কম্পিউটার কি? কম্পিউটারের প্রাথমিক ধারণা [COMPUTER FUNDAMENTAL]
এখনকার সময় অনেকে আছে যারা কম্পিউটার কি এবং কম্পিউটার কিভাবে কাজ করে এবং কম্পিউটারের প্রাথমিক ধারণা সম্পর্কে জানেনা। আপনিও যদি তাদের মধ্য থেকে থেকে থাকেন এবং কম্পিউটারের সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আর্টিকেলটি সম্পন্ন পড়ুন।
এই আর্টিকেলের এর মাধ্যমে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি কম্পিউটার কি কম্পিউটার কিভাবে কাজ করে এবং কম্পিউটারের আরো বিষয় সম্পর্কে। সুতরাং চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক কম্পিউটার কি সেই সম্মন্দে।
কম্পিউটার কি? ও কিভাবে কাজ করে
কম্পিউটার হলো একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ, যা তথা ডিজিটাল তথ্যের অনুসারে তথ্য প্রক্রিয়া করতে ব্যবহার করা হয়। এটি অফিস, শিক্ষা, গবেষণা, বিনোদন, আইন এবং অন্যান্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহার হয়। কম্পিউটারের প্রধান কাজ হলো তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়া এবং প্রেরণ করা।
কম্পিউটারে কাজ করার জন্য কম্পিউটার এর মধ্যে সফটওয়্যার এবং হার্ডওয়্যার এই দুটি মৌলিক অংশ থাকে।
- হার্ডওয়্যার বিভিন্ন ইলেকট্রনিক উপাদানের মাধ্যমে ফিজিক্যালি কাজ করে, যেমন সেন্সর, প্রসেসর, মেমোরি, ইনপুট ডিভাইস, আউটপুট ডিভাইস ইত্যাদি।
- সফটওয়্যার হলো তথ্য প্রক্রিয়া করার জন্য কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ মেমোরির কাছে কমান্ড প্রেরণ করে, যা কম্পিউটার প্রক্রিয়া করে এবং ফলাফল তৈরী করে স্ক্রিনে দেখায়।
কম্পিউটারের বৃহত্তম উদ্ভাবক হিসেবে চিহ্নিত করা হয় “চার্ল্স ব্যাবেজ” কে, যিনি একজন ইংরেজ গণিতবিদ ছিলেন। তিনি ১৯৩৭ সালে, প্রথম এলিকট্রিক ডিজিটাল কম্পিউটার তৈরি করেন, যাকে বোল কম্পিউটার নামে পরিচিতি দেওয়া হয়।
তবে কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশ এবং প্রযুক্তি পর্যালোচনা এবং উন্নত করা হয়েছে বহুতক্ষণ সময় পরে। আধুনিক কম্পিউটারের উন্নত রূপকে প্রস্তুত করেছেন বিভিন্ন বিজ্ঞানী ও প্রকৌশল গবেষক এবং প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুলি। যেমন ; Dell, Asus, Zebronics, Intel এছাড়া আরো অনেক।
কম্পিউটারের সংখ্যাতত্ত্বের সূচনা
১. বাইনারি (Binary) :
বাইনারি নাম্বার সিস্টেমে কেবলমাত্র দুটি অঙ্ক ব্যবহৃত হয়, 0 এবং 1। সাধারণত কম্পিউটার হল একটি বৈদ্যুতিন (Electronics) যন্ত্র এবং আধুনিক কম্পিউটারে বাইনারি নাম্বার সিস্টেম ব্যবহৃত হয়।
২. বিট ও বাইট :
কম্পিউটারে তথ্য সঞ্চয়ের একক হল বিট (Bit)। এটি একটি 1 বা 0 ধারণ করতে পারে। এরকম পাশাপাশি আটটি বিট নিয়ে একটি বাইট (Byte) তৈরি হয়।
MEMORIES
৪ বিট = 1 বাইট.
