এআই কি ও কিভাবে কাজ করে – কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার কি ?

এআই কি ও কিভাবে কাজ করে – কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার কি ?

আমরা সকলেই প্রায় ইন্টারনেট থেকে বা কারো মুখ থেকে (AI) এআই কথাটি শুনেছি। কিন্তু অনেকে জানে না যে এআই কি ও কিভাবে কাজ করে? তাই আপনি যদি এআই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই নিবন্ধনটি সম্পূর্ণ পড়ুন আর জেনেনিন এআইকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিষয়ের। কারণ, এই নিবন্ধনে আমি এআই সম্পর্কে আমার জানা সমস্ত তথ্য গুলি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। আশাকরি এটি AI সম্পর্কে তথ্য পেতে আপনার জন্য সহায়ক হবে।

এআই কি? What is AI?

AI কে বাংলাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলা হয়। এখানে কৃত্রিম মানে একজন ব্যক্তির তৈরি কোনো একটি যন্ত্র, এবং বুদ্ধিমত্তা মানে চিন্তা করার শক্তি। যাকে আমরা একটি কম্পিউটার সিস্টেম বা রোবর্ট বলে থাকি। AI কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটি শাখা যা মানুষের মত চিন্তা করতে পারে এবং কাজ করতে পারে যে মেশিনটি তৈরি করছে এই মানুষ।

যখন আমরা একটি কম্পিউটারকে এমনভাবে প্রস্তুত বা তৈরী করি যাতে এটি মানুষের বুদ্ধিমত্তার মতো কাজ করতে পারে, তখন তাকে AI বলা হয়। অর্থাৎ, যখন আমরা একটি মেশিনে এমন একটি প্রোগ্রাম সেট করি যেটি মানুষের মতো কাজ করতে পারে, তখন তাকে বলা হয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা, AI।

AI এর শক্তির ব্যাবহার আমাদের মানুষের মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং আগামী দিনে আরো বাড়বে। কারণ কোনো কিছু দেখে, কিছু শুনে, বা কোনো কিছু ছুঁয়ে আমরা যেমন ভাবতে পারি তার সঙ্গে আমাদের কেমন আচরণ করা উচিত। একইভাবে কম্পিউটার মেশিনের ভেতরেও এক ধরনের বুদ্ধিমত্তা তৈরি করা হয়েছে। যার মাধ্যমে কম্পিউটার সিস্টেম বা রোবট সিস্টেমটি প্রস্তুত করা হয়। যার ভিত্তিতে সেটি চলে বা মানুষের মস্তিষ্ক মতো কাজ করে।

কিছু কম্পিউটার বিজ্ঞানী এই AI এর ধারণাটি বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছিলেন যেখানে তারা বলেছিলেন যে AI ধারণার মাধ্যমে একটি কম্পিউটার মেশিন বা এমন একটি সফ্টওয়্যার তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে যা মানুষের মস্তিষ্ক যেভাবে চিন্তা করে সেভাবে চিন্তা করতে পারে।

মানুষ চায় ঘুমানোর এবং মনে রাখার কাজটি তার মস্তিষ্কের পরিবর্তে কম্পিউটার দ্বারা করা হোক। সেজন্য এআই-এর অগ্রগতির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। সেটি বর্তমানে তৈরী মার্কেটে প্রচলিত আছে এবং এটি কম্পিউটার বিজ্ঞানে, এআই মেশিন লার্নিং নামেও পরিচিত বা নাম দেওয়া হয়েছে। মেশিন লার্নিং হল AI এর একটি অংশ, যা সিস্টেমকে স্বয়ংক্রিয় ভাবে শেখার এবং নিজেদের অভিজ্ঞতাকে উন্নত করার ক্ষমতা দেয়।

এক কথায় AI বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরী কম্পিউটার সিস্টেম দ্বারা যেটি মানুষের মতো কাজ করতে পারে এবং মানুষের কঠিন কাজকে সহজ ও তাড়াতাড়ি করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। যেমন, কোডিং, ফটো এডেটিং, ভিডিও এডিটিং,ও এছাড়া আরো অনন্য কাজ গুলি সহজে করিয়ে নিতে পারেবন। ২০২৩ তে একটি গবেষণায় জানা গেছে আজ থেকে ৩-৫ বছর বাদে মানুষের ৯৫% কাজ এই রোবর্ট করবে। এটি এতটাই শক্তিশালী একটি মেশিন।

