্যানেলটি বা ব্লগ ওয়েবসাইটটি ফ্রিতে নেওয়ার জন্য তারা আপনার সাথে যোগাযোগ করে থাকেন এবং তারা আপনাকে তাদের ইমেইল কিংবা হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার এর মাধ্যমে মেসেজ করে একটি লিঙ্ক পাঠিয়ে থাকবেন। এবং আপনাকে বলবে সেই লিংকে ক্লিক করে একটু ভেরিফাই করে দিতে। যাতে সহজেই সে আপনার ইউটিউব চ্যানেল ও ব্লগ ওয়েবসাইট এর সম্পর্কে জানতে পারবে। তারপরে সে ওই ব্লগটি কিনবে কিনা সেটা ঠিক করবে।

তার আপনার যদি এরকম কিছু লিংক পাঠিয়ে থাকে তাহলে আপনি সেই লিংকে একদম ক্লিক করবেন না। কারণ আপনি ওই লিংকে ক্লিক করলে আপনার ব্লগ ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলটি তো দূরের কথা আপনার টোটাল ডিভাইসটির এক্সেস তাদের কাছে চলে যেতে পারে। ফলে তারা আপনার ডিভাইস উপলব্ধ সমস্ত তথ্যগুলো কপি নিয়ে আপনাকে ব্ল্যাকমেল করতে পারে কিংবা আপনার ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেল যেগুলো আছে সেগুলো তারা অন্য চ্যানেলে বা অন্য জিমেইলে ট্রান্সফার করে নিয়ে আপনাকেই ব্লক করে দিতে পারে। এগুলি বেশিরভাগ কোনো কোম্পনীর পণ্যকে স্পন্সার বা বিক্রয় এর ক্ষেত্রে হয়ে থাকে।

তাই অবশ্যই কারো সাথে ইউটিউব চ্যানেল বা ব্লগ ওয়েবসাইট বিক্রয় করতে হলে তাকে আপনি স্ক্রিনশট, কিংবা একটি লাইভ ভিডিও তৈরি করে তার সাথে শেয়ার করুন। কিন্তু কখনোই তাকে কোনো লগইন ডিটেলস কিংবা তাদের দেওয়া লিংকে ক্লিক করে লগইন ডিটেলস দিয়ে বিক্রয় করার চেষ্টা করবেন না। তাহলে আমার এক বন্ধুর মতো ৬০০০ ডলার লস খেয়ে খুব চিন্তার মধ্যে পড়ে যাবেন। এবং আপনার ২-৩ বছরের কষ্ট গুলো একবারে শেষ হয়ে যাবে। তাই আপনি যেকোনো ধরণের পণ্যকে বিক্রয় করতে Escrow.com কে ব্যাবহার করতে পারেন এবং অনলাইন প্রতারণা থেকে বাঁচাতে পারেন।

এছাড়া আরো বিভিন্ন ধরণের প্রতারণা হয়ে থেকে তাই সেই প্রতারণা গুলি থেকে বাঁচতে আপনি কখনো কাউকে আপনার bank AC এর কোনো ধরণের তথ্য শেয়ার করবেন না।

এখানে বলা এইসব প্রতারণার গুলো বেশিরভাগই হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুকের মাধ্যমে হয়ে থাকে তাই আপনি এই সমস্ত প্রতারণা গুলো থেকে বাঁচতে বা যেকোনো ধরনের scammers-দের হোয়াটসঅ্যাপ কল বা ফেসবুক মেসেঞ্জারে কল এ বিশ্বাস করবেন না। আপনি শুধুমাত্র বিশ্বাস করবেন ভিডিও কল ও ডাইরেক্ট ফোন কলের মাধ্যমে কথা বলার জন্য। আর ভুল করেও কাউকে আপনার ব্যাংকের যেকোনো ধরনের তথ্য শেয়ার করবেন না তাহলে আপনি এই ধরনের প্রতারণা গুলো থেকে বাঁচতে পারবেন।

জানুন : ব্যবসাকে অনলাইনের মাধ্যমে বৃদ্ধি কিভাবে করবেন

আমার জানা কিছু অনলাইন প্রতারণা বা Scam থেকে বাঁচার উপায় গুলি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। যদি এটি আপনাকে যেকোনো ধরনের স্ক্যাম থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে থাকে, কিংবা এটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই এটি বেশি করে আপনার বন্ধু ও পরিবারের সাথে শেয়ার করে দিন। আর এরকম ধরনের নতুন নতুন টিপস এবং ট্রিকস, ও ব্লগিং, বা অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে জানতে আমাদের এই ব্লকটিকে সাবস্ক্রাইব করে রেখে দিন। সাথে নতুন নতুন আপডেট পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলটির সাথে যোগদান করুন। আর আপনার যদি এই অনলাইন প্রতারণার বিষয়ক কোন প্রশ্ন থেকে থাকে বা কোন অভিজ্ঞতা থেকে থাকে তাহলে সেটি কমেন্ট বক্সে আমাদেরকে জানান। ধন্যবাদ।

আরো পোস্ট পড়ুন :-