বাইট | কিলোবাইট |
---|---|
2.10 বাইট = 1024 বাইট | = 1 কিলোবাইট বা 1 KB |
2.10 বাইট = 1024 KB = | = 1 মেগাবাইট বা 1 MB |
2.10 বাইট = 1024 MB | = 1 গিগাবাইট বা 1 GB |
2.10 বাইট = 1024 GB | = 1 টেরাবাইট বা 1 TB |
৩. অক্টাল (Octal) :
অক্টাল নাম্বার সিস্টেমে আটটি অঙ্ক ব্যবহৃত হয়, যথা- 0, 1, 2, 3, 4, 5, 6 এবং 7। এখানে সর্বোচ্চ সংখ্যাটি হল 7 এবং এর বেস (Base) হল আট।
৪. হেক্সাডেসিমাল (Hexadecimal) :
হেক্সাডেসিম্যাল নাম্বার সিস্টেমে সর্বমোট 16-টি চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। যথা – 0-9 এবং A-F এই নাম্বার সিস্টেমের বেস (Base) হল 16।
৫. ডেসিমেল (Decimal) :
আমরা সাধারণত যে নাম্বার সিস্টেমে কাজ করি তাকে ডেসিনাল বা দশমিক নাম্বার সিস্টেম বলা হয়। এক্ষেত্রে দশটি অঙ্ক ব্যবহৃত হয়, যথা- 0 থেকে 9। এই নাম্বার সিস্টেমের বেস (Base) দশ।
উপরোক্ত প্রত্যেকটি নাম্বার সিস্টেমকে এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে রূপান্তিত করা সম্ভব। যেমন নিচে চারটি বক্সে দেখো হয়েছে ;
বাইনারি | অক্টাল | ডেসিম্যাল | হেক্সাডেসিম্যাল |
---|---|---|---|
0 | 0 | 0 | 0 |
1 | 1 | 1 | 1 |
10 | 2 | 2 | 2 |
11 | 3 | 3 | 3 |
100 | 4 | 4 | 4 |
101 | 5 | 5 | 5 |
110 | 6 | 6 | 6 |
111 | 7 | 7 | 7 |
1000 | 10 | 8 | 8 |
1001 | 11 | 9 | 9 |
1010 | 12 | 10 | A |
1011 | 13 | 11 | B |
1100 | 14 | 12 | C |
1101 | 15 | 13 | D |
1110 | 16 | 14 | E |
1111 | 17 | 15 | F |
৬. গ্রে কোড (Gray Code) :
গ্রে কোড এ বাইনারি নাম্বার সিস্টেমের মতোই কেবলমাত্র দুটি অঙ্ক (0 ও 1) ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে পরের সংখ্যাটির সাথে পূর্ববর্তী সংখ্যা কেবলমাত্র একটি বিট (Bit)-এ পৃথক থাকে। যেমন-
ডেসিম্যাল | গ্রে কোড | বাইনারি |
---|---|---|
0 | 0000 | 0000 |
1 | 0001 | 0001 |
2 | 0011 | 0010 |
3 | 0010 | 0011 |
4 | 0110 | 0100 |
5 | 0111 | 0101 |
6 | 0101 | 0110 |
7 | 0100 | 0111 |
৭. অ্যস্কি (ASCII) :
ASCII (অ্যস্কি) কথাটির পুরো নাম American Standard Code For Information Interchange (অ্যামেরিকান স্ট্যান্ডার্ড কোড ফর ইনফরমেশন ইন্টারচেঞ্জ)। ASCII সাধারণত দুই ধরনের হয়।
যথা- ASCII 7 ও ASCII 8 । ASCH 7 হলো 7 bit এর সমষ্টি যেখানে ASCII হল 8 bit-এর সমষ্টি। ASCII 7-এর সাহায্যে 128 (2.7) টি বিভিন্ন ধরনের সংখা ব্যবহার করা যায়। ASCII 8 -এর সাহায্যে 256 (2.8) বিভিন্ন ধরনের সংখ্যা ব্যবহার করা যায়।
৮. কম্পিউটার (Computer) :
‘কম্পিউটার‘ অর্থাৎ “Computer‘ কথাটির বাংলা অর্থ করলে দাঁড়ায় ‘গণকযন্ত্র‘ বা ‘পরিগণক‘। অর্থাৎ গণনা করার যন্ত্রকেই সাধারণ অর্থে কম্পিউটার বলে।