এআই কিভাবে কাজ করে

AI তৈরির জন্য মৌলিকভাবে তথ্যের প্রয়োজন হয়। সে কারণে ইন্টারনেটে থেকে সমস্ত ডেটা গুলি একত্রিত করা হয় তারপর সেই ডেটা গুলি প্রস্তুতি করে একটি মডেলগুলি তৈরি করা হয়। যে মডেলটি ডেটা থেকে প্রযুক্তিগত ভাষায় তাদের ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হয়। তারপর সেই মডেলটিকে বারবার ট্রেনিং করানো হয়। এবং সেটি তাদের কাছে উপলদ্ধ ডেটা প্যারামিটার থেকে করা হয়। টেস্টিং সম্পূর্ণ বা পাশ হয়ে গেলে মডেলগুলি সেট করে আবার টেস্ট করা হয় যাতে সেটি ঠিকঠাকভাবে কাজ করতে পারে। একবার মডেলগুলি টেস্ট এ সফল হয়েগেল সেটি ব্যাবহারের জন্য সক্ষম হয় এবং সেটি মার্কেটে লঞ্চ করা হয়। যেমন; চ্যাট জিপিটি যেটি সম্পর্ণ রূপে AI.

এআই এর ব্যবহার কি

এআই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) এর ব্যবহার বিভিন্ন ক্ষেত্রে করা হয় এবং এর ব্যবহার গুলি অসীম হতে পারে।

  • এআই এর তথ্য সংগ্রহ করতে অনুসন্ধান করতে এবং বিশ্লেষণে সাহায্য করতে পারে।
  • এআই ব্যবহার করে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে এবং নির্দিষ্ট কাজগুলি সম্পাদন করতে সাহায্য করতে পারে।
  • এআই ভাষা প্রসেসিং করতে ব্যবহার হতে পারে, যা স্বাভাবিক ভাষায় মানুষের সাথে কানেকশন করতে এবং ভাষার অর্থ বোঝাতে পারে।
  • বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য ও যাতায়াত সমস্যার সমাধানের কাজে সাহায্য করতে পারে, যেমন; রোগের নির্ণয় এবং চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়া।
  • শিক্ষার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জন্য অভিজ্ঞান, বা পড়ালেখাতে সাহায্য করতে পারে এবং তাদের প্রগতি মূল্যায়ন করতে পারে।
  • যানবহন বা গাড়ি তৈরির কাজে আপনি AI এর ব্যাবহার করতে পারবেন। যে গাড়িটি AI সিস্টেমের মাদ্ধমে তার আশ পাশের অবস্থান বুজতে পারবে এবং কোনো ড্রাইভার চার নিজেই চলবে।
  • আপনার কর্মের ক্ষেত্রে ব্যাবহার করা যেতে পারে যেমন ; কনটেন্ট রাইটিং, চার্ট শিট তৈরী করতে, কোডিং লেখাতে, SEO করতে এছাড়া আরো ইত্যাদির কাজে। বা আপনার দৈনন্দিন কাজে ব্যাবহার করতে পারেন।
  • এছাড়া আপনি আপনার ব্যবসাকে উন্নতি করতে বা ব্যাবসার জন্য বিজ্ঞাপন, সেল পেজ, ফানেল, ও আরো অন্য কাজে ব্যাবহার করতে পারেবন।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা অসুবিধা

সুবিধা

  • দ্রুততা এবং ব্যবহারকারীদের জন্য সহজবোধ্য।
  • ছাত্র, শিক্ষক, ফ্রীলান্সার ও ব্যাবসায়ী দেড় জন্য উপযোগী।
  • অনলাইন সম্মন্ধ যেকোনো কাজকে সহজে অল্প সময়ের মধ্যে করা সম্ভব।
  • একটি সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের কাজে সাহায্য নিতে পারবেন।

অসুবিধা

  • কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা হলেও, এটি কিছু অভাব আছে।
  • এটি মাঝে মদ্ধে ভুল উত্তর পুনরাবৃত্তি করতে পারে।
  • এটিতে যা কিছু আছে সেগুলি সীমিত এবং পুরোনো।
  • বিশেষ কাজের জন্য এটি প্রয়োজন না হতে পারে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কোথায় ব্যবহৃত হয়

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটি তথ্য প্রযুক্তি, সফ্টওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, মেশিন লার্নিং, নিরাপত্তা, শরীর চর্চা, বিজ্ঞান, বিশেষজ্ঞ পরামর্শ, প্রতিষ্ঠানের প্রচার-প্রচার, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা, শিক্ষা ও ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

উদাহরণস্বরূপ; কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার হয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত সিস্টেমে, যেমন; সিস্টেমগুলি চিকিৎসা, সম্পাদক, সহায়ক বিষয়ক, বায়োমেট্রিক প্রযুক্তি ও ইত্যাদি। এছাড়াও, খোলা, ডেটা অ্যানালাইসিস, ব্যবসায়িক প্রযুক্তি, এবং ইন্টারনেট সমস্ত কাজ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা হয়।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বৈশিষ্ট্য

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বৈশিষ্ট্যগুলি অনেকগুলি, যা এই তথ্য প্রযুক্তির শাখা থেকে আসে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো :

শক্তিশালী ডেটা প্রসেসিং: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষজ্ঞতা সাধারণভাবে বৃহত্তর এবং জটিল ডেটা সেন্টার গুলি প্রসেস করতে সক্ষম, যা মানব বুদ্ধিমত্তার জন্য কঠিন হতে পারে।

শক্তিশালী মডেল ট্রেনিং: এটি বড় এবং কঠিন ডেটা সেন্টার সিস্টেম গুলি ব্যবহার করে ভাল করে কাজ করতে সক্ষম মডেল তৈরি করতে সহজ করে তোলে, যেটি তাদের শক্তিশালী করে তোলে।

স্বয়ংক্রিয়াশী শেখা: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মডেলগুলি স্বয়ংক্রিয়াশীভাবে তার কাছে উপলদ্ধ ডেটা থেকে শিখতে সক্ষম, এটি নতুন তথ্য বা পরিস্থিতির সাথে চলতে পারে।

বৃহত্তর ডেটা এবং ভাল মডেলের জন্য শক্তিশালী: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সাধারণভাবে বড় একটি ডেটা সেন্টার এবং কঠিন কাজের জন্য বড় এবং শক্তিশালী মডেল প্রযুক্তি তৈরি করতে সক্ষম।

নিজস্ব প্রযুক্তির উন্নতি: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তার নিজস্ব সহযোগী প্রযুক্তি এবং টুলস ব্যবহার করে, যার দ্বারা ডেটা প্রসেসিং, মডেল ট্রেনিং, এর পরীক্ষণের সাহায্য করে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎ

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির এবং মানব সমাজের উন্নতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হবে। এই প্রযুক্তি সাধারণভাবে অনেক ক্ষেত্রে উপযুক্ত এবং সাহায্যকারী হতে পারে, বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সহায়ক করতে পারে এবং সামাজিক ও আর্থিক উন্নতির পথে মানুষের জীবনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহৃত হতে পারে। এবং এই ভবিষ্যৎ সুদূর ও উজ্বল হতে পারে, কারণ সবথেকে বড়ো জিনিস এটি মানুষের সময় বাঁচতে সাহায্য করে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা pdf

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একটি কম্পিউটার সিস্টেম প্রযুক্তি। তাই আপনি যদি এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা pdf ডাউনলোড করতে চান তাহলে এখন দেওয়া লিংকে ক্লিক করুন আর ডাউনলোড করে নিন।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর জনক কে?

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর জনক হলেন আমেরিকান একজন কম্পিউটার বিজ্ঞানী। যার নাম হল (জন ম্যাকার্থি).

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার

আমি আগেই বলেছি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যবহার বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষভাবে হতে পারে, যেমন, সফ্টওয়ার ডেভলপমেন্ট এর ক্ষেত্রে, ডেটা অ্যানালাইসিস করতে, চিকিৎসা ও ভ্রমণ এর পরিকল্পনা করতে, শিক্ষা কে উন্নতি করতে, বাণিজ্যিক করতে, সাহায্যের খেত্তে ও ইত্যাদির খেত্তে ব্যবহার হয়।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর খারাপ দিক?

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) এর কিছু খারাপ দিক ও চ্যালেঞ্জস রয়েছে যা মানব সমাজে এবং টেকনোলজি প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পারে। যেমন; নৈতিকর সমস্যা, যোগাযোগ বা ব্যক্তিগত সংবাদের অভাব, জব লস বা চাকরি চলে যাওয়া, নতুন প্রজন্মের মানুষকে অলস করে তুলছে। এছাড়া আরো অনেক কিছু।

উপসংহার :

(AI) এআই হল এখনকার প্রযুক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ও মানুষের কাজকে সহজ করে তোলার একটি কম্পিউটার সিস্টেম। আশাকরি আপনি এআই কিকিভাবে কাজ করে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা পেয়েছেন। যদি পেয়ে থাকেন, তাহলে এটি বেশি করে শেয়ার করে দিন। আর এআই (AI) সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট বক্সে জানান। এবং এরকম ধরণের আরো নতুন নতুন টিপস ও অনলাইন ইনকাম সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথে জুড়ে থাকুন, আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলটিতে যোগদান করে ও ব্লগটি সাবস্ক্রিব করে।

আরো পোস্ট পড়ুন :-