সংজ্ঞা: কম্পিউটার হল অত্যন্ত দ্রুতগতিসম্পন্ন এমন এক বৈদ্যুতিন (electronics) জটিল যন্ত্র যা তথ্য গ্রহণ, সংরক্ষণ ও তার প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে সঠিক ফলাফল প্রদান করে।
একগুচ্ছ নির্দেশের (a set of Instructions) সাহায্যে কম্পিউটার অপারেশন করতে সক্ষম। এই নির্দেশগুচ্ছকে বলে প্রোগ্রাম।
৯. কম্পিউটারের শ্রেণিবিভাগ (Classification of Computer) :
বিভিন্ন রকমভাবে কম্পিউটারের শ্রেণিবিভাগ করা যায়। এই শ্রেণিগুলি হল ii) ব্যবহার করার উদ্দেশ্য অনুযায়ী । (ii) আকৃতি ও দক্ষতা অনুযায়ী (iii) ব্যবহারকারীর সংখ্যার ভিত্তিতে নীচে ছকের সাহায্যে কম্পিউটারের শ্রেণিবিভাগটি বোঝানো হল –
![কম্পিউটার কি? কম্পিউটারের প্রাথমিক ধারণা [COMPUTER FUNDAMENTAL] 2 কম্পিউটার 11](https://tarikulbangali.in/wp-content/uploads/2023/08/কম্পিউটার-11-1024x388.jpg)
১০. একটি ডিজিটাল কম্পিউটারের রেখাচিত্র :
![কম্পিউটার কি? কম্পিউটারের প্রাথমিক ধারণা [COMPUTER FUNDAMENTAL] 3 কম্পিউটার 011](https://tarikulbangali.in/wp-content/uploads/2023/08/কম্পিউটার-011-1024x532.jpg)
- ALU → Arithmetic (অ্যারিথমেটিক), Logic (লজিক), Unit (ইউনিট)
- CU → Control (কন্ট্রোল), Unit (ইউনিট)
- CPU → Central (সেন্ট্রাল), Processing (প্রসেসিং), Unit (ইউনিট)
- MU → Memory (মেমরি), Unit (ইউনিট)
উপরের ব্লক ডায়াগ্রামটির মাধ্যমে একটি কম্পিউটার কীভাবে কাজ করে তা দেখানো হয়েছে। প্রথমে ইনপুট ডিভাইসের মাধ্যমে ডেটা CPU এর মধ্যে পাঠানো হয়। বিভিন্ন ধরনের ইনপুট ডিভাইসের উদাহরণ হল কি বোর্ড, মাউস, স্ক্যানার, টাচ স্ক্রিন, জয় টিক্, লাইট পেন ইত্যাদি।
CPU-এর মধ্যে ডেটার উপর প্রয়োজনীয় কার্য সাধন করা হয় এবং কাজ শেষ হবার পর ইনফরমেশন আউটপুট ডিভাইসে যায়।
প্রসেসিং পার্টকে সাধারণত দুইভাগে ভাগ করা হয়, যথা- ALU এবং CU । বিভিন্ন ধরনের পাটিগাণিতিক ও যুক্তিপূর্ণ কাজ ALU এর মধ্যে সম্পন্ন হয়।
CU সমগ্র কাজকে নিয়ন্ত্রণ করে। মেমরি বা স্মৃতি অংশও প্রসেসিং-এর অন্তর্ভুক্ত। বিভিন্ন তথ্য এখানে জমা থাকে। আউটপুট ডিভাইসে আমরা ফলাফল জানতে পারি, বিভিন্ন ধরনের আউটপুট ডিভাইসের উদাহরণ হল মনিটর, প্রিন্টার, স্পিকার ইত্যাদি।
আশাকরি এই আর্টিকেলটি পড়ে সম্পূর্ণ ভাবে বুজতে পেরেছেন কম্পিউটার কি এবং কম্পিউটার কিভাবে কাজ করে এই সমস্ত বিষয়ের। যদি আপনার যেকোনো কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে সম্মেন্ট বক্সে জানান আর আর্টিকেলটি ভালো লেগে তোমার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন সাথে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে যোগদান করুন ও ব্লগটি সাবিস্ক্রিব করে রাখুন। এছাড়া অনলাইন থেকে ইনকাম করতে জেনে নিন ১০টি উপায়।